আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের গর্বের বিদ্যাপিঠগুলো থাকুক পরিমলের মত জারজদের থাবামুক্ত...।

A man who is not afraid is not aggressive, a man who has no sense of fear of any kind is really a free, a peaceful man বেশ কিছুদিন ব্লগে আসা হয়নি, কারন ঢাকার বাইরে ছিলাম। সেদিন পেপারে পড়ছিলাম, "ডিজিটাল দুনিয়া উত্তাল" শীর্ষক একটি নিউজ। যেখানে ভিকারুন্নিসা স্কুলের ছাত্রী ধর্ষণের বিষয়ে ব্লগ এবং ফেসবুক, টুইটার-এ বিভিন্ন রকমের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকের বিচার দাবিতে সোচ্চারের কথা লেখা হয়েছিল। ঢাকায় এসে তাই আমার প্রথম কাজ-ই ছিল ফেসবুক-এ বসা। কিন্তু সেখানে উল্লেখযোগ্য কিছু না পেয়ে ব্লগে ঢুকলাম।

আসলেই ব্লগ এ বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার। আমি প্রথমবার যখন এ সম্পর্কিত খবর পেপারে পড়েছিলাম, তখন কেন জানি মনের ভিতর এক অদম্য রাগ জেগে উঠেছিল। মনে হছ্ছিল কুত্তার বাচ্চা পরিমলের টুটি চেপে ধরি। সঙ্গত কারনেই ভিকারুন্নিসা স্কুলের কথা মনে পড়াতে আমার বেশ কিছুদিন আগের স্মৃতি মনে পড়ে গেল। কয়েক মাস আগে ভিকারুন্নিসা স্কুলে গিয়েছিলাম, এবং গিয়ে নিজের স্কুলকে খুব মনে পড়ছিল।

আগেই বলে নিই আমার স্কুলের নাম রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল। আমাদের এ স্কুলটি প্রায় ১৮৩ বছরের পুরানো এবং অনেক ইতিহাস এ স্কলের সাথে জড়িয়ে আছে। সঙ্গত কারনেই আমি আমার স্কুল নিয়ে অনেক গর্বিত। কিন্তু ভিকারুন্নিসা হতে ঘুরে আসার পর যেনো আমার এ গর্বে কিছুটা চিড় ধরেছিল। ভিকারুন্নিসা স্কুলে প্রথম গিয়েছিলাম তাদের ডিবেট চাম্পিয়নশিপ-এ অংশ নিতে।

পরের বার গিয়েছিলাম ওই একই কারনে। ভিকারুন্নিসার বেশ কিছু বিষয় আমাকে নাড়া দিয়ে গিয়েছে। স্কলের রেজাল্টের কথা কিছু বলতে চাই না, সেটি সবার জানা, আমার নিজের স্কুল-ও বেশ ভাল রেজাল্ট করে সবসময়। কিন্তু অন্য এমন কিছু বিষয় ছিল যা আমি সারাজীবন মনে রাখব। ভিকারুন্নিসা হতে ঘুরে আসার পর আমার মনে হয়েছিল, ইশ্‌ আমার স্কুল যদি এমন হত!!! সাজানো একটি ক্যাম্পাস, খুব আহামরি কিছু না, কিন্তু অন্যরকম কিছু আছে।

যে বিষয়গুলোর কারনেই হয়ত এরকম স্কলের ছাত্র ছাত্রীরা তাদের স্কুলকে সারাজীবন মনে রাখে, যেমনটি আমার নিজের ক্ষেত্রে হয়েছে। ভিকারুন্নিসায় ঢুকেই একটু হোচট খেয়েছিলাম, কারন এতবড় একটি ডিবেট চাম্পিয়নশিপ তারা কোন শিক্ষক/শিক্ষিকা ছাড়া নিজেরাই চমৎকারভাবে সামলাছ্ছিল। কয়েকজন পিয়ন ছাড়া আর কোন ছেলে মানুষ আমি দেখিন। তবে ছাত্রীদের বেশ কিছু অবিভাবককে দেখেছি অনেক রাত পর্যন্ত মেয়েদের জন্য অপেক্ষা করতে। বিশাল অডিটরিয়মে অসংখ্য মেয়ের ব্যাস্ত ছুটাছুটি।

স্কুল কলেজের ছাত্রীরা যতবড় আয়োজন করেছে আমরা বিশ্ববিদ্যলয়ের ডিবেট ক্লাব সেটি করতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছি। বুয়েটে ডিবেটের জাজমেন্ট করতে গিয়েও ভিকারুন্নিসার সাবেক ডিবেটারদের দেখেছি। বুয়েটিয়ানরা হয়ত নাম বললে দুয়েকজনকে ভালভাবে চিনবেন। যাইহোক ব্লগে দেখলাম "রাগ ইমন " একটি পোস্ট দিয়েছেন "ভিকারুন্নিসার প্রাক্তন ছাত্রীদের বলছি" এই নামে। আজ শনিবার তাদের মানববন্ধন কর্মসূচি।

