আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঙ্গালীর বাদশাহী বরাত!



রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার নামবে, তাই বৃক্ষনিধন যজ্ঞ —দৈনিক কালের কণ্ঠ আগে জানতাম বাঙ্গালীরা বেশ অবহেলিত। নির্যাতিত। কিন্তু এখন আর সেটা মনে হচ্ছে না। সব দেখে, শুনে, বুঝে মনে হচ্ছে বাঙ্গালীরা বাদশাহী বরাত নিয়ে জন্মেছেন। কিংবা না জন্মালেও পরে বাদশাহী বরাত দখল করেছেন।

গত শনিবার ঢাকায় আর্ন্তজাতিক জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত দুই দিন ব্যাপি সম্মেলন উদযাপনের যখন প্রস্তুতি চলছে। ঠিক তার আগের দিনই বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে চলছিলো অবাধে বৃক্ষ নিধন অভিযান। আর যাই হোক এটাতো একটা অভিযান, তাই এই বিষয়টাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। এই বৃক্ষ নিধন অভিযান কিন্তু এমনি এমনি হয়নি। এক বাঙ্গালী সেখানে যাবেন মহামূল্যবান কথা বলার জন্য তাই এ বাদশাহী আয়োজন।

আর সেই বাঙ্গালী যদি হয় পুরো দেশের প্রধান প্রতিনিধি তাহলে তো কোনো কথাই নেই। তাঁর সম্মানে তো পুরো বন নিধন করে দেওয়া যেতে পারে। না হলে তো পুরোপুরি সম্মান দেখানো হয় না। বাঙ্গালীর আবার সম্মান অনেক বেশি কি না তাই। এবারে আসল কথায় আসি।

সেই বাঙ্গালীর প্রতিনিধি হলেন আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি। তাঁর হেলিকপ্টার নামবে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর কলেজের মাঠে। তাই বেশ ঘটা করেই সেই কলেজের বিশাল বিশাল গাছ গুলো কেটে ফেলা হলো। তিল তিল করে কলেজের মাঠে বেড়ে ওঠা গাছ গুলো ৫০-৬০ জন শ্রমিকের কাটতে একদিনও লাগে নি। অতপর সেই গাছ কাটা মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নেমে এলেন সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিনিধি।

সভা তো শেষ। এখন কী হবে সেই মাঠটির। গাছ গুলো কী এখন তাঁরা পয়সা দিয়ে লাগিয়ে দিতে পারবেন? আর গাছেরই বা দরকারটি কী? কুলিয়ারচরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তো বলেই দিয়েছেন, ‘গাছের চেয়ে মানুষের জীবনের মুল্য অনেক বেশি। ’ আমাদের প্রশ্ন হলো একজন রাষ্ট্রনায়ক তিনি কী করে সম্মতি দিলেন এই গাছ গুলো কাটার? তিনি তাঁর জীবন দিয়ে কী আজই একটি ও রকম গাছ তৈরি করতে পারবেন? তবে আমরা নিশ্চিত সেখানে যে গাছ কাটা হয়েছে রাস্ট্রপতি তা আগে হোক আর পরে হোক খুব ভালো করেই অবগত। তাহলে তো এর কোনো বিচার নেই তাই না? নিজের আবার বিচার কী? অথচ সেদিনই ঢাকায় শুরু হয়েছে দুই দিন ব্যাপি আর্ন্তজাতিক জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সম্মেলন।

তাহলে এসব লোক দেখানো সম্মেলন করে টাকা খরচ করে কী লাভ! শুধু শুধু জনগনের চোখে ধোয়া দিয়ে কী লাভ! জনগণ কী সরকারের সঙ্গে লড়াই করে পারবে না কি? এ থেকে বোঝা যায়, আমাদের সরকারের ব্যুদ্ধঙ্ক একেবারেই শুন্যের কোঠায়। থাক এসব কথা। মজার বিষয় হলো— আজই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ গাছ কাটলে তার শাস্তি অবধারিত। তা যে কেউ হোন না কেন। আর আমাদের সবাইকে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগাতে হবে।

এ কথা শুনে মনে হলো একটি দম ফাটানো হাসির কৌতুক শুনলাম। তবে যদি রাষ্ট্রপতির সম্বর্ধনা উপলক্ষে যে গাছ গুলো কাটা হয়েছে, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের যদি সরকার বিচার কিংবা শাস্তি দিতে পারে তাহলে আমরা মনে করবো তিনি যুক্তিযুক্ত কথা বলেছেন। আর যদি তা না হয়, তাহলে দোহাই এভাবে সিরিয়াস বিষয় নিয়ে হাস্যকর কথার অবতারনা না করাই ভালো। কারণ, এধরণের দম ফাটানো হাসির শ্লীল এবং রগরগা অনেক কৌতুকই জনগণের জানা আছে। যা মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করে না।

ছবি কালের কন্ঠ থেকে নেয়া void(1);

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।