আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নদীর নাম সুরমা - ২ ( দ্বিতীয় পর্ব )



পর্যটকের দৃষ্টিতে সুরমা নদী পূর্বে কোনো দূরবর্তী স্থানে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল ঘোড়া নয়তো নৌকা বা জাহাজ। বাংলার ভূ-প্রকৃতি নদীকেন্দ্রিক হওয়ায় দূরবর্তী স্থানে মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল নৌকা। সময়ের ধারায় বিভিন্ন কারণে মানুষ নৌকায় করে সিলেট এসেছে। কেউ এসেছেন ধর্মপ্রচারে, কেউ এসেছেন শাসন করতে, আবার কেউ এসেছেন সুরমার দু-পাড়ের প্রকৃতির অপরূপ শ্রী দর্শন করতে। তাই বিভিন্ন জনের লেখায় সুরমা ও তার দু-পাশের জনগণের জীবনযাত্রার চালচিত্রের আভাস পাওয়া যায়।

বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা হযরত শাহ্জালালের সাথে সাক্ষাতের পর (১৩০৪-৬৯) সুরমা নদী ধরেই সোনারগাঁ গিয়েছিলেন। ইবনে বতুতা তাঁর লেখায় সুরমার দু-পাশের শস্যশ্যামল কোলাহলমুখরিত জনপদের বর্ণনা করেছেন। তিনি সুরমা নদীকে “নহর-উল-আজরক বা নীল চক্ষু বিশিষ্ট নদী” বলে আখ্যায়িত করেন। (সি. ই. ঐ-৭) মি. লিন্ডসে ১৭৭৮ সালে সিলেটের রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। লিন্ডসে তাঁর আত্মজীবনীতে বলেছেন, ‘‘ঢাকা থেকে নৌকায় যাত্রা করে ২০ মাইল দূরবর্তী ফিরিঙ্গিবাজারে পৌঁছি।

সেখান থেকে মেঘনা উজিয়ে সিলেট যাই। নৌকা শত মাইল বিস্তৃত এক হ্রদে পতিত হয়। দিক নির্ণয়ের জন্য আমাদের সামুদ্রিক কম্পাস ব্যবহার করতে হয়। নৌকা সবুজ ধানক্ষেতের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয় -- গাছগুলি সরে সরে নৌকার পথ করে দেয়। সে এক মনোরম দৃশ্য! ধানক্ষেত থেকে অগণিত পতঙ্গের উৎপাত খুবই বিরক্তিকর ছিল।

দীপ জ্বালালে এদের উপদ্রব বৃদ্ধি পেত। যাত্রার সপ্তম দিবসে প্রায় চল্লিশ মাইল দূরবর্তী উচ্চ পাহাড়শ্রেণী দৃষ্টিগোচর হয়। নৌকা সুরমা নদী দিয়ে চলিতেছিল। পাহাড়ের রজত-ধবল জলপ্রপাত এক অপরূপ দৃশ্য। সিলেট থেকে ত্রিশ মাইল দূরে (ছাতকে) সিলেটের আমলাগণ সুসজ্জিত তরণী যোগে আমাকে অভ্যর্থনা জানায় ও আমার বাসস্থান পর্যন্ত অনুসরণ করে।

” (ফজলুর রহমান, সিলেটের মাটি সিলেটের মানুষ, পৃ. ৯৬) বিপিনচন্দ্র পাল উচ্চশিক্ষার জন্য কোলকাতা গিয়েছিলেন সুরমা নদী দিয়ে স্টিমারে চড়ে। তাঁর আত্মজীবনীতে সুরমার দু-ধারের সরল-সোজা মানুষগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে, “যখনই কোনো জনপদের খুব কাছ দিয়া নৌকা যাইত তখনই গোটা গ্রাম বিশেষত নারী ও শিশুরা সদলে আসিয়া স্টিমারকে ‘পূজা’ দিয়ে যেত। মেয়েরা উলুধ্বনি করিয়া এই স্বয়ংক্রিয় নৌকা নারায়ণকে সাষ্ঠাঙ্গে প্রণাম করিত। ” (বিপিনচন্দ্র পাল, আমার জীবন ও সময়কাল, প্রথমপর্ব) কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদার্পণে সিলেটবাসী ধন্য ও গর্বিত। গুরুদেবও সুরমা পার হয়েছিলেন নৌকায় করে।