অর্গানাইজার হিসেবে ভিকারুন্নিসার ছাত্রীদের দক্ষতা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নির্যাতিতদের অধিকার আদায়ে শান্তিপূর্ণ কোন কর্মসুচি আজকাল আর শান্তিপূর্ণ থাকেনা, যখন সেখানে রাজনীতির দূর্গন্ধ থাকে। নির্যাতিতদের অধিকার আদায়ের কর্মসুচিতে কোন রাজনীতির দূর্গন্ধ না থাকলেও আমার শঙ্কার কারণ অভিযুক্তদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারনে। কারন এর মধ্যে যতরকম রাজনৈতিক বিষয় জড়িত তাতে এখন পর্যন্ত পরিমলকে গ্রেফতার হলেও যেসব সমস্যা তৈরী হয়েছে তাতে ন্যায্য বিচার তো পরে, এমন উদাহারন তৈরী করা হল যাতে ভিকারুননিসার বর্তমান প্রিন্সিপাল যেনো এ কথাটি অভিভাবকসহ সমস্ত ছাত্রীদের বুঝিয়ে দিলেন ভবিষ্যতে যদি আবার কেউ পরিমলের মত তার অন্য কোন পেয়ারের শিক্ষকের ব্যাপারে অভিযোগ আনে তাহলে তাকেও স্কল হতে বহিস্কার করা হবে। হোসনে আরা নরপশু শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো যৌন নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রীকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন।

আর এ ঘটনায় হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন ছাত্রীটির বাবা। হায়রে হোসনে আরা, নিজের চেয়ার বাচাতে পরিমলের পেছন হতে যারা শেল্টার দিছ্ছে তাদের নির্দেশে দেশের শিক্ষক সমাজকে আরেকবার কলংকিত করলি। এই হারামজাদী এর আগে বলেছে এটা রেইপ না, এটা মিউচুয়াল সেক্স। শেষ পর্যন্ত গালিটা দিয়েই দিলাম। Click This Link ।

আবার মানববন্ধনের খবরে স্কুল নাকি বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এমনকি কুত্তীটা নাকি পুলিীশের ভয়ও দেখিয়েছে। Click This Link । এদিকে সবচেয়ে মারাত্বক যে ব্যাপারটি তা হল মেয়েটির ভবিষ্যৎ কি হবে? ভয় হছ্ছে আমাদের এত লেখালেখি যাকে নিয়ে, তার ভবিষ্যৎ কি? যে কথাটি মুখে উচ্চারন করতে ভয় পাছ্ছি, যেটি সমাজের আর দশটি ক্ষেত্রে ঘটেছে। আসুন আমরা মেয়েটিকে আর ধর্ষিতা না বলে বরং বলি আমাদের নির্যাতিতা বোন।

একজন নির্যাতিতা বোনের সুবিচার নিশ্চিত করতে সবাই এগিয়ে আসি। এইতো কিছুক্ষন আগে ব্লগে আরো একটি স্কুলের শিক্ষকের অপকর্মের রিপোর্ট দেখলাম। জানিনা আরো কত বোন এরকম পরিমলদের দারা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হয়ে বালিশে মুখ গুজে কাঁদছে রাতের আধাঁরে। যারা পরিমলের মত এরকম লম্পটদের রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছে তাদের বিচার করবে কারা? কিসের জোরে পরিমল বাবুরা বলার সাহস পায় "তোরা আমার কচু করবি"। এ ঘটনার শেষ কি হবে জানি না, কিন্তু একটি কথা মনে হছ্ছে যে ভিকারুন্নিসার ইতিহাস কি শেষ পর্যন্ত এমন হয় কিনা যেরকম আমরা দেখেছি জাবি ও ইডেন-র ক্ষেত্রে।

কারন ব্লগে এইমাত্র একটি লেখা দেখলাম ব্লগার কাঙালের। প্রিয় ব্লগারের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনি আপনার ভাতিজিকে এক ভিকারুন্নিসা হতে সরিয়ে আরেক স্কুলে দিতে চান ভালো, কিন্তু সেখানে আরো মুখোসধারী পরিমল বাবু অপেক্ষা করছে না আপনি জানবেন কি করে? আরেকটি লিঙ্ক পড়ে মাথায় রক্ত উঠে গেলো তাই শেয়ার করলাম Click This Link । আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রাজনীতির হীন সার্থের বলি আজ আমাদের মেয়েরা। দেশের সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন দলীয় পরিচয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। বিসিএস ব্যবস্থা মানে তো এখন অলিখিত দূর্ণিতির জারজ সন্তান।

পাঠক আমার কথায় রাগ করলে আমার এ ব্যাপারে নিজস্ব যুক্তি আছে। আর আপনি নিজেরে সৎ জানলে আমার সালাম। কিন্তু আমি যেটি বলতে চাছ্ছি যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা রাজনীতির বলি হয়ে ধ্বংসের পথে। এর কোন প্রতিকার আদৌ আছে কিনা জানিনা, কিন্তু এতটুকু বুঝি ব্লগার কাঙাল ভাই কম মনের দুঃখে তার পোস্ট দেননি। পাঠক লেখাটি পড়লেই বুঝবেনhttp://www.somewhereinblog.net/blog/kangalblog/29409775 ।

সবশেষে বলি ভিকারুন্নিসায় আমরা যে ডিবেট কম্পিটিশনে অংশ নিয়েছিলাম তার একটি সুন্দর স্লোগান ছিল, ব্লগের সকলের জন্য স্লোগানটি বলছি, "মানবতার বিজয় রচিত হোক তথ্য যুদ্ধের আশীর্বাদে" । আসুন সকল ব্লগার ভাই বোনেরা এই স্লোগান বুকে ধারণ করে আমাদের এক নির্যাতিতা বোনের পাশে দাঁড়াই। আমাদের যুদ্ধ ডিজিটাল যুদ্ধ। প্রয়োজনে আমরা রাজপথে নামব এক নির্যাতিতা বোনের সুবিচারের জন্য। পরিশেষে আবার বলছি "মানবতার বিজয় রচিত হোক তথ্য যুদ্ধের আশীর্বাদে"।

আমাদের গর্বের বিদ্যাপিঠগুলো থাকুক পরিমলের মত জারজদের থাবামুক্ত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.