আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৪০০ বছরের পুরাতন ধর্ম বনাম আধুনিক বিজ্ঞানের অহঙ্কার...

তার্কিক দুই প্রকার: সু-তার্কিক আর কু-তার্কিক...

ঘটনাটি কয়েক বছর আগের। তখন বৃহস্পতি গ্রহে কয়েকটা উল্কাপিন্ডের আঘাতে দশ লক্ষ মাইল বেগে ঝড় বয়ে যায়। সে উল্কাপিন্ড গুলিকে তখন সুমেকার লেভি-১, ‘সুমেকার লেভি-২, ইত্যাদি নামে আখ্যয়িত করা হয়ে ছিল। তখনকার পত্রিকাগুলোতে প্রায়ই এর ছবি দেখা যেত। যাতে স্পষ্ট দেখা যেত অর্ধেক বৃহস্পতি জুড়ে আগুনের শিখার মত... সেই সময়কার আর একটি আমেরিকার ঘটনা।

যা সংক্ষিপ্ত ভাবে পত্রিকায় এসেছিল। পত্রিকার শিরোনামটি ছিল: এক পোষা বিড়াল তার মালিকের জীবন রক্ষা করল। খবরের বিস্তারিত ছিল- এই রকম- মালিক যখন সিড়ি দিয়ে উপরে উঠছিল ঠিক তখন তার পোষা বিড়ালটি এসে মালিকের কাপড় কামড়ে ধরে বাইরে নিয়ে যেতে চায়। মালিক অনুসন্ধিৰসু হয়ে বিড়ালটিকে অনুসরন করে বাইরে যাবার পরেই এক ভুমিকম্পে বিল্ডিটি ধ্বসে যায়... যাক, সমসাময়িক সময়েই একদল মুসলিম দ্বীন প্রচারের কাজে আমেরিকায় গেলে এক বিশ্ব বিদ্যালয়ে কয়েকজন ছাত্রের সাথে দ্বীনের আলোচনা করতে চাইলে এক ছাত্র বলে উঠে- “রাখেন আপনার সেই ১৪০০ বছরের পুরাতন কথা.. সেটা ছিল জাহেলিয়াত যুগ.... সেই দিন এখন আর নাই.... জ্ঞান বিজ্ঞান এখন অনেক উন্নতি করেছে- সেই সব দিনের কথা এখন অচল। দাওয়াত দানকারী লোকটি ছিল বুদ্ধিমান: তিনি বিনয়ের সাথে বলে ছিলেন- ঠিক আছে: আপনার বক্তব্যের সুত্রেই দুটি কথা সংযোজন করার অনুমতি চাইছি।

২ মিনিটে শেষ করার সময় নিয়ে শুরু করলে: দাওয়াত দানকারী লোকটি ছাত্রটিকে প্রশ্ন করে: . আপনাদের বিজ্ঞান কি এমন কিছু আবিস্কার করতে পেরেছে? যার দ্বারা ৫০০ মাইল বেগে ঝড় এলে সেটা ফিরিয়ে দিতে পারে? ছাত্রটি জবাব দেয়.... “না” পারে নাই। . আপনাদের বিজ্ঞানের বৃহত আবিস্কারের মধ্যে কি এমন কিছু আবিস্কার করতে পেরেছে? যা মটর নামক একটি যন্ত্র ব্যতিত চলে? ছাত্রটি জবাব দেয়.... “না” পারে নাই। . আপনাদের বিজ্ঞান কি এমন কিছু আবিস্কার করতে পেরেছে- যার দ্বারা ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা ১০০% সত্য বলে দিতে পারে? ছাত্রটি জবাব দেয়.... “না” পারে নাই। . অতএব আমি সেই সত্বার কথা এখানে বলতে এসেছি.. যেই সত্বা বৃহস্পতি গ্রহে ১০ লক্ষ মাইল বেগে ঝড় সৃষ্টি করেন। . আর আমি সেই সত্বার কথা বলতে এসেছি.. যিনি সুর্য সহ ১১ টি গ্রহ এবং গ্যালাক্সি গুলিকে অনন্তকাল ধরে নির্দিষ্ট পথে ঘুড়িয়ে চলেছেন- যার জন্য কোন মটর, চেইন বা বেল্টের প্রয়োজন হয়না।

. আর আপনি কি শুনেন নাই.... একটি বিড়াল ভুমিকম্পের পুর্বে তার মালিককে রক্ষা করেছিল...? আপনাদের বিজ্ঞান এখনো ভুমিকম্পের ১০০% সত্য পুর্বাভাস দেয়ার যন্ত্র আবিস্কার করতে পারে নাই। অতএব ... আমরা কি নিয়ে অহন্কার করব? সামান্য একটা বিড়াল যে জ্ঞানের অধিকারী আমরা তো এখনো সেই জ্ঞানটুও অর্জন করতে পারি নাই!! সেই ছাত্রটি বলে ছিল.... ঠিক আছে- আপনার বক্তব্য দিতে পারেন। ঘটনাটি একজনের মুখ থেকে শোনা। সত্য মিথ্যা জানিনা। যদি ধরে নেই মিথ্যা.... তবু কথা থেকে যায় ... বর্নিত বিষয়ে কি কারো কোন আপত্তি থাকতে পারে? বিষয়ের যুক্তির মধ্যে কি কারো কোন আপত্তি থাকতে পারে? আজকে এই পৃথিবীর অন্য ধর্মাবলম্বীরা যদি ইসলাম এবং কোরআন না মানে তবু পবিত্র কোরআনের একটি কথাকে তাদের মানতেই হয়- যা হলো: কুল্লু নাফসিন যয়িকাতুল মাউত” অর্থাত- প্রত্যেক জীবনকেই মরনের স্বাধ ভোগ করতে হবে।

