আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্য আমেরিকা

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ

আজও উন্নত ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমেরিকায় এমন দৃশ্য বিরল নয়। আজও একদল মানুষ ধরে রেখেছে ষোড়শশতকের জীবন বোধ। আধুনিকতাবিরোধী আমেরিকার Amish ধর্মসম্প্রদায়ের জীবনধারা আলোচনা করলে বিস্মিত হতেই হয়।

অ্যামিশরা best known for simple living, plain dress and resisting modern conveniences. অ্যামিশদের সম্পর্কে এক আমেরিকানের বিস্ময় এভাবে প্রকাশিত হয়েছে- The farmlands of the Pennsylvania Dutch Country are among the most productive in the nation. But many of the farmers here are different from most Americans; different by choice. For these are the Old Order Amish and Mennonites, also known as the "Plain People". অ্যামিশদের সহজসরল জীবন যাপন দেখার জন্য অনেককেই তাদের গ্রামে যায়। একবার অ্যামিশদের কমিউনিটিতে একদল লোক এল। তাদের মধ্যে একজন অ্যামিশদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা বাইবেল পড়, খিস্টেও বিশ্বাস কর তাহলে তোমাদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য কি? একজন অ্যামিশ বলল, টিভি । মানে? অতিথির কন্ঠে বিস্ময় ঝরে পড়ে। একজন অ্যামিশ তখন বলল-তোমরা আজ থেকে কে কে টিভি দেখবে না? হাত তোলো।

কেউ হাত তুলল না। তখন একজন অ্যামিশ বলল, আমাদের কমিউনিটিতে টিভিই নেই। আসলেই অ্যামিশদের জীবনযাপন এমনই সহজসরল যে-তারা ইলেট্রিক আলো অবধি ব্যবহার করে না। টেলিফোন কথা বললেও কথা বলে কম। গাড়ির মালিক না হওয়া অ্যামিশদের একটি রীতি।

ব্যাক্তিগত সম্পদ না থাকাও-যা আছে সবই কমিউনিটির। বিশেষ পোষাক না পরা, পোষাক হবে সাদামাটা। ইনসুরেন্স না করা অ্যামিশদের স্বভাব। সরকারি সাহায্য নেয় না এরা। যেমন সোসাল সিকুরিটি।

অহিং বলেই সৈন্যবাহিনী এড়িয়ে চলে। বাইরের লোজজন এড়িয়ে চলে গির্জে ও পরিবার নিয়ে থাকে। এক রুমের স্কুল। গ্রেড এইটে পড়া শেষ। জীবনধারনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে এরা ।

অ্যামিশভাষায় গির্জার নিয়মকে বলে ordnung; অ্যামিশরা গির্জার নিয়মকানুন মেনে চলে। যারা ordnung মানবে না তাদের কমিউনিটি থেকে বের করে দেওয়া হয়। গর্ব অহঙ্কার ঘৃনা করে অ্যামিশরা। ভালোবাসে নমনীয়তা ও বিনয়। এড়িয়ে চলে বাইরের জগতের সংস্পর্শ।

অ্যামিশদের আলাদা থাকার কারণ বাইবেল বর্নিত একটি শ্লোক। Do not love the world or the things in the world. The love of the Father is not in those who love the world;john 2:15-2:15 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৩টি অঙ্গরাজ্যে অ্যামিশদের বাস। কানাডায় মাত্র ১ প্রদেশে অ্যামিশদের কমিউনিটি রয়েছে। অ্যামিশদের উৎপত্তি হয়েছিল ইউরোপে। ইউরোপে ষোড়শ শতব্দ অবধি ছিল ক্যাথলিক গির্জার দাপট ।

ওই সময়ে ক্যাথলিক গির্জা স্থবির হয়ে পড়েছিল। আরম্ভ হল ক্যাথলিক গির্জার বিরুদ্ধে তুমুল রিফর্ম আন্দোলন। আরম্ভ হল ক্যাথলিক যাজকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা প্রটেস্ট। এ ক্ষেত্রে মার্টিন লুথার, জন ক্যালভিন ও উলরিখ জুউইনলির অবদান অবিস্মরণীয়। ইউরোপে ক্যাথলিক গির্জার একচ্ছত্র আধিপত্যের বিরুদ্ধে এরাই পথিকৃৎ।

প্রতিবাদীদের মূল বক্তব্য ছিল- *মানুষের মুক্তি ঈশ্বরের করুনায়; গির্জার মাধ্যমে নয়। * বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আরও অধিকার ও মুক্তি মানুষের প্রাপ্য। *খ্রিস্টবিশ্বাসী ও ঈশ্বরের মধ্যে পুরোহিত প্রয়োজন নেই। *রাষ্ট্র ও গির্জার ঘনিষ্ট সহযোগীতা আবশ্যক। * প্রয়োজন বাইবেলের ওপর নির্ভরশীলতা; গীর্জার ঐতিহ্যের ওপর নয়।