তাঁকে স্বাগত জানাতে সুরমার দু-পাড়ে একত্রিত হয়েছিল বিশাল জনতা। সিলেটবাসী গুরুদেবকে গ্রহণ করেছিলেন আনন্দচিত্তে। আয়োজনও ছিল বিপুল। শ্রী বীরেন্দ্র চন্দ্রের লেখায় এর বর্ণনা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। “সুরমা নদীর ঘাটে ছিল সারবোট ও বজরা।

কবি উঠলেন বোটে আর তাঁর পুত্রবধুসহ প্রভৃতি উঠলেন বজরাতে। বোট সুরমার জলে নামল। নদীর উত্তর তীরে সমবেত বিপুল জনসংঘের কণ্ঠনিঃসৃত ‘বন্দে মাতরম’, ‘রবীন্দ্রনাথ কী জয়’, ‘আল্লাহো আকবার’ ইত্যাদি ধ্বনিতে কানে তালা লাগার উপক্রম হলো। ধীরে ধীরে বজরা এসে চাঁদনীঘাটে লাগল। চাঁদনীঘাট পত্রপুষ্প-পতাকা-মঙ্গলঘটে সুসজ্জিত।

ঘাটের সবগুলি সিঁড়ি লালসালুতে মোড়া। (শ্রী বীরেন্দ চন্দ্র্র নারায়ণ সিং, শ্রীহট্টে রবীন্দ্রনাথ, কবি প্রণাম, শ্রীহট্ট, ১৯৮১) সুরমাপাড়ের লোকসংস্কৃতি সুপ্রাচীনকাল থেকে সুরমাপাড়ের জনপদে পল্লীগান, জারি, সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, মারফতি, মুর্শিদি, যাত্রা, রাজার গীত, ঘাটু, মালজোড়া, ধামাইল, বিয়ের গান প্রভৃতিতে সমৃদ্ধ হয়ে আছে। ঘাটু গান : সুমরা উপত্যকায় ঘাটুগান বলে একপ্রকার লোকগান প্রচলিত রয়েছে। ষোড়শ শতাব্দীর প্রথমদিকে সিলেটের ভাটি অঞ্চল আজমিরিগঞ্জের জনৈক আচার্য ঘাটুগানের প্রর্বতন করেছিলেন। এই গানে বৈষ্ণব ধর্মের গুণকীর্তন করা হতো।

এতে কৃষ্ণের জন্য রাধার প্রেমের উন্মাদনা ফুটিয়ে তোলা হতো। পরবর্তীতে ঘাটুগান ধর্মনিরপেক্ষ আকার ধারণ করে মৌল বিষয় থেকে সরে যায়। ঘাটুদলে অল্প বয়সের কিশোরদের মেয়ে সাজিয়ে নাচগান করিয়ে আনন্দ পাবার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তা আরো পরিবর্তন হয়ে অপকৃতির দিকে ধাবিত হয় এবং ঘাটুগানের অতীত ঐতিহ্য থেকে পুরোটাই সরে আসে । অতীতে ঘাটুগানের দল নৌকায় করে ঘাটে ঘাটে গিয়ে তাদের পালা পরিবেশন করতো।

মণিপুরী নৃত্য : সুরমাপাড়ের সংস্কৃতিতে মণিপুরী নৃত্য একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেট এসে মণিপুরী নৃত্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং পরবর্তিতে তিনি শান্তিনিকেতনে এই নৃত্যের চর্চার প্রচলন করেন। এর জন্য তিনি মণিপুর রাজ্যে থেকে প্রশিক্ষক এনে শান্তিনিকেতনের ছ্ত্রাছাত্রীদের মণিপুরী নৃত্য শেখানোর ব্যবস্থা করেন। শান্তিনিকেতনে আজও সেই ধারার প্রচলন রয়েছে। শান্তিনিকেতনের সংগীত ভবনে মণিপুরী নৃত্য বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রিও দেয়া হয়।

