আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সত্যটা অস্বীকার করা যায় না!!

পরিবর্তনে বিশ্বাসী

"সামনে নির্বাচন তোরা একটু সাবধানে থাকিস" একটি দলের গ্রাম পর্যায়ের নেতা বলল। আমি প্রথম ভোটার হয়েছি। খুব একটা অনুভুতি কাজ করছে আমার ভিতর। সে জন্য ৩ দিন আগে গ্রামে চলে যাই। সকালে ঘুম উঠে বুঝতে পারলাম যে গ্রামের বাতাসে নির্বাচনের হাওয়া বইছে।

ছোট ভাই বলে গেল বিকালে বাজারে যেতে মিটিং আছে। ঠিক আছে, তুই এখন কোথায় যাচ্ছিস? কেন মিছিল আছে নেত্রীত্ব দিতে হবে না? আচ্ছা ঠিক আছে যা তুই এখন। আব্বা আপনি কিছু বলেন না তাকে। বাবা বললেন কি বলব? বুঝবেন যখন কোন দিন বিপদে পরবেন। দোকানে চা খাওয়ার জন্য গেলাম গিয়ে প্রথম উক্তিটি শুনতে পাই।

বিকালে গেলাম বাজারের দিকে। দুর থেকে বুঝা গেলো যে কিছু একটা হচ্ছে। হঠাৎ হৈ চৈ শুনা যাচ্ছে । দৌড়ে গেলাম কি হল? গিয়ে দেখি একটা লোককে ধরা ধরি করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলাম কি হলো ভাই? আর বলেন না যে দলের আজ মিটিং ছিল সে দলের লোকেরা অন্য দলের লোকদের মারধর করেছে।

আর একটু এগিয়ে গিয়ে দেখি যে লোকটাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল সে মরে গেলো তা ও আমার সামনে। আমার খুব খারাপ লাগছিল। এ কি দেখলাম? লোকটা বড় বড় নিশ্বাস নিতে নিতে মরে গেল। রক্তে রাস্তাটা রক্তাত্ত হয়ে গেল। এ কোন রকম নির্বাচন? আমি ঘটনা শুরুতে থাকা এক লোককে জিজ্ঞাসা করলাম।

ভাই এমন কি হয়েছিল যে লোকটাকে মরতে হলো। লোকটা বলল কিছুই না। যখন মিছিল আসছিল অন্য দলের এ লোকটা রাস্তা হয়ে যাচ্ছিল। একটু নেতা টাইপের লোকতো। তাকে দেখেই ছেলে গুলো মারতে শুরু করলো।

বাকিটা তো আপনি দেখলে। হায়রে রাজনীতি সে কি জানতো রাজনীতির জন্য তাকে মরতে হবে তাও কোন অপরাধ ছাড়াই। এ কোন দেশে বাস করছি? আমার সোনার বাংলাকে কুলুশিত করছে কিছু লোক। যারা তাদের স্বার্থের জন্য দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে। নির্বাচনের দিনের আগের রাতে আমি হালকা নাস্তা করবো দোকানে গেলাম।

আমাদের গ্রামের এক দলের নেতা আমাকে বলল, কি খবর কেমন আছ? জি ভাল। আমাদের দিকে তাকায়ও। মানে ? না কিছুনা। একজন লোককে ডাকদিয়ে বলল, যা তাকে নিয়ে রাস্তা হয়ে ঘুরে আয়। আমি একটু চিন্তিত হলাম।

আমার ছোট ভাইয়ের সমান আমাকে কি বলবে? আমি গেলাম তার সাথে। রাস্তায় গিয়ে সে আমাকে বলল, ভাই ১০০০ টাকা রাখেন। কেন? আমি কি করবো এই টাকা দিয়ে? রাখেন ভাইয়া। অন্য সবাইকে ৫০০ টাকা করে দিয়েছি শুধু আপনাকে ১০০০ টাকা দিয়েছি। কারণ আপনি শহরে থাকেন তাই আপনার কাছে ৫০০ টাকা কিছুই না।

আমার রাগে খুব খারাপ লাগছিল। যা বেয়াদব বেশি কিছু বলার আগেই সে দৌড়ে চলে গেল। আমার নির্বাচনের প্রতি ঘৃনা সৃস্টি হল। ছি! এই বুঝি আমার নির্বাচনের অবস্থা। হিসেব করে দেখলাম রাজনৈতিক নেতাদের অনেক টাকা খরচ হয় এ খাতে ।

কোথায় থেকে আনে সে এসব টাকা। আমার ইচ্ছে করছিল এসব লোকদের জুতা দিয়ে পিটাই। যাক আমি আর চিন্তা করতে পারছিনা আমার দুঃখ হল আমি প্রথম ভোটার হলাম, মনে করেছি ভাল ভাবে ভোট দেবো এবং ভোটের রেজাল্ট শুনে আবার শহরে চলে যাবো কিন্তু অনেকগুলো ঘটনা দেখার পর আর থাকতে ইচ্ছে করছে না। খুব ঘৃনা হল এই ধরনের নিবার্চনের প্রতি। আমাদের দেশ কবে পরিবর্তন হবে? আমার দুঃখ করা ছাড়া আর কিছু করার থাকলো না।

তখন মনে হলো সিনেমাতে যে ধরনের ঘটনা ঘটে তা আমি বাস্তবে দেখলাম। সত্যি জীবনটা এখন আমাদের সিনেমা হয়ে গেছে। । এ জন্যই কি ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময় স্বাধীন হয়ে ছিল আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ? আমার খুব কাদঁতে ইচ্ছে করছিল। আমরা স্বাধীনতাতো পেলাম কিন্তু স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারলাম না।

আমাদের চিন্তা চেতনায় খারাপ চিন্তাটাই আগে আসে। কবে হতে থাকবে আমাদের পরিবর্তন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.