আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমেরিকা!!!

দিলের দরজা ২৪/৭ খুইলা রাখি মাছি বসে মানুষ বসে না। মানুষ খালি উড়াল পারে! এক দিন আমি ও দিমু উড়াল, নিজের পায়ে নিজে মাইরা কুড়াল...
আমেরিকা'র সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ক রচনা ও গানাঃ ১. ওরা কেন লড়ে!.......................................................... মাইকেল মূরের ফারেনহাইট ৯/১১ ছবির কথা আমরা অনেকেই কম বেশী জানি হয়তো। সেদিন একটা ছবি দেখলাম স্যান্ডান পুরষ্কার প্রাপ্ত ছাবি WHY WE FIGHT(আমরা কেন যুদ্ধ করি): চলচ্চিত্রকার ইয়োগিনি জেরিসকি'র এ ছবিটি ২০০৫ সালে আমেরিকার বিকল্পধারার চলচ্চিত্র উত্তসব স্যানডান ফিল্ম ফেষ্টিভালের সর্বোচ্চ পুরষ্কার গ্রান্ড জুরি এ্যওয়ার্ড জেতার গৌরব অর্জন করে, WHY WE FIGHT is an unflinching look at the anatomy of the American war ... WHY WE FIGHT launches a bipartisan inquiry into the workings of the military industrial complex and the rise of the American Empire. Filmmaker Jarecki (THE TRIALS OF HENRY KISSINGER) surveys the scorched landscape of a half-centurys military adventures, asking how and telling why a nation of, by, and for the people has become the savings-and-loan of a system whose survival depends on a state of constant war. The film moves beyond the headlines of various American military operations to the deeper questions of why why does America fight? দেশের বাইরে যে ব্লগার বন্ধুরা বসবাস করেন যাদের ইন্টারনেট স্পীডের সমস্যা নেই হাতে কখনো দেড় ঘন্টা সময় থাকলে এই লিংকে যেয়ে ছবিটা দেখে নিতে পারেন। দেখলে বুঝতে পারবেন আমেরিকার বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ কেন এ ছবিটিকে পুরষ্কৃত করেছে। ইম্পেরিয়াল আমেরিকা খোদ আমেরিকানদের ও যে কত বড় শত্রু এ ছবিটি তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে বলে দেয়।

আমেরিকায় আমি যখনই যাই বিশেষ করে নিউইয়র্কে গেলে রাস্তায়/বাসে/সাবওয়েতে কি কালো কি হিস্পানিক কি বাংলাদেশীদের মাঝে আমি অদ্ভূত এক প্রাণের স্পন্দন দেখতে পাই। এক সময় মনে প্রশ্ন আসতো আমার, তবে এই 'ডোন্ট অরি বি হ্যাপী' আমেরিকার পিছে সবাই এমন লাগে কেন! আজ আর সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়না আমার। আমেরিকান মানুষ আর আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদ কোনটার কি চেহারা সেটা দেখতে আর বুঝতে এখন আর তেমন অসুবিধা হয় না আমার। ব্লগে যেটা লখ্য করলাম তা হচ্ছে আমেরিকার রাজনৈতিক চরিত্র বুঝতে আমাদের সবারই রয়েছে কেমন যেন এক চোখে দেখবার অদ্ভুত এক রৈখিক একটা চিন্তা চেতনা। আমেরিকার বিরোধিতা আর আমেরিকার সাফাই গাইতে যেয়ে আমরা সবসময়ই কট্টর একটা অবস্থানে দাড়াইয়া যাই, গোল পাকাই।

যারা আমেরিকার নিমক খান সেই নিমকের দাম বজায় রাখতে যেয়ে কি বলতে যে কি বলে যান দিশাবিশা করেন না। আর এক শ্রেণী আছেন যারা বায়তুলমোকারমের বিশেষ গেটের সামনে দাড়িয়ে নাসারাদের বেহুদা মুন্ডুপাত করতে আরম্ভ করেন। ব্লগে আমার লেখায় আমি যখন আমেরিকার সমালোচনা করি আমি তখন এই দেশটির সাম্রাজ্যবাদী অবস্থানের সমালোচনা করি। দেশটির অযুত-নিযুত ভালো মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তা আমি করি। আমি তখন যেমন ভুলে যাই না মুক্তি যুদ্ধে কন্সার্ট ফর বাংলাদেশের কথা, শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমেরিকাবাসীদের মহান উদার হৃদয়কে তেমনি ভুলে যাইনা মুক্তি যুদ্ধে আমেরিকার রাষ্ট্রনীতিকে, "বটমলেস বাস্কেট" এর সেই উদ্ধত অমানবিক উক্তি কে।

