আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যে প্রশ্ন আজ কেও উচ্চারণ করছেনা।

এইটা আমার ব্লগ। যুদ্ধাপরাধী দের বিচার এর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শুরু না শেষ তাই বুঝতে পারছিনা। এখন দেখা যাচ্ছে আপিল কখন হবে, আপিল কোর্ট এর বিচারক কে থাকবে, ফাইনালি শাস্তি হবে কিনা, নাকি রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় বেরিয়ে যাবে এবং আরও অনেক কিন্তুর জন্ম বলে দিচ্ছে আরও দীর্ঘস্থায়ী লম্বা একটা প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে, যার মাধ্যমে এই বিচারকে আরও কয় এক বছর ধরে টানা হবে। ব্রিটিশরা যেমন আফিম খাইয়ে চিন এর মতো বীর জাতি কে নেশাগ্রস্ত করে রেখে শাসন করেছিল, ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যেমন হিন্দু মুসলমান দ্বন্দ্ব টিকিয়ে রেখে এই উপমহাদেশ ক, ২০০ বছর শাসন করেছে- ঠিক তেমনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষের শক্তি সৃষ্টি করে, জাতি কে একটা আদর্শিক দ্বন্দ্বের মধ্যে ঢুকিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদের নির্বিচার লুণ্ঠন, দরিদ্রতা দূরীকরণ, সামাজিক অবিচার দূরীকরণ সহ আর অনেক কোর ইস্যু গুলো ভুলিয়ে দেশ কে ২০০ বছর শাসন করার রাস্তা জারি রেখেছে আকণ্ঠ দুর্নীতি মগ্ন এবং অযোগ্য এই পলিটিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট। আওয়ামী লীগ এই ডিভিশন এর নেতা হইলেও এই ডিভিশন এর বেনেফিসিয়ারি বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামাত সহ এই পুরো পলিটিকাল এস্টাব্লিশ্মেন্ট।

। ফলে, সামনে পেছনে যতই পক্ষ বিপক্ষ নিক, এরা সবাই একই গোয়াল এর গরু এবং একই সিস্টেম এর সুবিধাগ্রহণকারি। এরা আমাদের ভুলিয়ে রেখেছে, দেশ একটা ব্যাপক অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই চান মাসের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন। দেখেন সকলে বলতেছে, গত বছর থেকে এই বছর এর সেল অর্ধেক।

গত বছরে, তার আগের বছর থেকে সেল ছিল অর্ধেক। শেয়ার মার্কেট এর পতন এর পর থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হইছে এবং এ ইনভেস্টমেন্ট থেমে আছে, রিয়েল এস্টেট সেক্টর থেমে আছে, ইম্পরত কমে গ্যাছে, কনাজাম্পসান কমে গ্যাছে, এন্ট্রি লেভেল গ্রাজুয়েট সেলারি নেমে এসেছে ৭০০০ আর কোঠায়, ১২০০০ থেকে, নতুন কোনও কর্মের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না, সারা বিশ্বে গত ১০ বছরে একটা আইটি বিপ্লব হয়ে গ্যাছে ই কমার্স, এপ্স এবং নতুন টেকনোলজিয়ের আগমনে, কিন্তু আমরা সেইটাও মিস করছি এবং এই ২০১৩ তে এসে এখন সরকার হিসেবে মতে এই দেশের ১২ কোটি মানুষ দৈনিক আয় ১.৫ ডলার বা মাত্র ১২০ টাকার নিচে, বা মাসিক ৫০০০ টাকার নিচে যেই আয় এর সীমায় দরিদ্রসিমার উপরে হইলেও, নুন আনতে পান্তা ফুরায় এই ১২ কোটি মানুষের । কিন্তু, তার চেয়েও বড় একটা প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াচ্ছে , বিচার বিভাগ এর নিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্রের আইন প্রণয়নকারী বিভাগ বা রাজনৈতিক বিভাগ এর সাথে, বিচার বিভাগ এর সেপারেসান নিয়ে আজ কেও কোন প্রশ্ন উচ্চারণ করছেনা। কারন, সবাই বিচার এর পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে মত্ত এবং আফিম সেবী চিনাদের মত সবাই একটা পক্ষ নিয়ে সেই দন্দে আবিষ্ট হয়ে আছে । কিন্তু, আমরা যে যেই পক্ষেই থাকি আমরা ভুলে যাচ্ছি যে, রাজনৈতিক শক্তির সমীকরণে যদি বিচার বিভাগ কুক্ষিগত হয়ে থেকে, তো রাষ্ট্রের ভিত্তি ভেঙ্গে পড়ে।

সেই রাষ্ট্র থেকে, আপনি কিছু আশা করতে পারবেন না। সেই রাষ্ট্রে চলবে বল্গা হীন অবিচার, কুশাসন এবং রাজনৈতিক শক্তির হাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ এর বাধাহীন লুণ্ঠন- এই বিচার এর রায় আপনার পক্ষে যাক আর বিপক্ষে যাক। এবং সরকার এর ইচ্ছা মতো বিচার এর রায় কমানো বাড়ানো, রায় এর টাইমিং ঠিক করা, এপিল হওয়া না হওয়া, শাহবাগ বা হেফাজত এর জনপ্রিয়তার সমীকরণ অনুসারে বিচার এর রায় নির্ধারিত হওয়া, স্কাইপ কেলেঙ্কারিতে তাড়াতাড়ি রায় দিলে বিচারক কে এপিল বিভাগ এর নিয়োগ দেয়ার লোভ দেখানোর মত আলোচনা সামনে আসা , চিফ প্রসিকিঊটার এর সাথে প্রধান বিচারক আর পক্ষপাত মূলক আলাপচারিতা , জনপ্রিয়তার সমীকরণ মেলাতে রায় হওয়ার পর নতুন আইন প্রণয়ন করা সহ আর সব ভয়াবহ রাজনিতিকিকরন দেখা যাচ্ছে, তা গা শিউরে ওঠার মতো। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাম্য। প্রকৃত অপরাধী দের সর্বোচ্চ শাস্তি কাম্য।

কিন্তু, বিচার বিভাগ এর স্বাতন্ত্র্য এবং স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে, রাজনৈতিক শক্তির ক্ষমতার সমীকরণ মেলানোর এই যুদ্ধাপরাধ বিচার হার্ড কোর পক্ষ, বিপক্ষ স্রস্টি করার মাধ্যমে আমাদের দেশকে একটা গভীর খাদের দিকে নিয়া যাচ্ছে। এর ফলে যেই রায় আপনার মন মতো হচ্ছে ,সেই দিন আপনি সরকারকে বাহাবা দিচ্ছেন এবং যেই দিন রায় আপনার পছন্দ হচ্ছেনা সেই দিন আপনি সরকার এর পিণ্ডি চটকাচ্ছেন। কিন্তু পুরো প্রসেসটাতে আপনি যেইটা উপেক্ষা করতেছেন তা হলো, রাষ্ট্রের তিন টা পিলার এর মধ্যে যে ভারসাম্য ভেঙ্গে রাজনৈতিক শক্তির হাতে বিচারবিভাগ দখল হওয়া এবং ক্ষমতার দখল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ এর লুণ্ঠন বজায় রাখার জন্যে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক এবং আইন বিভাগ এর এর আন আন হোলি এলায়েন্স আপনার এবং আপনার সন্তানের সকল স্বপ্ন এর সম্ভাবনা কে ধ্বংস করে , এই রাষ্ট্রকে একটা ভগ্ন এবং আদর্শিক ভাবে বিভাজিত রাষ্ট্রে পরিণত করছে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.