আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অর্থ ± নীতি = অর্থনীতি, নাকি অর্থ + ফাঁকি = অর্থনীতি, কোনটি সঠিক?

নিজেকে হয় নাই চেনা

ধরুন বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা হল ১০ জন। সে দেশে মোট টাকার পরিমান হলো ১০,০০০ টাকা। মনে করুন ঐ ১০,০০০ টাকার পুরোটাই এখন সরকারের হাতে রয়েছে। জনগনের কাছে টাকা নেই। দেশে ব্যবসা বানিজ্য নেই।

অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কিছুই নেই। এমতবস্থায় সরকার দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল করার জন্য সকল জনগনকে টাকা প্রদান করবে বলে আস্বাস দিল কিন্তু যেহেতু সারা বিশ্বের সকল স্থানে সুদ ভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু আছে সেহেতু সরকারও ঐ টাকার বিপরীতে ১০% বাৎসরিক সুদ বসালো। দেশের জনগন নিজেদের বাচার তাগীদে এবং দেশের উন্নয়নে অবদানের স্পৃহায় উৎসাহ পেয়ে সরকারের কাছ থেকে ঋন নিতে শুরু করলো। আমাদের বুঝার সুবিধার্থে ধরে নেই সরকার ১০ জনের মাঝে সমান ভাগে টাকা ভাগ করে ঋন প্রদান করলো, সেই হিসেবে প্রত্যেকে ১০০০ টাকা করে পেল। একবছর পর যখন টাকা সরকারকে ফেরত দেবার সময় এল তখন কি অবস্থা দাঁড়ায় সেটা দেখুন, যেহেতু প্রত্যেককে প্রদত্ত টাকার ১০% সুদ প্রদান করা পুর্বক আসল টাকা সহ সরকারকে ফেরত দিতে হবে সেহেতু প্রত্যেক কে ১০০০ + (১০০০ X ১০%) = ১১০০ টাকা সরকারকে ফেরত দিতে হবে।

এবার আসুন দেখি পরবর্তি অবস্থা কি দাঁড়ায়, দশ জনের প্রত্যেককে যদি ১১০০ টাকা করে জমা দিতে হয় তাহলে সরকারের কাছে তারা ১১০০ টাকা করে ঋনী। এখন মোট জনতার কাছে সরকার পাচ্ছে সর্বমোট (১১০০ X ১০) = ১১০০০ টাকা। এখন চিন্তা করে দেখুন যেখানে সারা দেশে আছেই মাত্র ১০০০০ টাকা সেখানে বাকী ১০০০ টাকা জনগন কোথা হতে আনবে? এই পরিস্থিতি কি বলছে আমাদেরকে? নিশ্চই এই দশ জনের কেউ না কেউ বাই ডিফল্ট বা অটোমেটিক্যালি দেউলিয়া হতে বাধ্য। ধরুন এই দশ জনের সবাই সমানভাবে সময়, শ্রম, মেধা ইত্যাদি ব্যয় করলো তাহলেও কাউকে না কাউকে কিন্তু দেউলিয়া হতেই হচ্ছে। এবার নিশ্চই বুঝতে পাচ্ছেন যে কেন ইসলামে সুদ কে হারাম করা হয়েছে।

শুধু এই একটা নয়, চিন্তা করে দেখুন আরও হাজার অসঙ্গতি খুজে পাবেন ধনতান্ত্রিক এই অর্থব্যবস্থায়। দেখুন ধনতান্ত্রিক অর্থব্যাবস্থায় হাজার হাজার সংস্থা আছে যারা দারিদ্র বিমোচনের জন্য বিলিয়ন্স অফ ডলার খরচ করছে কিন্তু দারিদ্র কমছে না বরং হু হু করে বেড়েই চলেছে। তার কারন হল এই সুদ ভিত্তিক অর্থব্যাবস্থা। মুল কথা হল, যখন দেশের টাকা স্বাধীন ভাবে সার্কুলেট হয় বা ইন্ডিপেন্ডেন্ট মানি সার্কুলেশান যখন থাকে তখন দারিদ্র বিমোচনের জন্য শত শত প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠাবার প্রয়োজন হয় না। এতে রাষ্ট্র যন্ত্রের অধীনে “বাইতুল মাল” নামক প্রতিষ্ঠানটিই যথেষ্ঠ।

আজ তাহলে এ পর্যন্তই, আরেকদিন পেপার মানির আদলে আমরা যে শাক্ষাত আগুন নিয়ে খেলছি তা নিয়ে লেখব ইনশা আল্লাহ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।