আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শব্দের পোস্টমর্টেম-১১৯



সাধারণ অর্থে চুল কোঁকড়িয়ে কপালে এসে পড়লে মুখের শোভা বাড়ে বলে এ চুলকে অলক বলা হয়। কারণ চুল অর্থে শব্দটির গঠন হচ্ছে : অল্ (শোভা করা বা অলঙ্করণ) + অক (কর্তৃবাচ্যে)। সংস্কৃতে অলক চুলের সমমান শব্দ হচ্ছে 'কর্করাল' আর হিন্দিতে 'কাকুল'। আভিধানিক অর্থে অলক মানে স্বভাববক্র ভঙ্গিযুক্ত কেশ। অলকের কাব্যিক নাম চূর্ণকুন্তল, যা কপাল ছুঁয়ে কুঁকড়ে থাকে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, 'অধরে অধরে মিলল অলকে/অলকে কোথা পুলকের তুলনা'। আর কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, 'তার অলকের একটু সুবাস পশবে তোরও নাসায়/বরষ শেষে একটু সুবাস পশবে তোরও নাসায়। ' অপূর্ব ব্রজাঙ্গনায় লেখা হয়েছে, 'সখীরে ঝলকিয়া অলকেরে চামেলী ও বকুলে, উজলিয়া দেলো মোরে মোহনিয়া দুকুলে'। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস তাঁর অভিধানে লিখেছেন, 'অলক নিম্নললাটে বা কপালের কাছে ঝুলিয়া পড়িলে সেই অপেক্ষাকৃত লম্বিত কৃষ্ণবর্ণ চূর্ণকুন্তলের গুচ্ছ মুখ কমলে ভ্রমরের ন্যায় শোভা পায় বলিয়া তাকে 'ভ্রমরক' বলে। কিন্তু বাংলায় তাহাও অলক নামে পরিচিত।

হিন্দিতে ভ্রমরক আর অলকে বড় প্রভেদ করা হয় না। হিন্দি অভিধানে আছে, অলক অর্থে - 'ঘুঙ্ঘরালে বালোঁকী লট্ যো গালোপর ঝুলতী হ্যায়'। আবার অলকের ন্যায় কুঞ্চিত ও তরঙ্গায়িত বলে এক ধরনের মেঘের নামও অলকামেঘ। এ মেঘ আকাশের অনেক উঁচুতে অলকগুচ্ছের ন্যায় শোভা পায় বা বিক্ষিপ্ত কার্পাসের মতো দৃষ্ট হয়।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।