আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধন্যবাদ নির্বাচন কমিশন

সবাই ভাল থাকুন।

আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছিলাম বিকেলে ভোট দিতে যাব। যথারিতী ঘুম থেকে দেরি করে উঠতে উঠতে সারে বারটা। লেপ্টপ অন করেই নেটে। সামহোয়ারে এসে দেখলাম নর্বাচনের সিরিয়াল নাম্বার জানার একটা স্টিকি পোস্ট।

যাক ভালোই হলো। EC এর ওয়েবসাইটেও দেখলাম ভোটারলিস্টের ওই লিঙ্কটা দেওয়া। যা হোক নিজের ID নাম্বার ওনুযায়ি খুজে দেখলাম বিশাল এক পিডিএফ ফাইল ওপেন হলো। খাইসে! এতজনের মধ্যে নিজেরটা কেমনে বার করবো? তার উপর বাংলাতে। সার্চও করা যাচ্ছেনা।

এভাবে দেখতে গেলে আজকে আর ভোট দেওয়া লাগবেনা। কি করা? আমাদের পুরা বিল্ডিংটাও মোটামোটি খালি। নিচে যেয়ে দারওয়ানকে জিগেশ করলাম ভোট কেন্দ্র কোথায়? বলে মনে হয় মডেল কলেজে। তাও আফনে কারো থেকে জিগায়া লন। মহা ঝামেলা! আজকে কি তাহলে আর! মাথায় রাজ্যের চিন্তা নিয়ে বাবু ভাইয়ের হোটেলে ব্রাঞ্চ সারতে গেলাম।

হঠাৎ নির্বাচন কিমশনে এক দুলাভাইয়ের কথা মনে পরলো। কিন্তু আজকে তো বিযি থাকবেন। আগে আপাকে ফোন করলাম। ‘আপা আমি তো আমার সিরিয়াল নাম্বার জানিনা আর কোন কেন্দ্র তাও যানিনা। ‘ ‘তোমার কাছে ID কার্ড আছে না?’ 'হুম' 'ওইটা নিয়ে যেখানে রেজিস্ট্রেশন করেছিলে সেখানে চলে যাও।

' 'তাই নাকি?' 'হুম আমার তো ওই যায়গাতেই ভোট দিতে হয়েছে। আচ্ছা তুমি সিরিয়াল নাম্বার পাওনাই কেন?' 'পেয়েছিলাম মনে হয়। দারওয়ান দিয়েছিল একদিন। ওখানে প্রারথির ছবি থাকাতে ভাবলাম বুঝি কেম্পেনের লিফ্টলেট। তাই ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলাম।

এখন EC এর সাইটে সারচ করছি। দেখি খুজে পাই কিনা। ' গোসল সেরে এসে দেখলাম আপার মিসড কল। কলব্যাক করলাম। 'শুন।

তোমার দুলাভাইকে ফোন করো। আমার সাথে এখনি কথা হয়েছে। ' সাথে সাথে ফোন করেই বুঝলাম দুলাভাই একটু চেতা। ‘জি দুলাভাই স্লামালাইকুম। ‘ 'ওয়ালাইকুমুসসালাম।

কি ব্যাপার তুমি তোমার নাম্বার জানো না কেন?' 'পেয়েছিলাম মনে হয়। দারওয়ান দিসিল একদিন। ওখানে প্রারথির ছবি থাকাতে ভাবলাম বুঝি কেম্পেনের লিফ্টলেট। তাই ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলাম। ' 'তাহলে আমাদের সাইটে সার্চ করতে।

' 'ওরে বাপরে! এত বড় পিডিএফ ফাইলে খুজতে গেলে তো দিন শেষ হয়ে যাবে। ' 'তো তুমি এতদিন পরে খুজতে গেলে কেন?' 'আমি তো মাত্র কালকে সামহোয়ারে দাখলাম। ' 'কি বলো!? আমরা এতদিন ধরে প্রতিদিন টিভি, পেপারে এ্যাড দিচ্ছি। ' 'আমি তো টিভি সেভাবে দেখিনা আর পেপারও পড়িনা। আর আপনাদের সাইটে যে আসে তাও তো যানতাম না।

' 'তোমাদের মতো বেকুবরা বুঝেছ এবার ভোট দিতে পারবেনা। সবার তো তোমার সবার EC তে দুলাভাই নাই। তোমাদের জন্যই আমাদের দুরনাম হচ্ছে। ' 'দুরনাম হচ্ছে? কেন?' 'এই যে টিভিতে দেখাচ্ছে ভোটাররা কেন্দ্র খুজে পাচ্ছেনা। দেখি তোমার ID কার্ডের নাম্বার বলো।

' '26xxxx' 'ওকে আমি বোলছি দারাও। ' শুনলাম কাকে যেন বলেলেন 'এই ID নাম্বারের ভোটার নাম্বার আর কোন কেন্দ্র তারাতারি আমাকে জানাতে বলো। ' 'তোমার সিরিয়াল নাম্বার ৯২৮ আর কান্দ্র হলো মডেল কলেজের দোতলায়। ' দেখলাম ঘড়ীতে পউনে তিনটা বাজে। তাড়াতাড়ি রিক্সা নিয়ে দৌড়।

কেন্দ্রের কাছাকাছি আসতেই দেখলাম পস্টারে পোস্টারে সয়লাব। পরিচিত কয়েকজনের সাথে দেখা হয়ে গেলো। যেরকম বড় লাইন হবে ভেবেছিলাম দেখলাম সেরকম কোন ভিড় নেই। কেমন যেন একটা উত্তেজনা বোধ হচ্ছিল। যখন সিল মারতে গেলাম হথাৎ একটু নস্টালজিক হয়ে পড়লাম।

আগেরবার নানার বাড়িতে ছিলাম মামার ভোটের কেম্পেনের জন্য। তখন জীবনের প্রথম জাল ভোট দিয়ে ধরাও খেয়েছিলাম। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে কলার উচু করেই বেরোতে পেরেছিলাম। তার আগের নির্বাচনে দুই বছরের জন্য ভোটার হতে পারিনাই। অনেক বন্ধু অবশ্য বয়স বাড়িয়ে ভোটার হয়েছিল।

সেসব চিন্তা করলে এবারই আমার প্রথম জেনুয়িন ভোট দেওয়া। আব্বুর কথাও মনে পড়ে গেল। উনি কট্টরভাবে বড় দুই দলের একটাকে সমর্থন করেন। আর আমরা ভাইবোনেরা চান্স পেলেই ওই দলের কোন দোষ ত্রুটি ওনাকে বলে খেপিয়ে দিতাম। অথচ আজকে আমি প্রথমবারের মতো তাঁর সমর্থিত দলকেই ভোট দিচ্ছি।

সীলটা মনে হয় একটু হাল্কাভাবে পড়লো? তাও মনে হয় বুঝা যাচ্ছে। বাসায় এসেই আপা দুলাভাইকে থ্যাঙ্কস দিয়ে এসএমএস করলাম। আপনারা ভোট দিয়েছেন তো? আশা করি আপনাদের কারো আমার মত পেইন খেতে হয়নি। সবাই ভাল থাকবেন। পরিশেষে ইলেকশন কমিশনকে ধন্যবাদ এমন সুশ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.