আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এইচআইভি ও এইডস পরীক্ষা করা সবার উচিত



এইডস থেকে বাঁচতে হলে সকলে এইচআইভি পরীক্ষা করুন আজমাল হোসেন মামুন সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘লোকলজ্জায় এইচআইভি পরীক্ষা করাতে চান না অনেকেই’ শিরোনামে একটি গুরম্নত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদটি পড়ার পর মনে হয়েছে এইডস আমাদের তেড়ে আসছে। বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ ভাইরাস হচ্ছে এইচআইভি ভাইরাস। যা শরীরে প্রবেশ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আক্রমন করে এবং তা একেবারে নষ্ট করে দেয়। অথচ এইডস বিষয়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা নেই বললেই চলে।

বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, আমাদের দেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইচআইভি আক্রামত্ম ব্যক্তি সনাক্ত করা হয়। এরপর থেকে এই ভাইরাসে আক্রামত্ম ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন থেকে সকলে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে মহামারির আকার ধরতে পারে। কারণ, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এইচআইভিতে আক্রামত্ম। বাংলাদেশের অনেক মানুষ ভারতে বৈধ ও অবৈধ পথে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য যাতায়াত করে থাকে।

সেখানে যৌন চাহিদা অনেক সময় পূরণ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে এইচআইভি জীবানু প্রবেশ করার পর অনেকদিন পর্যমত্ম কোন লক্ষণ বা সমস্যা দেখা যায় না। এটা শরীরে প্রবেশ করার কত দিন পর লক্ষণ দেখা দেয় তার নির্দিষ্ট কোন সময় সীমা নেই। মানুষ ভেদে এটা ৫ থেকে ১৫ বছরও হতে পারে। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, এ ঘাতক ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে নিসত্মার নেই।

একসময় না একসময় আক্রামত্ম ব্যক্তির লক্ষণ দেখা দিবে। গবেষণায় দেখা গেছে, এইচআইভি ভাইরাস ঝুঁকিতে রয়েছে, সূঁচ বা সিরিঞ্জের মাধ্যমে নেশাগ্রহণকারী, যৌনকর্মী, বহুগামী পুরম্নষ ও নারী, সমকামী নারী ও পুরম্নষ, যৌনরোগে আক্রামত্ম ব্যক্তি, যৌনকর্মীদের সাথে নিয়মবহির্ভূত অবাধ মেলামেশা ও পথশিশু। বাংলাদেশে ১ হাজার ৭৪৫ জন এইচআইভ আক্রামত্ম ব্যক্তি রয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ২ শতাধিক। বাংলাদেশের অধিক বেকার সমস্যা।

দিন দিন লক্ষণ বেকারের সংখ্যা একদিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে অনেক প্রবাসী বাঙালিরা যেখানে যৌন কাজে লিপ্ত থাকে। যখন তারা দেশে ফিরে স্ত্রীর সাথে মেলামেশা করে তখন মহিলারা বেশি আক্রামত্ম হয়ে থাকে। স্বামীর কারণে স্ত্রীকে অকালে প্রাণ হারাতে হচ্ছে। সম্প্রতি এইচআইভ/এইডস নিয়ে কর্মরত একটি বেসরকারি সংস্থা এসোসিয়েটস ইন ট্রেনিং এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন (অ্যাইটাম) এ কর্মরত ডা. ফওজিয়া ‘কর্তৃক পরিচালিত Training and Trainer (TOT) for Mainstreaming HIV/AIDS পাঁচ দিন ব্যাপী একটি ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছিলো আমার।

ট্রেনিং এ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বলা হয়েছে যে, এইচআইভি আক্রামত্ম ব্যক্তির লক্ষণ ঘন ঘন ছেড়ে ছেড়ে জ্বর আসা, ৬ মাসের মধ্যে ১০ ভাগ ওজন কমে যাওয়া, ঘন ঘন ডায়রিয়া হওয়া এবং তা ওষুধ সেবনের পরও না কমা, জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হওয়া, স্মৃতি বিলোপ হওয়া বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। আসা যাক বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে। আমাদের দেশে এইচআইভ/এইডস সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের পুরোপুরি ধারণা নেই বললেই চলে। ফলে আক্রামত্ম ব্যক্তি নিজেও জানে না যে সে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রামত্ম।

অনেকে পরীক্ষা করাতে চান না লোকলজ্জার ভয়ে। অথচ প্রতিটি জেলা হাসপাতালে বিনামূল্যে এইচআইভি পরীক্ষা করা যায়। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে বিভাগীয় শহরে রয়েছে। রাজধানী ঢাকা শহরে যে সব স্থান বা প্রতিষ্ঠানে এইচআইভি বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হয় তা হলো, ইন্সটিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ), মহাখালী, রোগতত্ত, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষনা ইন্সটিটিউট, মহাখালী, জাগরণী, ভাইরোলজী ও ল্যাবরেটরী ডিভিশন, আইসিডিডিআবি, মহাখালী, আর্মড ফোর্সেস প্যাথলজী ল্যাবরেটরী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, রেড ক্রিসেন্ট রক্তদান কেন্দ্র, ৭/৫, আরঙ্গজেব রোড, মোহাম্মদপুর, ভাইরোলজী বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখমুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, এবং ক্যাপ বাংলাদেশ, ৬৩/ডি, রোড-১৫, বনানী। আসুন আমরা এইচআইভি/এইডস থেকে বাঁচতে পরীক্ষা করি।

লজ্জার কারণে হয়ত: অকালে জীবন হারাতে হতে পারে আমাদের। বিষয়টির প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। লেখক- আজমাল হোসেন মামুন () উন্নয়নকর্মী ও সাংবাদিক, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি (বিপিকেএস) বিপিকেএস কমপে¬ক্স, দক্ষিণখান, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। মোবাইল নং-০১১৯১০৮৯০৭৫ (প্রয়োজনে মিস কল)।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.