আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাংবাদিক ফতেহ ওসমানীর খুনীদের কী হবে

মুক্তস্বর

সিলেটের খ্যাত লেখক ও সাংবাদিক ফতেহ ওসমানীকে ওরা হত্যা করে ফেললো। ১৮ এপ্রিল '১০ রাত ১১টায় নগরীর বালুচর এলাকা থেকে বাসায় ফিরছিলেন, শাহী ঈদগাস্থ টিবি গেইট এলাকায় আসা মাত্র দুর্বৃত্তরা তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে দা ও ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা করে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মৃত ভেবে দুর্বৃত্তরা তাকে রাস্তায় ফেলে যায়। পরে এলাকাবাসী তাকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ওসমানীতে ভর্তির পর দুই দফা অস্ত্রোপাচার এবং ১০-১২ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরও তার অবস্থার অবনতি দেখা যায়। পরদিন তাকে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়। ২৮ এপ্রিল রাত ১১টায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সাংবাদিক ফতেহ ওসমানী দরগাহ মাদরাসা থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করেছিলেন।

প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বেশি দূর না এগিয়েই জ্ঞানের রাজ্যে প্রবেশ করেন তিনি। ’৮০ দশকের শুরুতে সাংবাদিকতা পেশায় আসেন। এরপর পেশাগত জীবনে তিনি দৈনিক সিলেটের ডাক, সিলেট বাণী, জালালাবাদ, যুগভেরী, কাজিরবাজার, সবুজ সিলেট, বার্তা সংস্থা ইউএনবি, এবং সর্বশেষ সাপ্তাহিক ২০০০-এ দতার সঙ্গে কাজ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, লেখক, ছড়াকার, ঔপন্যাসিক ও গবেষক। বছর চার বিলেতে ছিলেন।

প্রবাসী বাঙালিদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার লেখা চারটি বই বেরিয়েছিলো। এগুলো হলো, ‘লন্ডনের সুখ-দুখ’ (গবেষণা), ‘লন্ডন’ (উপন্যাস), ‘প্রবাসীদের দিনকাল’ ( কলাম ও ফিচার), ও ‘একুশের ছড়া’। আরো কয়েকটি বইয়ে হাত দিয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই দুর্বৃত্তরা তার প্রাণটি কেড়ে নিলো। লেখক-সাংবাদিকদেরকে ‘জাতির বিবেক’ বলি আমরা।

কিন্তু লেখক-সাংবাদিক যখন নির্যাতিত হন, আমাদের ‘বিবেক’ জাগে না। আমরা প্রতিবাদে রাজপথে ফেটে পড়িনা। দেশ, মাটি ও মানুষের জন্যে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে কলম ধরেন যে সৈনিক, সেই সৈনিক আক্রান্ত হলে রাষ্ট্র ও জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে তার পাশে দাঁড়ায় না। এটা সভ্য সমাজের জন্যে লজ্জা। একজন সাংবাদিককে হত্যা করেও যদি দুর্বৃত্তরা পার পেয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষকে হত্যা করতে তারা তোড়াই কেয়ার করবে।

কেননা, তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে। আমরা সাংবাদিক ফতেহ ওসমানী হত্যার প্রতিবাদ করতে সকলের প্রতি আহবান জানাই। এবং জাতির মেধাবী সন্তান লেখক-সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দাবি করছি। সরকার যদি লেখক- সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সত্যি আন্তরিক হয় তবে শিগগিরই ফতেহ ওসমানীর খুনিদের গ্রেফতার করবে_এ আশা আমরা করছি। আমরা সরকারের অন্তরিকতার প্রমাণ চাই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.