হাসন রাজার গান মরমি কবি হাসন রাজা ছিলেন সুরমাপাড়ের মানুষ । হাসন রাজা বর্তমানে শুধু সিলেট সুনামগঞ্জের গর্ব নয়, তিনি সমগ্র বাঙালির গর্ব। হাসন রাজার হৃদয়-উদাস-করা গানের বাণী, বৈচিত্রে ও সুরমাধুর্যে দেশ-বিদেশের বাংলাভাষী প্রায় ২৫ কোটিরও বেশি মানুষের হৃদয়ের কাছের মানুষ। তার গানগুলোর ভাবের গভীরতা জীবন ও জগৎ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ও দর্শনের উৎকর্ষের জন্য তাঁর কালজয়ী পংক্তিমালা ঠাঁই করে নিয়েছে বিশ্বসাহিত্যে । রাধারমণ দত্তের গান সুরমাপাড়ের আরেকজন লোককবি রাধারমণ দত্ত, যাঁর অনেক গান আজও লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে।

গীতিকা ময়মনসিংহ গীতিকা নামে ড. দীনেশচন্দ্র সেন যে গীতিকা সংগ্রহ করেছেন, তার বেশিরভাগই সিলেটের ভাটি অঞ্চলের সম্পদ। (সিলেটের লোকমানস ও সংস্কৃতি, নুরুজ্জামান মনি, বৃ.সি.ই-পৃ. ২৯৪) পালাগানগুলি হলো -- চন্দ্রাবতী, কমলা, কঙ্ক ও লীলা, দেওয়ানা মদিনা, দস্যু কেনারাম, ভেলুয়া সুন্দরী প্রভৃতি। আঞ্চলিকতা, ভাষা, ও স্থানকাল বিবেচনায় বিশেষজ্ঞদের মতে দশটি পালার সাতটি পালাই সুরমাপাড়ের বলে চিহ্নিত । গজল, ক্বাসিদা সুরমাপাড়ের জনপদগুলোতে অসংখ্য ক্বাসিদা ও গজল রচিত হয়েছে। লোকসাহিত্য আকারে লোকমুখে এবং ইতস্তত বিক্ষিপ্ত আকারে এগুলি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।

এছাড়া এই অঞ্চলগুলোতে প্রচুর জারিগান রচিত হয়েছে । কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনা, মহানবীর প্রিয় দৌহিত্রদ্বয় ইমাম হাসান-হোসেন স্মরণে এক করুণ শোকগীতিই এ অঞ্চলে জারিগান নামে পরিচিত। সুরমাপাড়ের জারিগানের মতো উপমহাদেশের অন্য কোথাও এত জারিগানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। বারোমাসি সমাজের প্রচলিত প্রেম-বিরহ ও দুঃখ-দারিদ্র্যপীড়িত সংসারের করুণ কাহিনী নিয়ে বারোমাসি রচিত হয় । এটা এক ধরনের লোকগীতি।

বারোমাসের ঋতু বর্ণনার মধ্য দিয়ে নায়িকার দুঃখ-বিরহ বর্ণনার ছলে সংসারের করুণ অবস্থা বারোমাসির কাহিনীকাব্যে স্থান পেয়েছে । সুরমাপাড়ের উল্লেখযোগ্য বারোমাসি গীতিগুলো হলো--তনের বারোমাসি, মনের বারোমাসি, যাদুয়ার বারোমাসি, ধনের বারোমাসি, শনি কন্যা, কোকিলা, লীলাই, কালা, জোলেখা, কাঞ্চণ, সীতা, জালুয়া প্রভৃতি। ভট্টকবিতা বা ভট্টসংগীত বিভিন্ন ধরনের লৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা গানের মাধ্যমে ভাটের দল বর্ণনা করে । ভাট সংগীত রচয়িতাকে বলা হয় ভাটকবি। এই সংগীতে কাহিনী বর্ণনার ছলে মানুষের প্রেম-বিরহ ও দাম্পত্য জীবনের সুখকর বিষয়গুলো ফুটে ওঠে ।

মালসি সংগীত ধর্মীয় সংগীত হিসেবে মালসি সংগীত সুরমাপাড়ে পরিচিত । এই সংগীতের মাধ্যমে হিন্দু ধর্মের দেবদেবীর গুণকীর্তন করা হয়। ধামালি গীত কৌতুক, রঙ্গ-ব্যঙ্গ মিশ্র্রিত সমবেত নৃত্য সম্বলিত সংগীতই হলো ধামালি গীত বা ধামাইল গীত। পূজা-পার্বণে, বধুবরণ, বিয়ে, নবান্ন, অন্নপ্রাশন সহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে সুরমাপাড়ের জনপদে ধামালি গীত খুবই জনপ্রিয়। অনেক ধামালি গানের রচয়িতার পরিচয় পাওয়া যায় না।

