আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার নষ্ট ক্যামেরার চোখ দিয়ে দেখা শেষ ক’টি ছবি, নষ্ট হওয়ার ইতিবৃত্ত, স্মৃতিবৃত্ত, সাবধানবানী

গণতন্ত্র হল এমন এক অস্তিত্বহীন মদ, যাতে সবাই মাতাল, কিন্তু কেউ কখনো পান করে নি।
আড়াই বছরের আমার ক্যানন পাওয়ারশট A450’র অপটিক দ্বিতীয়বারের মত নষ্ট হয়ে গেল। এটি এই ক্যামেরায় তোলা শেষ ভাল ছবি- রবীন্দ্র সরোবরে চে' গুয়েভারার স্মরণে কনসার্ট থেকে তোলা ছবি। দেরী করে গিয়েছিলাম তাই বেশি ছবি তুলতে পারি নি। একেবারে শেষ বিকেলে তোলা ছবি তাই হাত কেপে যাওয়ায় কিছুটা ব্লার হয়েছে।

প্রথমবার নষ্ট হয়েছিল কেনার দেড় বছরের মাথায়। নিয়ে গেলাম জেএএন এসোসিয়েটস-এ। সেবার লেন্স বদলাতে সাড়ে তিন হাজার টাকা লেগেছিল। তারা বলেছিল সাধারনত এমন হয় লেন্সের উপর রোদ বা কড়া আলো পড়লে। এই কথাটা ক্যামেরার ম্যানুয়ালে লিখা ছিল, কিন্তু সবসময় সাবধান থাকা যায় নি।

ক্যামেরার একটা বৈশিষ্ট হল আপনি এটার সাথে খারাপ ব্যাবহার করবেন, তবু এটা স্বভাবিক সার্ভিস দেবে। এবং হঠাৎ করে একদিন নষ্ট হয়ে যাবে, ধীরে ধীরে নষ্ট হবে না। যেমন প্রথমবার নষ্ট হবার আগের আর পরের ছবি দেখুন, কেউ বলতে পারবে ছবি দুটো একই ক্যামেরা দিয়ে মাত্র পনের মিনিটের মধ্যে তোলা হয়েছে? লেন্সের অপটিকের উপরের পর্দা সবসময় খুলে থাকত, ইমেজ ভিউ মুডে গেলও বন্ধ হতো না। ছবি উঠত ওভার ওভার এক্সপোজড। রোদ পড়ে নষ্ট হওয়ার উপসর্গ এটি।

জেএএন এসোসিয়েটস থেকে বলেছিল ক্যামেরার অপটিক হয় খুব সফট ও সেনসেটিভ। এই কথা শুনে এক বড় ভাই মজা করে বললেন, ‘এর পর পাথরের মত শক্ত অপটিক দেখে কিনবে’। কিছুদিন আগে গুলিস্তানে একটা স্টাইলিশ স্পোর্টস কার দেখে ভাবলাম একটা ছবি তুলি, কিন্তু একি! দিনে দুপুরে অন্ধকার! এবার দেখলাম পুরো উল্টো ঘটনা, অপটিকের পর্দা খুলে নি, আর তার উপরে ছোট্ট একটা কালো দাগ। আবার জেএএন এসোসিয়েটস, তারা দেখে ও এই লেন্সে তোলা ছবির সংখ্যা শুনে বললেন আমি নাকি এর লাইফটাইম ব্যবহার করে ফেলেছি! আমি গত এক বছরে এই লেন্সে তুলেছি চার হাজার ছবি। এই যদি লাইফ টাইম হয় তাহলে তার আগের লেন্সে আট হাজার ছবি তুললাম কিভাবে! ক্যামেরা যেহেতু ভাল সার্ভিস দিচ্ছিল তাই যে কেউ চাইলে ব্যবহার করতে দিতাম, একটু অসামাজিক লাগলেও এই কাজ না করাই উচিৎ।

বহু হাত ও আনাড়ি হাতের ব্যবহারে ক্যামেরা অজান্তে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জানালেন সারাতে দেড় হাজার টাকা লাগবে, যদি ভাল হয়, ভাল হওয়ার সম্ভবনা কম। আর লেন্স পাল্টাতে লাগবে চার হাজার। মূল ক্যামেরা বডি কিনেছিলাম দশ হাজার টাকা দিয়ে, এর আগে সাড়ে তিন হাজার আর এবার যদি চার হাজার টাকা খরচ করি তবে এর মূল্য কোথায় গিয়ে দাড়ায়। এখন আট হাজার টাকায় এর তিন ধাপ আপডেট মডেল কিনতে পাওয়া যায়, তাই ক্যামেরা তুমি ঘুমাও।

নতুন ক্যামেরা যে কিনব এখন আর আমার আয় নেই, বাড়ী থেকেও বরাদ্দ হবে না। অতএব অনির্দিষ্টকালের জন্য ছবি তোলা বন্ধ। স্মৃতিবৃত্ত: এই ছবিটি যায়যায়দিনের ফটোগ্রাফী পাতায় ছাপা হয়েছিল, তখন হাসান বিপুল এই পাতার দায়িত্বে ছিলেন। সিডর আহত পাখি। বাচানোর চেষ্টা করেছিলাম, পারি নি।

এখানে আমার তোলা কিছু ছবি আছে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.