আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বুর্জোয়া জাতিয়তাবাদী প্রতিবাদে বা সমর্থনে মনমোহন হাসিনা চুক্তি সমস্যার সমাধান নেই

চারিদিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি ভারত বাংলাদেশ চুক্তি নিয়ে আলোচনা তর্ক বিতর্ক চলছে। বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ নিয়ে চিন্তিত অনেকে। ট্রানজিট, জলবন্টন চুক্তি, ছিটমহল নিয়ে আলোচনা, প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি, ইতিহাসকে ফিরে দেখার এই আবহেই কিছু সাধারণ মার্কসবাদী কথা তোলাটা জরুরী মনে হল। তাই এই ছোট লেখাটি। ভারত এই চুক্তিতে লাভ করবে অনেকে বলছেন।

বাংলাদেশ হবে লুজার। কিন্তু কারা লাভ করবে? ভারতের জনগণ? শ্রমিক কৃষক? মোটেও না। প্রাপ্তি হবে ভারতের পুঁজিপতিদের। লাভের গুড় তারাই খাবে। টাটা বিড়লা রিলায়েন্স জিন্দাল মিত্তাল বাজাজ আদি কিছু কোম্পানি, বা তাদের ভাই ভাতিজারা।

আর বাংলাদেশের পুঁজিপতি বণিককুল? হ্যাঁ তারাও। নাহলে তারাই হাসিনাকে আটকে দিত। কিন্তু বাংলাদেশের (মুৎসুদ্দি? )বুর্জোয়াকুল এর থেকে কিছু পাবে ভেবেই আনন্দিত। ভারতের পুঁজিপতিকুলের মত না হলো, কিন্তু যা মেলে, এই তাদের মনোভাব। আসল লুজার তো বাংলাদেশের শ্রমিক কৃষক জনগণ।

তাই শ্রেণির প্রসঙ্গটা এড়িয়ে কোন জাতিয়তাবাদী আবেগ শুধু জাতিয়তাবাদের প্রকৃত জায়গাটা আজ আর ধারণ করতে পারবে না। কে না জানে রাষ্ট্র সবসময়েই মুনাফাখোর পুঁজিপতিদের স্বার্থবাহী। অথচ বিশ্বজুড়ে মার্কসীয় বিপ্লবগুলি সাময়িক পিছু হটায় আজ ক্ষোভ বিক্ষোভ অনেক দেখি। ব্লগে চমৎকার কিছু লেখা পড়লাম ভারত বাঙ্গলাদেশ চুক্তি নিয়ে। কিন্তু যারা এইরকম চমৎকার লেখা লিখতে পারেন, তারাও কেন সাম্রাজ্যবাদের বা সম্প্রসারণবাদের দেশকাল নিরপেক্ষ চরিত্র তুলে ধরে সমাধানের প্রকৃত নিদানটি হাজির করবেন না? মার্কসবাদে কি আপনাদের মত চিন্তাশীল বিশ্লেষকরা আর আগ্রহী নন ? আগ্রাসী জাতিয়তাবাদকে পালটা বুর্জোয়া জাতিয়তাবাদ দিয়ে ঠেকালে লাভের লাভ তেমন কিছু হবে না।

জনগণের জাতিয়তাবাদ শব্দটা হয় না, সেটা যে এসেন্স বহন করে তার নামই বিপ্লব। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের আগের স্তর জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব। সরকার যদি শ্রমিক শ্রেণি বা তার প্রকৃত প্রতিনিধিদের হাতে না থাকে, তাহলে এধরণের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। তা বলে কি যতদিন শ্রমিক শ্রেণির সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে না, ততদিন সাম্রাজ্যবাদ বা সম্প্রসারণবাদের কাছে প্রতিবাদহীন আত্মসমর্পণ চলবে? নিশ্চয় এরকম হাস্যকর নিদান কোন মার্কসবাদী দেবেন না। যেটা দরকার সেটা হল এই আন্দোলনগুলিকে সরকারবিরোধী বুর্জোয়া আন্দোলনের থেকে বের করে বুর্জোয়া রাষ্ট্রব্যবস্থা বিরোধী আন্দোলনে রূপায়িত করা।

ভারত অন্যায্য চুক্তি থেকে লাভের যে ঝুলি আনবে বলে বলছেন, তা কারা পাবে? ভারতের জনগণ পাবে সেই লাভের বখরা? (পেলেও যে এই চুক্তিকে ভারতের শ্রমিকশ্রেণির সাপোর্ট করার ব্যাপার থাকত, তা আদৌ নয়)। মোটেও নয়। পাবে পুঁজিপতি শ্রেণিটাই। যারা দেশের সিংহভাগ সম্পদ দখল করে আছে তারাই। ভারতের শ্রমিক শ্রেণির চোখ দিয়ে দেখলেও বোঝা যাবে, আসলে এইসব সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদের সাথে লড়াইয়ের প্রকৃত দিশাটি কি হবে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.