আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরনো এমপিদের চায় না আ. লীগের তৃণমূল

বুধবার গণভবনে সাত জেলার নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার মতবিনিময় সভায় এই অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে বৈঠক সূত্রে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছে।
ধারাবাহিক মতবিনিময় সভার প্রথম দিনে দিনাজপুর, জামালপুর, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, গাজীপুর ও ভোলা জেলা, উপজেলা, থানা এবং প্রথম শ্রেণির পৌরসভা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা অংশ নেন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আপনাদের মতামতের ভিত্তিতেই আমি মনোনয়ন দেব। ”
এই সাত জেলার তৃণমূল নেতাদের অধিকাংশই বলেছেন, দলীয় সাংসদরা কর্মীবিচ্ছিন্ন। গত সাড়ে চার বছরে কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি।

মন্ত্রী ও সাংসদরা নিজ এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বলয়ের মধ্যেই থেকেছেন। তারা এলাকায় খুব একটা যান না। গেলেও দলীয় কার্যালয়ে থাকেন না।
এই সাত জেলায় আওয়ামী লীগের সর্বমোট ২৬ জন সংসদ সদস্য এবং পাঁচজন মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।
এরা হলেন, জামালপুর-১ আসনের আবুল কালাম আজাদ (সংস্কৃতিমন্ত্রী), একই জেলার রেজাউল করিম হীরা (ভূমিমন্ত্রী), লালমনিরহাট-১ আসনের মোতাহার হোসেন (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা), দিনাজপুর-৫ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান (ভূমি প্রতিমন্ত্রী), গাজীপুর-৫ আসনের মেহের আফরোজ (মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী)।


এই  জেলায় ক্ষমতাসীন দলের মোট ২৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৬ জনই আওয়ামী লীগের। বাকি দুজনের একজন ভোলা-১ আসনে বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, লালমনিরহাট-৩ আসনে মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টির গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
জামালপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক কারো নাম উল্লেখ না করে তার এলাকার একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বলেন,  “আমাদের মন্ত্রীর এলাকায় যাতায়াত নেই। নেতাকর্মীরা তার নাগাল পায় না সহজে। ”
জয়পুরহাট জেলার সভাপতি শামসুল আলম দুদু প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনকে চাকরি না দেয়ার অভিযোগ করেন।


ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরার রাজনৈতিক দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে দাবি করেন তার এলাকার উপজেলা সভাপতি।
সাংসদরা নিজেদের প্রভাব রাখতে নির্বাচনী আসনে কোন্দলের সৃষ্টি করে রেখেছেন বলেও তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করেন। গাজীপুরের সাধারণ সম্পাদক আজমতউল্লা খান সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তার পরাজয়ের জন্যও কোন্দলকে কারণ দেখান।
ভোলা জেলার সদর উপজেলার নুরুল ইসলাম আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের পক্ষ নিয়ে আরেক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন।
তৃণমূল নেতারা দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বলেন, তিনি আরো সক্রিয় হলে দল গতিশীল হতো।

মন্ত্রী ও সাংসদদের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, “নেতায়-নেতায় ও নেতা-কর্মীদের দূরত্ব ও কোন্দল মিটিয়ে ফেলুন। ”
সভায় প্রতিটি সংসদীয় আসনের তৃণমূল নেতাদের তিনজন করে প্রার্থীর নাম সুপারিশ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে একশ’তে কাকে কত নম্বর দেবেন তা-ও লিখে দিতে বলেন।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর ১০টি প্রশ্ন সম্বলিত একটি ফরম তৃণমূল নেতাদের দেয়া হয়।  সংসদ সদস্য ও নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেখানেই লিখে দেয়া যাবে বলে শেখ হাসিনা জানান।


সভা চলার মধ্যেই সবাই এই ফরম পূরণ করে জমা দেন।
প্রশ্নগুলোর মধ্যে ছিল- প্রার্থীর যোগ্যতা, প্রার্থীর পারিবারিক পরিচয় ও ঐতিহ্য কী? কখন থেকে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও পরিবারের মধ্যে কোনো সদস্য অন্য কোনো দল করে কি না? প্রার্থীর নির্বাচন করার মতো আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে কি না? এর আগে নির্বাচন করেছে কি না? করলে ফলাফল কী? এলাকায় গ্রহণ যোগ্যতা, ব্যক্তি ইমেজ ও নেতাকর্মীদৈর সঙ্গে যোগাযোগ কেমন? খোঁজ খবর রাখে কি না? সাম্ভাব্য প্রর্থীদের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা, রাজনীতিক হিসাবে জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ, জনসাধারণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ছিল।
ফরমের ওপর ক্রমানুসারে সম্ভাব্য তিন প্রার্থীর নাম লিখতে হয়েছে। প্রতিটি প্রশ্নের পাশে তিনটি ঘর ছিল। সংশ্লিষ্ট প্রশ্নে কোন প্রার্থী ১০০ নম্বরের মধ্যে কত পেতে পারে, তাও লিখতে হয়েছে।


মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়নের কথা বলার পাশাপাশি যাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হবে তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।