আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তোমার লাগি বন্ধু আমার প্রাণ যে কেমন করে!

আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

কিস্তি : ৭৪: আমার সময় যুগলবন্ধী হিসাবে এসেছিল মৌ ও রিমি। ওরা দুজনেই ভালো গান করে। আমি মৌ এর কণ্ঠে তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা এবং রিমির কণ্ঠে কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে গান দুটো পছন্দ করি।

ওদের প্রায় গাইতে বলতাম। এদের পরে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিল মিটি ও প্যাট্রিক ডি কস্তা। মিটিও ভালো গান করে। তবে শুরুর দিকে সে রকম গান করতে চাইতো না। পরে অবশ্য ঠিক হয়ে যায়।

আরেক যুগলবন্ধী ছিল লিপি ও সাদিয়া। ওরা গান করতো না ঠিকই, কিন্তু অন্যের গাওয়াটা এনজয় করতো। পুণম ও সাম্যকেওপাওয়া যেতো মাঝে মধ্যে। ওরা অন্যদের সাথে গলা মেলাতো। সাদিয়ার বান্ধবী সম্ভবত লুপু বা নুপু এবং লিপির বান্ধবী লামিয়াও আমাদের আড্ডায় যোগ দিতো।

লাভলী, যে নাটকের ভালো স্ক্রিপ্ট লিখতো সেও ছিল এই আড্ডায়। ওর সাথে আসতো আরজু। অনেক দিন পরেও দেখা সেদিন বারডেমের সামনে। এগিয়ে এসে জানতে চাইলো- ভাইয়া কেমন আছেন। খুব ভালো লাগলো।

ওদের প্রত্যেককে আমার খুবই পছন্দ ছিল। বিচ্ছিন্ন ভাবে ছিল শান্তা। পরে অবশ্য ও আসত না। কারণ ভিন্ন। বাবুর সাথে ওর প্রেম ছিল।

সেটি ভেঙ্গে গেলে ও আমাদের ত্যাগ করে! শান্তাও ভালো গান করতো। বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গী। সখি, ভালোবাসা কারে কয়...। ছেলেদের মধ্যে বাপ্পী, শামীম, ইমাম, মীর মামুন, জনি মং আমাদের সাথে থাকতো। মিটির একটি গান আমাদের সবারই প্রিয় হয়ে ওঠে।

এক জোনাকী... দুই জোনাকি ... তিন জোনাকি ওরে। এই গানের একটা প্রেক্ষাপট আছে। আমরা সবাই তখন সেন্টমার্টিনে। সন্ধ্যার দিকে সবাইকে নিয়ে বের হলাম বিচে। অবকাশ থেকে ছেড়াদ্বীপের দিকে হাঁটছি।

জোনাকির আলো জ্বলছে। আমরা অনেক দূর হেঁটে ফিরে আসার সময় নীরবতা। এর মধ্যে হঠাৎ মিটি গানটা ধরে... এক জোনাকী ... দুই জোনাকি... তিন জোনাকি ওরে... তোমার লাগি বন্ধু আমার মন যে কেমন করে। কীভাবে যেনো আমাদের সবার গানটি পছন্দ হয়ে গেলো। তবে মিটি পুরো গানটা জানতো না।

পরে এ গানটা ডাটস সঙ্গীতের মত হয়ে গেলো। আমরা সবাই কারণে অকারণে গানটি গাইতাম। সবচেয়ে বেশি গাইতাম আমি আর মীর মামুন। ঢাকায় আসার পর আমাদের দলগতভাবে সদস্য হওয়া পাবলিক অ্যাডের ৫ তরুণীরা একজন সুফলা এ গানটির পুরোটায় গেয়ে শোনায়। সেখান থেকে মুখস্থ করে আমরা পুরো গানটি গাইতে পারতাম।

সম্ভবত আমি এই একটি গানই পুরো গাইতে (!) পারি। এটি গাইতে গাইতে আমরা সবাইকে বিরক্ত করে ফেললাম। মিটির কণ্ঠে আমার আরেকটি গান প্রিয়...ও মুরশিদ ও। হাছন রাজার গান। অসাধারণ করে ও।

