আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে ক্ষুব্ধ ইনু-মেনন



ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও রাষ্ট্রধর্ম প্রসঙ্গে নেয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুদ্ধ সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটির দুই বামপন্থী সদস্য হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন। তারা মনে করছেন, আসন্ন পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি উপকৃত হবে। একই সঙ্গে চরম ক্ষতির শিকার হবে ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতি। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, 'সংবিধান সংশোধনে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের বিরোধীতার বা ক্ষুদ্ধ হওয়ার কিছু নেই। এখানে আমি বা রাশেদ খান মেনন ক্ষুদ্ধ হতে পারি।

কারণ এই সংশোধনীর ফলে বিএনপি-জামায়াতই সবচেয়ে লাভবান হবে। আর আমরা যারা ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতি করি; তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবো। ' ইনু আরো বলেন, 'জামায়াতের তো শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করা উচিত। কারণ সংশোধিত সংবিধানেও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সুযোগ করে দেয়া ৩৮ অনুচ্ছেদ প্রায় অপরিবর্তিত থাকছে। ' এর আগে গত ১৬ মার্চ বিশেষ কমিটির ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশেষ কমিটি।

ওই কমিটির মুখপাত্র ও কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জানিয়েছিলেন, সংবিধান সংশোধনের ফলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ নিবন্ধিত কোন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হবে না। তবে তাদেরকে সংবিধানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য মেনেই রাজনীতি করতে হবে এবং তারা ধর্মকে অপব্যবহার করে সামপ্রদায়িকতা সৃষ্টি করতে পারবে না। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে এ সংক্রান্ত শর্ত সংযোজনের ব্যাপারে ঐক্যমতে পেঁৗছেছে সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি। প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, 'জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ গঠন করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে। ' এদিকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পাশাপাশি সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ রাখা নিয়েও শুরু থেকেই বিরোধীতা করে আসছেন ইনু ও মেনন।

গত ১১ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিশেষ কমিটির ১ম দিনের বৈঠকেও এ বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী সংশোধিত সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। এনিয়েও তারা ক্ষুদ্ধ। তাই আগামী ২৫ এপ্রিল এই কমিটির সাথে নিজ দলের পক্ষে মতবিনিময়কালে ওই বিরোধীতার কথা তুলে ধরবেন মেনন। মঙ্গলবার বিকেলে ওয়ার্কার্স পার্টির এই সভাপতি নিজেই এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সংশোধিত সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতার নিশ্চিতে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাশেদ খান মেনন। যেখানে বলা হয়েছে, 'প্রজাতন্ত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। তবে রাষ্ট্র্র সকল ধর্মের সমঅধিকার নিশ্চিত করবে। ' কমিটির অনেক সদস্য তার এই প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। এই ঘটনা উল্লেখ করে কমিটির আরেক সদস্য শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেছিলেন, 'সুরঞ্জিত বলেছেন- রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পক্ষে একমত হয়েছে কমিটি।

এটা বিভ্রান্তিমূলক। রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে পারে না। ' এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারির বৈঠকের পর বিশেষ কমিটির মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে- সংবিধানে 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম (দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহর নামে)' শব্দগুচ্ছ থাকবে এবং ২(ক) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে 'ইসলাম' বহাল থাকবে। তবে এই অনুচ্ছেদ সংশোধন করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য সব ধর্মের সমান অধিকার সমুন্নত রাখার বিধান করার ব্যাপারে কমিটি একমত হয়েছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, 'প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে।

'

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.