আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপির দৃষ্টি এখন জাতিসংঘের দিকে

নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে সমঝোতার জন্য বিএনপি এখন তাকিয়ে আছে জাতিসংঘের দিকে। সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে হলেও সরকারের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় দলটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে সমঝোতায় আসতে সরকারকে রাজি করাতে জাতিসংঘ যাতে একটা কার্যকর ভূমিকা নেয়, সে জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিএনপি মনে করছে, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল সরকারকে সমঝোতায় আসতে রাজি করাতে পারলে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের একটা উপায় বেরিয়ে আসবে।

তাই জাতিসংঘের চেষ্টা অব্যাহত থাকা অবস্থায় বিএনপি হরতাল-অবরোধ বা কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে যাবে না।
তবে বিএনপির অপর একাধিক সূত্র জানায়, গত সোমবার সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনকালীন সরকারের যে কাঠামো তুলে ধরেছেন, তাতে সরকার সমঝোতার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। তাই নতুন করে আন্দোলন কর্মসূচি প্রণয়নের কথাও বলছেন কোনো কোনো নেতা। তাঁদের মত হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের ‘শক্ত’ অবস্থান নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তবে জাতিসংঘের মহাসচিবের নেওয়া উদ্যোগের সফলতা বা ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করছে বিএনপির পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচি কী হবে।
সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র থেকে জানা গেছে, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রাজনৈতিক) অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর আবার বাংলাদেশ সফরে আসার কথা আছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সংকট উত্তোরণের উপায় নিয়ে কথা বলবেন। এ ছাড়া চলতি মাসের মাঝামাঝি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বসছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিত থাকার কথা।

প্রায় একই সময়ে বিএনপি থেকে দুজন প্রতিনিধিকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র দাবি করেছে, বান কি মুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলবেন বলে ইতিপূর্বে খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোন আলাপে বলেছেন। তারপর বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলবেন।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান হবে, এমনটা ধরে নিয়েই বিএনপি ‘নরম’ কর্মসূচি দিয়েছে। অক্টোবরের ২৫ তারিখ পর্যন্ত ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাত মহানগরে সাতটি ও একটি জেলায় খালেদা জিয়ার জনসভা।

এ ছাড়া আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলে দাবি আদায় করা বিএনপির পক্ষে আদৌ সম্ভব কি না, সেটা এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের অধিকাংশ নেতার মত হচ্ছে, মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার। তা না হলে কর্মীরা মনোবল হারাতে পারেন। আর এ সুযোগে সরকার বিএনপিকে গুরুত্ব না দিয়ে একদলীয় নির্বাচন করার পথে যেতে চাইবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেছেন, নির্বাচন পর্যন্ত জাতীয় সংসদ ও বর্তমান মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সমঝোতার আর কোনো পথ খোলা নেই।

তার পরও বিএনপি আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান চায়। কিন্তু সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো কথাই বলতে চায় না। তিনি মনে করেন, আলোচনা হলে দুই পক্ষেই ছাড় দেওয়ার বিষয়টিও আসতে পারে। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.