আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরকীয়া

আমি একজন সত্যবাদী লোক। আমি আত্মকেন্দ্রিক নই। Wed, Jun 15th, 2011 6:24 pm BdST Dial 2000 from your GP mobile for latest news বরগুনা, জুন ১৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- পরকীয়ার অভিযোগে গ্রাম্য সালিশে দু'জনকে জুতাপেটা করেছে মাতবররা। এই দুজনের নাম বশির উদ্দিন (৩২) ও মোমেনা আক্তার (৩০)। রোববার রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনয়নের বান্দরগাছিয়া গ্রামে এ দুজনকে জুতাপেটা করা হয় বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।

গুরুতর আহত হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে দুদিন বের হতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ মঙ্গলবার রাতে মোমেনাকে উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বশির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০০৭ সালে ঘুর্ণিঝড় সিডরের পর তিনি নিজে ট্রলার তৈরি করে সাগরে মাছ ধরা শুরু করেন। তার ট্রলারে গ্রামের মুনসুর আলী প্যাদার মেয়ে মোমেনার তিন ভাই বজলুর রহমান (২৭), নজরুল ইসলাম (২৫), জহিরুল ইসলাম (২৩) ও স্বামী হেলাল উদ্দিন (৩৬) কাজ করে। একত্রে মাছ ধরার সুবাদে মোমেনা ও তার ভাইদের পরিবারের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে।

এ নিয়ে বছর খানেক আগে গ্রামে গুঞ্জন শুরু হয় যে, তাদের দুজনের 'সম্পর্ক' আছে। বশির জানান, বছর খানেক আগে যখন গ্রামের লোকজন এ নিয়ে গুঞ্জন শুরু করে তখন মাতবররা দুই পরিবারকেই একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত বন্ধ রাখতে বলে। তিনি এবং মোমেনার পরিবারের সদস্যরা তাই করেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মোমেনার চাচী কহিনূর বেগম মাতবরদের গিয়ে জানায়, মোমেনা ও বশির স্থানীয় একটি বাগানে দেখা করেছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য স্বপন খানের নেতৃত্বে গ্রামের মাতবর মহিবুল জামাদ্দার, আবদুল কুদ্দুস আকন, রাসেল ও ইউসুফ আলী মোমেনার বাড়িতে যায়।

তারা মোমেনাকে এ বিষয়ে দু-এক কথা বলার পরপরই পেটাতে শুরু করে। এসময় মোমেনা আহত হয়। মাতবররা মোমেনাকে পেটানোর পর মোবাইল ফোনে বশিরকে ডেকে নেয় এবং তাকেও একই কায়দায় পেটানো হয় বলে অভিযোগ করেন বশির। এরপর তাদের দুইজনকে বান্দরগাছিয়া গ্রামের চৌরাস্তার বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সালিশ বসান স্বপন খান ও তার সহযোগীরা।

সালিশে আবার বশির ও মোমেনাকে জুতাপেটা করা হয় এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে পাঁচটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে বান্দরগাছিয়া গ্রাম থেকে বশির পালিয়ে এসে বরগুনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এই ঘটনা জানান। তখন সাংবাদিকরা বশিরকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন এবং পুলিশকে বিষয়টি জানান। মঙ্গলবার রাতে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু তাহেরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বান্দরগাছিয়ায় যায়।

পুলিশ সেখান থেকে মোমেনাকে উদ্ধার করে। রাতেই তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বশির জানান, তার সাথে মোমেনার পরকীয়ার সম্পর্ক নেই। বিষয়টি তিনি মাতবরদের বলার পরও তারা কোনো কথা শোনেননি। মোমেনা হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, বশিরের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

তার চাচী কহিনূর বেগমের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের সূত্র ধরেই কহিনূর 'কূটনামি' করেছে বলে অভিযোগ করেন মোমেনা। ইউপি সদস্য স্বপন খান সালিশে মোমেনা ও বশিরকে জুতা দিয়ে পেটানোর কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তাদের পেটানো হয়েছে। মোমেনার ভাই বজলুর রহমান জানান, তাদের বাবা মারা যাওয়ার পর দুঃসময়ে বশির সবাইকে তার ট্রলারে কাজ করতে দেয়।

তার বাবার সঙ্গেও বশিরের সম্পর্ক ভালো ছিলো বলে জানান বজলুর। তিনি জানান, মোমেনার স্বামী একটু 'আলাভোলা'। এটা সবাই জানে। গ্রামের কয়েকজন তার কাছে মোমেনা সম্পর্কে খারাপ কথা বলে। সহজ-সরল মানুষ হওয়ায় সে তাদের কথা বিশ্বাসও করে।

বজলুর রহমান দাবি করেন, তার বোন মোমেনা ও বশিরের মধ্যে কোনো অনৈতিক সম্পর্ক নেই। অহেতুক তাদেরকে মারধর করা হয়েছে। নির্যাতনকারীদের বিচার দাবি করেন তিনি। ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক স্বপন জানান, নির্যাতনের বিষয়টি শুনে তিনি মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে গিয়ে বশির ও মোমেনাকে দেখে এসেছেন। তিনি সঠিক ঘটনা জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

বরগুনা থানার ওসি আবদুল খালেক হাওলাদার জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।