বা
আমি যখন গ্রামের পথ ধরে হাটছি তখন প্রায় সন্ধ্যা।
পূবের মাঠ থেকে ঘরে ফেরা কৃষকের গো-খুড়ের আঘাতে
উড়ন্ত ধূলিকণা পশ্চিম আকাশকে লাল রঙে রাঙিয়েছে কেবল।
একটা সোঁদা মাটির গন্ধ এসে নাকে অদৃশ্য টোকা মারে।
মাটির গন্ধে উথাল পাথাল হয় মন। রক্তের মাঝে জেগে উঠে সৃষ্টির নেশা ।
নিকোটিনের মতো সেই নেশা খুজতে থাকে কবিতা ।
এই মাটিতে এসে একটা কবিতার রসদ না নিলে আমি অস্থির হতে থাকি।
পশ্চিম দিকটার খোলা মাঠে আয়োজন প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে,
মঞ্চ তৈরী, পেন্ডেল টানানো হয়েছে।
প্রতি বছর এখানে মারফতী আর বাউল গানের উৎসব চলে ।
গানে গানে মাতোয়ারা হই,
জীবনের আত্মজৈবনিক প্লাবনাশ্রুর ভিজা কাঁদায় লেপ্টে থাকি সারারাত।
চা ষ্টলে এসে থমকে দাঁড়ালাম। চারণ এই কবিকে ঘিরে যে বাউলের দল,
গান ছাড়া ওদের কোন ধ্যান-জ্ঞানের খবর আমি জানি না।
তাদেরকে কম্পমান দেখালো যেন বাঘের ভয়ে ভীত হরিণের পাল,
আক্রান্ত হরিণ চাহুনির মতো প্রতিবাদ মুখর কেউ কেউ !
গান কি অপরাধ? গান কি পাপ! আজন্ম সাধনা, পাপ!
বলো কবি তুমি যে ছন্দে দোল, সুর দেই, মাতাল উন্মাদনায় গেয়ে উঠি-
পাপ? হাজার বছরের সব সাধনা তবে এমনি অপবাদে হবে বিলীন?
একটা বিকট আওয়াজ। ছিন্নভিন্ন মানুষের দেহাংশ,
এবড়ো থেবড়ো এখানে সেখানে কাঁপছে ।
ছোপ ছোপ রক্ত।
দিগ্বিদিক ছুটাছুটি, কান্নার আহাজারি।
লাঠির আঘাতে আহত একজন যুবক। আর একটি, আর একটি।
পতন। এক, দুই, তিন অসংখ্য আঘাত।
রক্ত, নিথর দেহ।
কবিতার এইসব পটভুমি নিয়ে ভাসতে ভাসতে আমি কোথায় গিয়ে দাড়াব?
আমার কবিতার প্রতিটি অক্ষর ঝরাবে নাকি রক্তের এক একটি ফোঁটা?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।