sorry vai
পৃথিবীর সমস্ত ডাস্টবিনদের বড় মনে পড়ছে আজ।
আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেয়া সমস্ত জঞ্জালেরা
তোমাদের বিদেহী আত্নাদের
ডেকে যাই আজ।
রোদে পুঁড়ে যাওয়া
বাণে ভেসে যাওয়া
মৃত্তিকার পাকস্থলিতে পচিত
মানুষের পায়ে দলিত
গলিত, সমস্ত ময়লা,
মনে পড়ছে ভীষণভাবে।
যত ছুঁড়ে ফেলা কাগজেরা
যেখানে ছিল অপটু কাব্য লেখা
কোন ক্ষণিকারে ভেবে।
আজ তুমি হয়ে উঠেছ দূর্লভ কোন
মহাকাব্যের চরণ।
কত অবাঞ্চিত মলিন ডায়রি
অংক খাতা
মলাটের পাতা
আজ মৌলিক চাহিদার মত
অস্থির করে তুলে অস্তিত্ত্বকে।
জানি
ওসবে হতনা কোন মহার্ঘ্য সৃষ্টি
পেতনা স্থান ইতিহাসের চিলেকোঠায়।
তবু এ অধমের জীর্ণ-শীর্ণ
চির প্রাচীন যাদুঘর তো হত তার নিরাপদ আশ্রম।
কত মুখেদের ছবি
কত মুহূর্তের ধুলোজমা দাগ
কত সময়ের ছায়া
কাঁদাতো, হাঁসাতো
ভাসালেও ভাসাতো
নিগূড় শ্রাবণ ঢলে।
ছেঁড়া মলাটের উল্টো পিঠে
ওষুধের নাম লেখা দেখে তো হেসে খুন হতাম
ভেবে এই
কি পাগল ছিলাম একদা,
বালিকার বিরহে
ওটা গিলে ঘুমাতাম আমার কিশোর রাতগুলোতে।
অংক খাতার গোটা গোটা সংখ্যার ফাকে
দু'চরণ কাঁচা কবিতার পঙকতি তো
হাসাতো আবার
কৈশোরে আমিও ছিলাম স্বভাব কবি এক।
বিঞ্জান বইয়ের ফাণেলের ছবির পাশে
আলু পটলের হিসেব তো আবারও ভাবাতো
আপাত ঝঞ্ঝাটময় ব্যাচেলর জীবনের কথা।
গভীর রাতে পুরোনো ডায়রীর পাতা ঘেটে
পেলেও পেতে পারতাম
বহুকাল আগের রাস্তার মোড়ের
মুদি দোকানীর ফোন নাম্বার,
যা কিনা "দু:খিত" বলে জানান দেয়
সে দিন গিয়েছে চলে।
বেচারা দিত কত বকা
সিগারেটের বাকি টাকা শুধিনি বলে।
মাকড়সার সংসার ভেঙে উদ্ধার করা
কলেজের লেকচার খাতায় পাওয়া কোন কার্টুন দেখে
ফিরে যেতাম চুলে ঝুটি বাধা
ছোট্ট মেয়েটার কাছে,
যে আমার টেবিলে বসে এঁকে যেত ওর কল্প কথার রঙ।
যে আজ ওরই মত আরেক ঝুটি বাধা মেয়ের জননী।
পুরোনো বইয়ের বান্ডেলের ফাঁকে
হঠাৎ পেয়ে যাওয়া
ঘুণে খাওয়া প্রেসকিপশন
ছুঁয়ে দিতে পারতো
আমার ক্যান্সারে খাওয়া মায়ের স্মৃতিটুকো।
সংসার খরচার ফর্দ সমেত লাল বাধাই খাতা
মনে করিয়ে দিত
ঘানি টানা স্কুল মাষ্টার বাবার কথা।
সব ছুঁড়ে ফেলেছি ডাস্টবিনে।
বধ্যভুমিতে গলিত লাশে হাত ঢুকিয়ে
মানুষ যেমন খুঁজে ফিরে প্রিয়জনের লাশ,
তেমনি আজ খুঁজে ফিরি আমার যাপিত জীবনেরে
হন্যে হয়ে
কাঁক কিংবা কুকুরের মত।
এ বড় করুণ দুর্ভিক্ষ আমার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।