যাদের পরিচয় পাওয়া যায় তাদের মধ্যে আম্বর আলী, নিতাই চন্দ্র, জয়ীন্দ্র, দূর্গাচরণ দাস, ওয়াতির, সুরেশ প্রমূখ উল্লেখযোগ্য। রাধারমণ দত্তের গানের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ধামাইল আঙ্গিকের ছাপ। সারিগান সারিবদ্ধ হয়ে সমবেতভাবে গান করা হয় বলে একে সারি গান বলা হয়। সুরমাপাড়ে এই ধরনের গান খুবই জনপ্রিয় । গায়করা সমবেত হয়ে লাইন বেঁধে সমান তালে অঙ্গ সঞ্চালন পূর্বক এ গান গেয়ে থাকে ।

নৌকা বাইচ, ধান কাটা, ছাদ পেটানো প্রভৃতি কাজে এই গান গাওয়া হয়। অবশ্য ছাদ-পেটানোর গান হিসেবে সারিগানের সদৃশ একটি আলাদা গানের ভাণ্ডার গড়ে উঠেছে। ভাটিয়ালী গান সিলেট অঞ্চলে ভাটিয়ালী গানের প্রচলন খুব বেশি। এই গান মূলত মাঝিমাল্লাদের গান । সুরমাপাড়ের অসংখ্য কবি ও গীতিকার এই গান রচনা করে গেছেন ।

এদের মধ্যে ফকির ফরমান আলী, ফকির উমেদ আলী, শীতালং শাহ্, আরকুম শাহ্, অধীন চৈতন্য, মিলন শাহ্, উল্লেখযোগ্য। বিয়ের গান প্রাচীনকাল থেকেই সুরমাপাড়ের জনপদগুলোতে বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভিন্ন ভিন্ন রসাত্মক গানের প্রচলন রয়েছে। বিয়ের গানের সাথে নাচও দেখা যায়। নৃত্য সহযোগে গীত ও শুধু গীতের এই অনুষ্ঠানগুলি সাধারণত মেয়েরাই আয়োজন করে । সুরমাপাড়ের বিয়ের গীত নিয়ে হেমাঙ্গ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘বাংলার প্রায় প্রত্যেক জেলাতে বিবাহ উপলক্ষে গান আছে।

কিন্তু শ্রীহট্টে কন্যা-দেখা, মঙ্গলাচরণ, পানখিলি, জলভরা অধিবাস, সোহাগমাগা, দধিমঙ্গল, বিবাহ ও কন্যা যাত্রা--প্রত্যেক পর্বে পর্বে এমন গানের লহরী বাংলাদেশের অন্য কোথাও আছে বলে জানি না ( লোক সংগীত সমীক্ষা : বাংলা ও আসাম, পৃ.১৮৭) পালাগান সুরমাপাড়ের জনপ্রিয় পালাগানগুলি হলো- তিলাই রাজা , চান্দ রাজা, কামদুলাই, মনিবিবি, রঙ্গমালা, ছুরতান বিবি, আলিপজান সুন্দরী, সোনামণি কন্যা, জমির সওদাগর প্রভৃতি। বাউল গান হযরত শাহ্জালাল ও তাঁর অনুসারীরা সিলেট আসার পর সুরমা উপত্যকায় সুফি ও বৈষ্ণবমতের সংমিশ্রণে বাউল স¤প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে। ফলে সুরমাপাড়ের জনপদগুলি বাউল স¤প্রদায়ের অনেক শক্তিশালী আস্তানা গড়ে উঠেছিল। বাউলগণ সমাজ ও ধর্মের বিধিবিধান ততটা মানে না বলে তাঁদের ‘বে-শরা ফকির’ বলে অভিহিত করা হয় কিন্তু সুরমাপাড়ের অধিকাংশ বাউলগণ শরিয়তপন্থী । ইসলাম ধর্মের বিধিবিধান অনুসরণ করেই অনেকটা ভাবের ঘোরে প্রকৃত বাউলপন্থী না হয়েও বাউল ভাবধারাতেই অনুপ্রাণিত হয়ে তারা গান রচনা করেছেন।

”(মোহাম্মদ আবুল বশর,সিলেটে বাংলা সাহিত্য চর্চা : প্রাচীন ও মধ্যযুগ) ( চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.