আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রূপগঞ্জের ট্র্যাজেডি নিয়ে আরো কিছু অকথিত ভেতরের কথা

স্ববিরোধিতা আমার পছন্দ নয়। সর্বদা স্রোতর পক্ষে চলা আমার স্বভাব নয়। সব পুরাতন বাতিল নয়। চলার পথে সহযাত্র্রীরা সম্পদ। পরামর্শের মত সাহায্য নেই।

সব চাইতে অসহায় সেই ব্যক্তি যার কোন ভ্রাতৃ-প্রতিম বন্ধু নেই। কিন্তু আরো অসহায় সেই ব্যক্তি যে এহেন বন্ধু পেয়ে হারায়

আমাদেরসময়ডটকম নভেম্বর ০৫, ২০১০, শুক্রবার : কার্তিক ২১, ১৪১৭ । আপডেট বাংলাদেশ সময় রাত ১২:০০ দুলাল আহমদ চৌধুরী: রূপগঞ্জ এলাকার জমি কিনতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন সেনা আবাসন প্রকল্পের দায়িত্বশীল কর্তা ব্যক্তিরা। তারা প্রকল্প এলাকার জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রাখতে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতাও চেয়েছিলেন। কিন্তু এরকম একটি আইনবহির্ভূত কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন ডিসি মো. শামসুর রহমান।

তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন, আপনারা যেটা চাচ্ছেন সেটা আমার কাজ নয়। আপনারা এরকম করলে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, মানুষের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হবে। আর সাব-রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোনো অবস্থাতেই যেন জনগণের জমি কেনাবেচা রেজিস্ট্রি বন্ধ না হয়। ডিসির এ কঠোর অবস্থানের কারণে বিকল্প পথ বেছে নেয় প্রকল্পের দায়িত্বশীলরা। তারা পাহারা বসিয়ে দেয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে।

প্রভাব সৃষ্টি করে বন্ধ করে দেয় জমি কেনাবেচার কাজ। সহযোগিতা, ডিসির অপারগতা ও রেজিস্ট্রি অব্যাহত রাখতে কঠোর অবস্থানের কারণে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন প্রকল্পের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তারা তাকে বদলি অথবা ওএসডি করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে পত্র পাঠান। একইভাবে সাব-রেজিস্ট্রার বদলি করে তাদের পছন্দের সাব-রেজিস্ট্রার চান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এ পত্রে বলা হয়, কিছু অসাধু প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ তাদের ব্যক্তিস্বার্থ অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রকল্প বাস্তবায়নে চরম বাধা সৃষ্টি করছে।

এসব কর্মকর্তা নতুন গজিয়ে ওঠা স্থানীয় হাউজিং প্রকল্পের মালিকদের সহায়তায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন কুপরামর্শ দিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ডিসি সম্পর্কে পত্রে বলা হয়, প্রকল্পটি যাতে যথাসময়ে বাস্তবায়িত না হয় সেজন্য স্থানীয় জনৈক রফিক এবং সাব-রেজিস্ট্রার ড. আব্দুর রাজ্জাককে নেপথ্যে মদদ দিয়ে অনুপ্রাণিত করছেন এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগ গ্রহণ করছেন। তাকে জরুরি ভিত্তিতে অন্যত্র বদলি বা ওএসডি করে একজন ভালো জেলা প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। এ পত্র পেয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিলেও ডিসির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থায় যায়নি সরকার। একই পত্রে রূপগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার ড. আব্দুর রাজ্জাককে ‘খুব চতুর লোক’ উলেৱখ করে বলা হয়, তিনি এএইচএস প্রকল্পটি প্রলম্বিত করার লক্ষ্যে অতি কৌশলে প্রকল্প এলাকার জমি অন্য হাউজিং কোম্পানির কাছে বিক্রির জন্য সহায়তা করে আসছেন।

তাকে ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ উলেৱখ করে তার স্থলে ভোলা সদরে কর্মরত সাব-রেজিস্ট্রার মো. আনোয়ার হোসেনকে বদলির সুপারিশ করা হয়। বলা হয়, আনোয়ার হোসেনের ছেলে বর্তমানে সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে কর্মরত। তাকে রূপগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব দিলে সেনা কর্মকর্তাদের স্বার্থকে বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে সহায়তা করবেন। এজন্য তারা আইজিআরসহ বিভিন্ন অফিসে ধরনা দেন। জানা গেছে, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা অনুযায়ী সাব-রেজিস্ট্রার কাজ করছিলেন।

প্রকল্প সংশিৱষ্টদের নির্দেশনা মানতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আমার কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ব্যতীত জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রাখা সম্ভব নয়’। এ নিয়ে তার সঙ্গে একাধিক দিন কথা কাটাকাটি হয়েছে সংশিৱষ্ট কর্মকর্তাদের। অপদস'ও হয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসক বদলি না হলেও রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডির ১৫ দিন আগে অক্টোবরের ১ম সপ্তাহে সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলি করা হয়েছে মিঠাপুকুর উপজেলায়। সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগের কোনো সত্যতা না থাকলেও শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো বিরোধে না জড়াতে আইন মন্ত্রণালয় সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলি করে।

তবে তারা প্রকল্প সংশিৱষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী আনোয়ার হোসেনকে সেখানে দেয়নি। ৪৪৯

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।