এভাবেই ইউরোপে আরম্ভ হয়ে গেল Anabaptists আন্দোলন। Anabaptists শব্দটার মানে আবার বা পুনরায় বাপটাইজ করা। খ্রিস্টানধর্মে Baptism হচ্ছে এক ধরনের কৃত্য; যা পানি দিয়ে করা হয়। এর ফলে একজন খ্রিস্টান গির্জার পূর্ন সদস্যের অধিকার পায়। Anabaptists আন্দোলনের মূল কথা: আমরা ক্যাথলিক গির্জার ধার ধারি না-আমরা পুনরায় Baptism করব।

Anabaptists শব্দটা দিয়ে এখন বোঝায় ষোড়শ শতকের ক্যাথলিক বিরোধীদের। এরা ক্যাথকিদের কড়াকড়ি বিধিনিষিদের বিরুদ্ধে সংস্কার আন্দোলন করেছিল। । Anabaptists দৃষ্টিভঙ্গি ছিল শিথিল ও নমনীয়। খ্রিস্টান Anabaptists দের মধ্যে অন্যতম ছিল ম্যাননোনাইটসরা।

সম্প্রদায়টির প্রবক্তা ছিলেন মেননো সিমন্স। (১৪৯৬-১৫৬১); মেননো সিমন্স ছিলেন নেদারল্যান্ডের ক্যাথলিক যাজক। তিনি Anabaptists মতবাদ শুনে নিজের বিশ্বাস নিয়ে ভাবিত হয়ে পড়লেন। যা হোক। ১৫৩৬ সালে Anabaptists আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন।

ক্যাথলিকরা তার ওপর এমনই ক্ষেপে উঠেছিল যে তারা সিমন্স-এর মাথার দাম ধার্য করেছিল। তাঁকে ঘিরেই ষোড়শ শতকে ম্যাননোনাইট আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। ওই সময়ে জ্যাকব আমমান নামে একজন ম্যাননোনাইট আন্দোলনে যোগ দেন । আমমান-এর জন্ম ১৬৪৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। সুইজারল্যান্ড-এ।

তাঁর ওপর পর্তুগালের Anabaptistsদের প্রভাব ছিল। কাজেই ক্রমশ আমমান সুইস ম্যানোনাইটদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ছিলেন। আমমান মনে করতেন কেউ ভুল করলে তাকে অনুতাপ করতে হবে। তার আগে তাকে সম্প্রদায় থেকে নির্বাসিত করতে হবে। এইসব ইস্যু নিয়ে তাঁর সঙ্গে সুইস ম্যাননোনাইটসদের সংঘাত বাঁধে।

১৬৯৩। তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তাঁর নেতৃত্বে যারা বের হয়ে গেলেন তারাই অ্যামিশ। অ্যামিশ শব্দটা সুইস। তবে এর নির্দিস্ট অর্থ কোথাও খুঁজে পাইনি।

সম্ভত শব্দটা জ্যাকব আমমান থেকে এসেছে। যা হোক। ইউরোপজুড়েই ক্যাথলিকবিরোধীদের ওপর নির্যাতন চলছিল। ১৮ শতকের দিকে অ্যামিশরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসে। প্রথমে তারা বসতি স্থাপন করে পেনসিলভানিয়ায়।

আজও তারা পেনসিলভানিয় জার্মানে কথা বলে। আজ আর ইউরোপে অ্যামিশরা নেই। অ্যামিশরা পরে নিউইয়ক, ইলিনয়, ইন্ডিয়ানা, আইওয়া, মিজৌরি ও ওহিও অঙ্গরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। অ্যামিশদের বিশ্বাস- Adult baptism is done after one makes a commitment to the church. Belief in the Trinity, the virgin birth, incarnation, sinless life, crucifixion, resurrection ascension, and atonement of Jesus Christ. One lives on after death, either eternal rewarded in Heaven or punished in Hell. Salvation is a gift from God, through unmerited grace. The Bible's authors were inspired by God. Their writings are inerrant. The Bible is generally to be interpreted literally. Satan exists as a living entity. আগেই বলেছি। অ্যামিশরা প্রথাবিরোধী বলেই মার্কিন মুলুকের লোকজন অ্যামিশদের কমিউনিটিতে ভ্রমনে যায়।

অ্যামিশরা নগদ ক্যাশ পায়। এভাবে বদলে যাচ্ছে অ্যামিশরাও । আজকাল নাকি অনেক গাড়িও কিনছে! অ্যামিশরা বিয়ে নিজেদের মধ্যেই করে। কাজেই বংশগত অসুকও বেশি লক্ষ্য করা যায় এদের মধ্যে। আরও জানার জন্য- http://www.religioustolerance.org/amish.htm


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।