আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ধর্মবিশ্বাস ...আমার বিশ্বাস...(শেষ পর্ব)

কি জানি কিসের ও লাগি প্রান করে হায় হায় ...

আমার ধর্মবিশ্বাস ...আমার বিশ্বাস (১) Click This Link আমার ধর্মবিশ্বাস ...আমার বিশ্বাস (২) Click This Link যাই হোক,আবার আমার বাবার প্রসঙ্গে ফিরে আসি। উনি অনেক আগে থেকেই ঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের ভক্ত ছিলেন, দীক্ষাও নিয়েছেন। উনি আর যাই করতেন দিনে একবার প্রেয়ার টা কখন ও বাদ দিতেন না। আমি যখন কলেজে পড়ি তখন উনি আমাদের তিন ভাইকেই দীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে বলেন। আমরা কেউ নিইনি।

এটা নিয়ে হয়ত উনার মনে কোন ক্ষোভ থাকতে পারে, কিন্তু প্রকাশ্যে কখন সেই ক্ষোভ এর প্রকাশ করেন নি। আমার যুক্তি ছিল ক্লিয়ার, আমি যা মনে প্রানে করতে পারব না, বিশ্বাস করতে পারি না, তা করা আমার জন্যে কঠিন। হয়ত করতে পারতাম, আর যদি কখনও তা করতাম তাহলে সেটা শুধু আমার বাবার জন্যেই করা হতো, ধর্মের প্রতি আগ্রহী হয়ে না। এই বয়সে এসে ধর্মের জিনিষগুলোকে কেমন জানি অবাস্তব মনে হয়। এই দেশের মানুষ এত ধর্ম পরায়ন, সারাদিনে বাংলাদেশের মানুষের থেকে যত প্রেয়ার ঈশ্বরের কাছে পৌছায় পশ্চিমা দেশ থেকেও তো এত পৌছায় না।

তাহলে বাংলাদেশের মানুষের, বাংলাদেশের এই অবস্থা কেন? আর পশ্চিমা দেশগুলোই বা এত উন্নত কেন? ধর্মই যদি সবকিছুর মুলে হয় তাহলে আমাকে স্বীকার করে নিতেই হবে যে, অন্য সব ধর্মের ঈশ্বরের এর চেয়ে যীশু খ্রিষ্ট বেশী শক্তিশালী। তা নাহলে পশ্চিমা বিশ্বের উন্নতির আর কোন ব্যাখা নেই। এই জিনিষটাও একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে উত্তরে আমাকে বলেছিল,”এখন কে কি অবস্থায় আছে সেইটা মুখ্য না, মুখ্য হল মরার পর কার কি হয় ?” পুনরায় আমার প্রশ্ন, “মৃত্যর পরে ওদের কি হবে সেটা আপনি জানবেন কিভাবে?” এইবার সে যথেষ্ট বিরক্ত হয়ে বলল,”বিধর্মীদের সবার অবস্থা খুব খারাপ হবে ...”, এইটা বলে সে আমার দিকে খুব করুনার দৃষ্টিতে তাকাল। আমি আর কিছু না বলে মনে মনে ভাবলাম, একজন শিক্ষিত , আধুনিক মনস্ক মানুষ যদি এমন ভাবে ব্রেইন ওয়াশড হতে পারে তাহলে আর সাধারন লোকদের কি দোষ। আমি জানি সেও আমার দিকে তাকিয়ে এটাই ভাবছিল যে আমি এরকম শিক্ষিত মানুষ হয়ে কেন এমন অর্বাচীন এর মত প্রশ্ন করলাম ।

আবার অনেক সময় চিন্তা করি, এই যে মানুষ বলে কপালে নাকি আগে থেকেই লেখা থাকে মানুষের জীবনী। ভালো হোক আর খারাপ হোক সবাই এটা বলতেই পছন্দ করে যে, ভাগ্যে যা আছে তাই হবে, হয়েছে, এখানে আমার তো কিছু করার নেই। এই কথাটা আমার কাছে চরম হাস্যকর একটা কথা মনে হয়। ওই সময়ে যদি ওই ঘটনা না ঘটে উলটা ঘটনাও ঘটত তাও মানুষ একই কথা বলত। হায়রে মানুষ জীবন, সবসময় শুধু সুপেরিয়র দ্বারা ডমিনেট হতে চায়।

তাহলে এই যে পৃথিবীতে এত এত মানুষ ধর্মের বিশ্বাস কে পুজি করে চলছে তারা কি ভুল? আমি কি ঠিক? নিশ্চই ধর্মের বিশ্বাস এর মধ্যে এমন কিছু আছে যে কারনে মানুষ আগ্রহী হয়, কি সেটা? এসব চিন্তা করতে যেয়ে একটা কথাই ঘুরে ফিরে বার বার মনে আসে, যারা এই ধর্ম গুলো প্রচার করেছেন তারা ছিলেন অসম্ভব প্রতিভাবান ব্যক্তি, অসম্ভব ক্ষমতা সম্পন্ন একেকজন নেতা। একটা মতবাদ দিয়ে হাজার হাজার বছর পরে কাউকে প্রভাবিত করা অথবা সেই মতবাদে ধরে রাখা মোটেই সহজ কথা না, খুব সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর অন্যতম। কিন্তু সমস্যায় পরে যাই তখনই যখন দেখি এই মত বাদ গুলো মডারেট হয়ে ব্যবহার হয়। অবশ্য মডারেট হবে এটাই স্বাভাবিক। হাজার হাজার বছর আগের মতবাদ এখনকার পরিবেশে মানানসই হবে না এটাও স্বাভাবিক, কিন্তু সেই মতবাদগুলো এখনকার পরিবেশে মানানসই করতে যেয়ে একেকজন ধর্ম গুরু একেকভাবে মডারেট করেন।

আর আমরা সাধারন লোকজন সেই মডারেট মতবাদ গুলোকে আবার আমাদের নিজেদের মত করে মডারেট করি। এত মডারেশনের পাল্লায় পরে আসল মতবাদগুলোই হয়ত হারিয়ে যায়। আমরা একবার ও ভেবে দেখিনা কেন এই মতবাদ গুলো দেয়া হলো, বর্তমান পরিবেশে এগুলোর আসলেই কোন প্রয়োজন আছে কিনা। যারা বর্তমান পরিবেশে এগুলোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তাদেরকেই হয়ত আমরা প্রচলিত ভাষায় নাস্তিক বলি, ধর্ম বিরোধী বলি। মতবাদ গুলো কোন পরিস্থিতি তে দেয়া হয়েছে, কি এগুলোর প্রয়োজনীয়তা, আমি আসলে সেটা চিন্তা করতেই বেশী পছন্দ করি।

এজন্যে যদি কেউ আমাকে নাস্তিক বলে, ধর্মবিরোধী বলে, আমার মেনে নিতে কোন আপত্তি নেই ... যাই হোক, এই পোষ্ট এর শুরু হয়েছিল আমার ধর্ম বিস্বাস কি সেটা জানানোর জন্যে। আমি সত্যি সত্যি কি ভাবি, কি চিন্তা করি সেটাই বলতে চেষ্টা করলাম, হয়ত খুব খাপছাড়া হয়েছে । তবুও বলতে চেষ্টা করেছি। কাউকে কষ্ট দিতে চাইনি, এই পোষ্ট এর কারনে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি দুঃখিত ...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.