সুফলাদের গ্রুপে অনেকেই ছিল। তার মধ্যে জিসান, ফারাহ-’র নাম মনে আসছে। বাকি দুজনের নাম এখন মনে পড়ছে না। ওদের সমস্যা ছিল ওরা ঢাকার বাইরের ট্যুরে যেতে পারতো না । বেচারাদের জন্য এ জন্য আমাদের বহু দু:খ ছিল।

বাসা থেকে তাদের পারমিশন হলো সকালে বের হবে, সন্ধ্যার আগে আগে বাসায় ঢুকে যাবে। মজার ব্যাপার হলো ওরা ৫ বান্ধবীর সবাই প্রথম শ্রেণীতে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেছে । খুবই মেধাবী। হাসতো প্রচুর। আমি নিজেও প্রচণ্ড হাসতে পারি! তাই আমরা মাঝে মধ্যে হাসির আয়োজন করতাম।

লাফিং ক্লাব খোলাও একটা পরিকল্পনা সে সময় হয়েছিল। পরে সেটি আর বেশি দূর এগোয়নি। আমরা এক জোনাকী গানের ভেতর একটা শব্দ চেঞ্জ করে সুফলার নামটা যুক্ত করে গাইতাম। আসলে মজা করা আর কি। ওই লাইনটা হলো এক ফসলা, দুই ফসলা.. তিন ফসলা ... সেখানে মাঝখানে আমরা বলতাম দুই সুফলা।

ব্যাপারটা সুফলা খুবই এনজয় করতো। ওদের সাথে এখন আর যোগাযোগ হয় না । নাম্বারও হারিয়েছি। ওরাও বিয়ে শাদী ও চাকুরী নিয়ে ব্যস্ত। একজন দেশের বাইরে, সম্ভবত জাপানে।

যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিল! তবে এর মধ্যে বছর কয়েক আগে জিসানের সাথে কক্সবাজারে দেখা। বিয়ের পরে বেড়াতে গেছে। আমি একটা ট্যুর নিয়ে নিয়ে গেছি। হিমছড়ি পাহাড়ের সামনে বসে আছি। হঠাৎ দেখলাম জিসানকে।

জোরে ডাকলাম। ওর স্বামী মনে হয় অবাক হলো। পরে আলাপ হয়েছে। জানালো সেন্টমার্টিন যেতে চায় কিন্তু টিকিট ও পরিবহন সমস্যা। আমি আমার গ্রুপের সাথে ওদের পাঠিয়ে দিলাম সেন্টমার্টিন।

তারপরেও যোগাযোগ ছিল। ডাটসের সদস্য নির্বাচনটা আমরা খুব এনজয় করতাম। সদস্য নেয়ার জন্য পোস্টারের শব্দমালাও বদলেছিলাম। আগের ফরমেট থেকে কেবল স্লোগানটা (পর্যটন শিল্পের জন্য চাই সামাজিক আন্দোলন) নেয়া। বাকিটা চেঞ্জ।

ফটোগ্রাফি, ফিচার রাইটিংয়ের মত কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করলাম। এটি এখনো আছে। তবে এখন আর কোর্সগুলো করানো হয় না। কেবল পোস্টারে উল্লেখ থাকে। আমার সময় করানো ফটোগ্রাফি ও ফিচার রিপোর্টিং কোর্স নিয়ে এক পর্ব লিখবো পরে।

বলছিলাম সদস্য নির্বাচনের কথা। আমরা যখন সদস্য হই, সে সময় অনেক কড়া কড়া প্রশ্ন করা হতো। দল বেঁধে আসলে সেখান থেকে দু একজনকে বাদ দেয়া হতো। আমি এর বিপরীতটা করলাম। ।

দলবেঁধে আসলে তাদের বেশি প্রায়েরিটি দিতাম। যারা গান বাজনা কবিতা করতো তাদের আরো বেশি এগিয়ে রাখতাম। তাছাড়া দিনে অন্তত শ দুয়েক সাক্ষাৎকার নিতে হতো, তাই সবার সাথে গল্প করেই বুঝে নেয়ার চেষ্টা করতাম, তার আগ্রহ কতখানি। আগে পলিটিক্যাল ছেলেদের ব্যাপারে ভয় ছিল। আমি সেটাকে গোনায় ধরলাম না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.