আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাশবিক আগ্রাসনে আত্মবিনাশের পথে ভ্রান্ত মতাদর্শ

পরিচয়: মানুষ; ঠিকানা: পৃথিবী; ধর্ম: মনুষ্যত্ব কোন মতাদর্শ বা দর্শনের যদি মানবিক ভ্যালু থাকে, তবে প্রায়োগিক ক্ষেত্রে একে পাশবিক-বর্বর আগ্রাসী হতে হয় না, একরোখা-মারকুটে আর স্বৈর-ভাবাপন্ন হতে হয় না। বস্তুনিষ্ঠ ও কল্যায়ণকর পথের বিকাশ ও বিস্তার সতত গণতান্ত্রিক, গণমানুষের টুটি চেপে ধরে কিংবা জীবন্ত পুড়িয়েও নাৎসিবাদ শাশ্বত হতে পারেনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। রক্তপাত আর লাশের মিছিল নিয়ে হিটলার-রা তাদের ভ্রান্ত পথে বেশি দূর হেঁটে যেতে পারেন না, অল্পতেই হোঁচট খায় এরা, সমূলে ভূপাতিত ও বিলুপ্ত হয় সভ্যতার নিকৃষ্টতম নর্দমায়। পক্ষান্তরে সুন্দরের পথে, মঙ্গলের পথে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল-এর সেবাদর্শিক পরিব্রাজনের জন্য জ্বিহাদ-ক্রুসেডের উলঙ্গ আগ্রাসন প্রয়োজন হয়নি; গান্ধী-জীর অহিংসা মতাদর্শের বিপরীতে যুদ্ধবাজ ইংরেজের গোলা-বারুদ কতটা অক্ষম-অশক্তিমান ছিল সময়ের এপিটাপে আজও তার মর্মর ধ্বনি সাক্ষ্য দেয়। সাতাশ বসন্তের দিবারাত্রীর উৎসর্গে মাদিবা-র বর্ণবাদমুক্ত আফ্রিকার বিকাশ-বিস্তার আর ৭০টি যুদ্ধ ও রক্তস্রোতের উপর দাড়িয়ে কোন অলৌকিক উপাখ্যানের প্রচার-প্রসার কখনোই সমার্থক হতে পারে না।

হাজার বছরের পুরনো আগ্রাসী-বর্বর ফারাও সভ্যতার পতনও নিশ্চিত করেছিল সময়, আর চৌদ্দ'শ বছরের এই নগ্ন আস্ফালনে আতঙ্কিত হবার কি আছে! পতনের প্রান্তিক মুহূর্তে প্রতিটি আগ্রাসী মতবাদী গোষ্ঠীই অধিক বর্বর ও বেপরোয়া ধ্বংস ও হনন উৎসবে উন্মত্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক, আত্ম-বিনাশের পূর্বে ভূ-বাসি পিঁপড়েও ভিটে-মাটির সাথে বেঈমানি করে উড়ালপ্রবণ হয়__ এটা এক ধরণের প্রাকৃতিক ও প্রাগৈতিহাসিক সত্য। নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধহীন আগ্রাসন কেবল মতাদর্শ বা দর্শনের বিনাশ ঘটাতে পারে, বিকাশ ও বিস্তার কখনোই নয়। কোন ভ্রান্ত মতাদর্শের সাময়িক প্রভাব-প্রতাপ যতই শক্তিশালী হোক না কেন সমাজে, এটি কখনোই শাশ্বত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারে না। ধর্ম-হুজুগের দেশে নিধার্মিকরা যতই নির্যাতন-নিপীড়নের মুখোমুখি হবে, ততই সময়ের কাছে ধর্মের উপযোগ ফুরিয়ে আসবে। অন্ধকার আর কুসংস্কারের ভ্রান্ত মতাদর্শের বিনাশের জন্য, ঐসব ভ্রান্ত মতাদর্শধারীদের গ্রেনেড-ককটেলের আত্মঘাতী আগ্রাসনই যথেষ্ট__ ইতিহাসের পাঠোদ্ধারের মাধ্যমে এটা সুস্পষ্ট করে বলা যায়।

তাই আজকের ধর্ম-হুজুগদের মানবিক মূল্যবোধহীন উন্মাদীয় আগ্রাসনে নিধার্মিকদের বিচলিত হওয়ার কিছু নেই, বয়োবৃদ্ধ রাত্তিরে অন্ধকারের গভীরতা কেবল ভোরের আবাস দেয়। ব্রুনোদের প্রাণ-পোড়ানো আলোতেই কিন্তু সত্য বিকশিত হয়, মুক্তচিন্তা-মুক্তচেতনা সমহিমায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিস্তার লাভ করে বহুদূরবর্তী প্রজন্মে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.