আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইদানীং নিজেকে নিয়ে যে মজার ভাবনাগুলো ভাবি

I realized it doesn't really matter whether I exist or not. সময় অতিবাহিত হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে মানুষের অভিজ্ঞতাও একটু একটু করে বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে তার বোধ। কোনোকিছু অনুভব করার ক্ষমতা, কষ্ট বা সুখ এসব বোঝার ক্ষমতা তার মধ্যে বড় হতে থাকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। একটা সময়ে এসে সবাই উপনীত হয়, যখন সে তার জীবনে প্রায় সব ধরনের অনুভূতিরই সম্মুখীন হয়েছে।

কিন্তু কারো কারো জীবনে এই সময়টা অনেক আগেই চলে আসে। ইদানীং নিজের মধ্যে দুইটা বড় পরিবর্তন টের পাচ্ছি। প্রথম পরিবর্তনটা চোখে পড়ার মতো কিছু নয়। অন্তত আমার আশেপাশে যারা আছে তাদের কাছে তো নয়ই। কারণ, সেটা হলো অনেক বেশি চুপচাপ থাকা।

আমি বরাবরই অতিরিক্ত ঠাণ্ডা স্বভাবের মানুষ। কেউ এসে কিছু বললে চুপচাপ শুনি। কেউ এসে বকাঝকা করলে কোনোকিছুর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে কথা শুনি। কেউ এসে ভালো কিছু বললে সেটাও একদৃষ্টে পাশে রাখা পানির গ্লাস বা হাতপাখার দিকে তাকিয়ে চুপচাপ কেবল শুনে যাই। কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করে না।

কীসের যেন একটা অপরাধবোধ নিজের মধ্যে সবসময় বিরাজ করে। কথা বলতে ভয় পাই কি না জানি না, তবে এটা জানি যে কথা বলতে ইদানীং ভীষণ অপছন্দ করি। তাই সবকিছু চুপচাপ সয়ে যাই। সেটা যা-ই হোক না কেন। ধৈর্য্যশক্তি আমার বোধহয় ছোটবেলা থেকেই একটু বেশি ছিল।

মজার ব্যাপার হলো, দ্বিতীয় যে পরিবর্তনটা এসেছে সেটাও চোখে পড়ার মতো তেমন কিছু নয়। কারণ, আমার চিন্তা-ভাবনায় নতুন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে। কেউ তো আর আমার চিন্তা-ভাবনা দেখতে পাচ্ছে না। পরিবর্তন টের পাওয়ার তাই কোনো ভয় নেই। স্যাডিস্ট শব্দটা প্রথম পড়েছিলাম তিন গোয়েন্দা বইয়ে।

শব্দটা আসলে কী অর্থ বহন করে তা কখনো জানতে চেষ্টা করিনি। তবে এতটুকু আন্দাজ করতে পেরেছি যে খুব খারাপভাবে কারো উপর নির্যাতন করার মানসিকতা যার আছে তাকে হয়তো স্যাডিস্ট বলা যেতে পারে। আমার সংজ্ঞা যদি সঠিক হয়, তাহলে আমিও এক ধরনের স্যাডিস্ট হয়ে যাচ্ছি। পার্থক্য হচ্ছে, আমার গল্পে ভিকটিম আমি নিজেই। মাঝে মাঝে মাথার উপরে ঘূর্ণায়মান ফ্যানের দিকে তাকিয়ে হঠাৎই কল্পনায় ভেসে উঠে মজার মজার কিছু চিন্তা।

কাল সকালে উঠে যদি আমার রুমের দরজাগুলো বন্ধ পায় সবাই, কেউ কি টেনশন করবে? হয়তো করবে। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতে হবে। ঢুকে যদি দেখে ঘরে একটা মানব-ঝাড়বাতির আবির্ভাব হয়েছে, কেউ কি খুব অবাক হবে? নাতো! অবাক হওয়ার কথা না। তবে ঝামেলায় পড়বে এটা ঠিক। এক. দরজা ভাঙার ক্ষতি।

দুই. মানব-ঝাড়বাতিটাকে তোর আর ঝুলিয়ে রাখা যাবে না, এটার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই ঝামেলা। নাহ, আর ঝামেলা করার কোনো মানে হয় না। আমি গুটিয়ে যাই। মাঝে মাঝে রাস্তা পার হওয়ার সময় মনে হয় একটা দূর্দান্ত সুযোগ ঠিক হাতের মুঠোয়।

মাত্র কয়েক সেকেণ্ডের ব্যাপার। পার হয়ে যাওয়া রাস্তা থেকে মাত্র কয়েক পা পেছনে আসলেই ঝড়ের গতিতে এগিয়ে আসা ভারি যানটার স্পর্শ পাওয়া যাবে। ব্যস। এক নিমিষে কেচ্ছা-কাহিনী খতম। কিন্তু তবু কেন যেন পারি না।

সাহসে কুলায় না? তাহলে তো আমি ভীতু। কী জানি! হয়তো আমি ভীতু। তবে কতদিন আর ভীতু থাকবো সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে আমার। এসএসসির রেজাল্ট দিল। সামনে কলেজে ভর্তির টেনশন।

এখনো সার্কুলার দেয়নি কোথাও। দিলে তারপর দেখা যাবে ফলাফল এবং সামর্থ্যের সমন্বয় কোন কলেজে হয়। তার আগ পর্যন্ত এই সময়টায় তেমন কোনো কাজ নেই। অবশ্য কাজ থাকলেও কোনো লাভ হতো না, এসব মজার মজার চিন্তা মাথা থেকে যেত না। চিন্তাগুলো করে আমি বরং মজাই পাই।

আরও মজার ব্যাপার হলো, চিন্তাগুলো আমি নিজে থেকে করি না। আমার মধ্যের স্যাডিস্ট আমিটা যখন-তখন এসব চিন্তা শুরু করে দেয়। আমি তো কেবল তার চিন্তাগুলো শুনি বসে বসে। আর অদ্ভূত একটা নিঃশব্দ হাসি দেই মনের অজান্তেই। ঠিক যেন স্যাডিস্ট, তাই না? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।