আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শামীম ভাইকে চিঠি (২)

জীবন স্বপ্ন মানুষ ও আগামীর প্রত্যাশা

শামীম ভাই, এভাবে আপনার চলে যাবার কথা ছিলো না। আমি যখন পড়াশোনার জন্য দেশে বাইরে আসি, আপনার সঙ্গে দেখা হয় নি। কথা হয়েছে। আধুনিকতার এই সুবিধাটুতুর কারণে অন্তত স্মৃতিতে রাখবার মতো এটুকুই সম্পদ। মাঝে মধ্যে ভুল করে আপনার নাম্বারে ডায়াল করি... অপর প্রান্ত থেকে যখন... তখন মনে হয় আপনি নেই।

অনেকটা নিরাশ হয়ে রেখে দিই। আপনিতো আমার গল্পের শ্রোতা ছিলেন। মনোযোগী শ্রোতা, এখন তো কেউ রইল না গল্প শুনার মতো। খুব যখন কষ্ট হতো, দুঃখ দুঃখ লাগত, আপনার কাছে ছুটে যেতাম। আপনি দেখেই বলতেন : এই বস আসছে,..।

তিনি আমাকে তাই বলে ডাকতেন। তাপরপর একটা হাসি। উজাড় করা হাসি। আমরা কী এই হাসিটা হাসতে পারি? এ হাসিতে কোনো জগত সংসারের ক্ষ্রদতা ছিলো না। স্বার্থপরতা, কপটতা সবকিছু মাড়িয়ে নির্মল এই হাসি আর কি কখনো শুনতে পাব? হয়তো না।

আসছে সেপ্টেম্বর আমাদের দাজিলিং বেড়াতে যাবার কথা ছিলো। তিনি ভ্রমণে খুব আনন্দ পান। গত শীতে গযা সমুদ্রসৈকত, কন্যাকুমরাী আরো কতো জায়গা গুরে এসেছেন। বন্ধুদের সঙ্গে। আমি সেবার একটু অভিমান করেছিলাম।

তিনি হেসে বললেন, : ঠিক আছে, আপনি ইউরোপ থেকে ঘুরে আসেন, আমরা দাজিলিং বেড়াতে যাব। তিনি বেড়াতে গিয়েছেন, সেখান থেকে আর ফিরে আসবেন না। ফিরে না আসতে আসতে এক সময় তার ফেরার কথা আমরা কেউ ভাবব না। দার্জিলিং এর পাহাড় থেকে নীচের ভূমি থাকার স্বপ্ন জাগবে না। দিগন্ত ছোঁয়া পাহাড়ের আকাশ থেকে সুবর্ণরেখা, সেখানে কোথায় কী তাকে দেখা যাবে না? হয়তো বা না।

বিবর্ণ আকাশ, যণ্ত্রণা মাখা নীলাভ দিগন্ত, অথবা আরো দূরের পথে, সঙ্গীহীন জীবনে ফিরে আসার কথা আর ভাবাই হবে না। দার্জিলিং কিংবা কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত, সুবলং পাহাড় কোনোকিছুই তাকে নিয়ে আর দেখা হবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।