আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্থায়ী নিবাস নয় তো গুলি করে হত্যা

সকল অন্ধকারের হোক অবসান

সকালে উঠে মনটা খারাপই হলো। পত্রিকায় এবারই বোধহয় প্রথমবারের মতো পার্বত্য অঞ্চলের ম্রো নেতা রাংলাই ম্রো-এর বিদ্রোহী হয়ে ওঠার মতো এক সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হলো। টিপু সুলতানের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ম্রো নেতা কেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন। কারণ কিছু নয় নিজ জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ হতে দিতে চাননি ৬০ হাজার পাহাড়ি-বাঙালী পরিবারকে। রাংলাই বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের দারুণ জনপ্রিয় নেতা।

তিনি তিন-তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত এবং লোকপ্রিয় চেয়ারম্যান হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃতও। ১৯৯০-৯১ সালে সেনাবাহিনী বান্দরবানের ঐ অঞ্চলে প্রায় সাড়ে এগারো হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে। ২০০৬ সালে জমির দখল নিতে এলে রাংলাই তাতে বাধা দেন। তাঁর দাবী ছিলো ২৭৫ টি পরিবার উচ্ছেদের আগে তাদের পুনর্বাসন করা হোক, ক্ষতিপূরণ দেয়া হোক। কারণ ঐ সাধারণ মানুষগুলো জুম চাষ ছাড়া আর কিছু করে না।

অতি দরিদ্র পাহাড়ি-বাঙালিরা তাহলে কোথায় যাবে, এটাই ছিলো ম্রো নেতার প্রশ্ন। ২০০৭ সালে যৌথবাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। এবং চলে নানা নির্যাতন। এক পর্যায়ে কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার জন্যও চাপ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েন নি।

শরীরে অমানুষিক নির্যাতনের ফলে তিনি ভর্তি হন হাসপাতালে। ততদিনে পারিবারিক স্বচ্ছলতা আর নেই। ওষুধ কেনার টাকা নেই। কাছের মানুষের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই। রাইফেলের বাটের আঘাতে বুকে জখম হয় তার।

সেখান থেকে নানা শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে, হাতে হাতকড়া পড়ে ঘুরতে হয় এই হাসপাতাল থেকে ঐ হাসপাতালে। শেষমেষ জামিন পান তিনি। তাও ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা হয়। সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের চাপে এ বছরের শুরুর দিকে ছাড়া পান তিনি। মাত্র আটত্রিশ বছরের জীবনে দুর্বিসহ এক স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

যিনি তার মানুষদের জন্য লড়াই করেছেন, আপোস করেননি। তাই তিনি এখনো দৃপ্ত কণ্ঠে সরকারকে বলেন, তাদের যেন স্থায়ী জায়গা দেয়া হয়। সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালিরা কোথায় যাবে। প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। নয় তো তাদের গুলি করে মেরে ফেলা হোক।

(দ্রষ্টব্য প্র.আ. সম্পাদকীয় পাতা, ২২/০২/০৯) রাংলাই আপনি এই মুহুর্তে স্বাধীন ও আপোসহীন নেতাদের প্রতিভূ হয়ে উঠেছেন। আপনার সংগ্রাম সার্থক হোক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.