আর এই প্রত্যেক জীবনের মধ্যে সৃষ্টির শ্রেষ্ট বা জমিনের প্রতিনিধি হলো: মানুষ। আর এই প্রতিনিধির কাজ কি? এই প্রসঙ্গে একটি উদাহরন: পৃথিবীর ভাষায় রাষ্ট্রদুতগণ হলো প্রত্যেক দেশের প্রতিনিধি। আর রাষ্ট্র দূতের দায়িত্ব হলো: . যেই দেশে তাকে রাষ্ট্রদূত হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে সেই দেশে নিজ দেশের স্বার্থ সংরক্ষনে সচেষ্ঠ থাকা। . আর নির্দিষ্ট সময়ে নিজ দেশের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা। . আর নিজ দেশের ভাল দিকগুলো এই অবস্থানকারী দেশে তুলে ধরা।

আরো অনেক .. এই তিনটি দায়িত্ব পালন না করলে যেমন রাষ্ট্রদূত বা প্রতিনিধির চাকুরী থাকবে না। অপরদিকে তার উপর নানা রকম পানিসমেন্ট আসতে পারে। ঠিক তেমনি জমিনের প্রতিনিধি হিসাবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে স্রষ্টার স্বার্থ সংরক্ষনে সচেষ্ট থাকা, স্রষ্টার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা। আর স্রষ্টার বড়ত্বের গুনগান প্রচার করা, বা স্রষ্টার নির্দেশিত পথে চলা। আর এই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমটি হচ্ছে- তার সাথে কথা বলা।

এই কথা বলা প্রসংগে একটি হাদিস রাসুল (স বলেন: নামাজ হচ্ছে মুমিনের জন্য মেরাজ সরূপ। আর যেহেতু নামাজে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়-আর পবিত্র কোরআন হচ্ছে মহান আল্লাহর বানী বা কথা। সেহেতু আধুনিক বিজ্ঞানের একটি আবিস্কার হলো টেলিপ্যাথি: আর এই টেলিপ্যোথির সূত্র অনুসারে যার সম্পর্কে কথা হচ্ছে তিনি দুরে থাকলেও তার অবচেতন মন সেটা বুঝতে পারেন। মহান আল্লাহ্ নিজেই বলেছেন: যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করিল সে যেন আমার সাথেই কথা বলিল। একজন মানুষের যে কোন আবিস্কারক যেমন তার পরিচালনার ক্যাটালগ তৈরি করেন: যেমন মোটর গাড়ি: তিনি যেমন সেই গাড়িটির পরিচালন ক্যাটালগ তৈরি করে দিয়ে দেন।

এখন গাড়িটি কিনে এনে যদি আমি বলি... সেটাকে আমি আমার ইচ্ছামত পরিচালনা করব- সেইমতে আমি যদি সেই গাড়িতে পেট্রোলের জায়গায় পানি- আর পানির জায়গায় ভরি... ওয়েল- তাহলে সেই গাড়িটির যেমন ভবিষ্যত খারাপ। তেমনি মহান আল্লাহর সৃস্টি মানুষ তার নির্দেশিত ক্যাটালগ ব্যতিত আমাদের মনগড়া ক্যাটালগে চালালে এই মানুষের ভবিষ্যতটিও খারাপ। আর যাহারা নিজেকে স্রষ্টা বিহীন সৃষ্টি বলিয়া দাবী করেন: তাদের জন্য একটি কথা - জাপানের টয়োটা কোম্পানীর একটি গাড়ী কিনে এনে যদি তার সমস্ত লেবেল মুছে দেই অর্থাত সেটা বুঝতে না পারা যায় যে- সেটা কোন কোম্পানীর তৈরি ? এরূপ লেবেল মুছে দেওয়া একটি গাড়ী এবং একই কোম্পানীর লেবেল লাগানো ১টি গাড়ী পাশাপাশি রাখা হয়- তাহলে কোন গাড়িটার মুল্য বেশী হবে? অবশ্যই লেবেল ওয়ালা গাড়িটি। অতএব নিজেকে নিয়ে সহজভাবে চিন্তা করলে তার জবাব পাওয়া যাবে যে এই বিশ্ব জগত, চন্দ্র সুর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, সবকিছু্ যিনি সৃষ্টি করেছেন- আমাকেও তিনিই সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীর নিয়মে এই লেবেল ওয়ালা মানুষটির মূল্য বেশী- নাকি স্রষ্টা বিহীন বা লেবেল বিহীন মানুষটির মূল্য বেশী।

বিষয়টি চিন্তা করবার বিষয়... বিতর্কের বিষয় নয়। অতএব ?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.