আমি যেমন ভুলি না যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদী আমেরিকানদের উষ্ন আপ্লুত হৃদয়ের কথা তেমনি ভুলিনা আমেরিকার পররাষ্ট্রানীতি'র হিংস্রতার কথা। আমেরিকার অপরিনামদর্শীতা পৃথিবী কে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তা দেখে শংকিত হই আর দশ জন নিরিহ মানুষের মতোই। পুনশ্চঃ গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশে আমেরিকার ত্রান দিতে আসা উপলক্ষ্যে বেশ কিছু পোষ্ট/মন্তব্য বাদানুবাদ অবোলোকন করে যুদ্ধবাজ আমেরিকার অতি সাম্প্রতিক যুদ্ধ নিয়ে নিজের লেখা একটি পদ্য সহ এই পোষ্ট টি তৈরি করতে আগ্রহী হলাম। 'আমেরিকা আইসা পড়ছে' বলতে কেউ যদি বুঝে থাকেন আমেরিকা এই যে বাংলাদেশে ঢুকবে তারে আর বের করা যাবে না তাহলে সে ধারনাটা তাদের ভুল হবে। আমাদের বুঝতে হবে এনারা আমাদের মতো ল্যাজে-গোবরে ভাবনার মানুষ নয়।

ধান বানতে এসে শিবের গীত গাওয়ার পাত্র এরা নন। দেখবেন এনারা এবার হয়ত এমন সাহায্য আপনাকে করবে আপনি টাশকি খেয়ে যাবেন। আবার যখন ইচ্ছে করবে আপনাকে বলার জন্য, মাথা নিচে পা উপরে দিয়ে থাকতে তখন সে কাজটিও সম্পন্ন করবেন তেনারা চুড়ান্ত পেশাদারীত্বের সাথে। আমাদের বাঙালিদের অসুবিধা হলো আমাদের কোন হিউমার সেন্স নেই। আমরা বিশ্বাস করি কেবল শুধু 'রিউমার' আর 'চুড়মারে'।

আমরা মষ্করাও বুঝিনা। মষ্করা বোঝেনও তারা করেন ও তারা, যারা এ জগতে খোদ উপরঅলার প্রতিনিধি। যাদের নেতা বলতে পারেন 'আল্লাহ আমার মুখ দিয়ে কথা বলেন "God speaks through me." যারা সময় মতো বাদাম ব্যাবসায়ী রাজা জিমি কার্টারকে আফগানিস্তানে নিয়া জিহাদের ডাক দেয়ায়, আবার সময় পার হইলে জিহাদিদের পোঙ্গায় বাঁশ দেয়। যারা রাষ্ট্রদূত কালা জাহাঙ্গিররে চট্টগ্রাম পাঠাইয়া জামাতিগ সাট্টিফিকেট দেয় আর দুনিয়া জোড়া ইসলামী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বেড়ায়। যারা লুত্ফুজ্জামান বাবরের বাসায় গিয়া দাওয়াত খায় মাথায় ইষ্টাইল কইরা জেল লাগাইয়া দেয় আবার টাইম পার হইলে সেই বাররেরই মাথা কামাইয়া ঘোল ঢাইলা চালান করার ব্যবস্থাতে পূর্ণ সমর্থন দেয়।

এমনতর হিউমার যাদের অছে তাদের তরে রচিত হয়ে ছিল এমন এক সংগীতঃ তুমি চোরেরে কও চুরি কর, গৃহস্তরে কও ধর ধর...বুঝেছি বুঝেছি মাওলা তোমার অভিলাষ গো...দুনিয়া চড়াইয়া, খাইবা আমায় গিল্লা, মানুষ হইয়া কেমনে বাঁচব হায়!... ২. আপকালিপ্স এখন!!........................................................ আর কতো যুদ্ধ করলে সৈরাচার নিপাত যাবে! আর কতো মানুষ মারলে মানুষ মারা বন্ধ হবে? আর কতো কপাল পুড়লে আগুন জ্বলা বন্ধ হবে! আর কতো বোমা মারলে গনতন্ত্র মুক্তি পাবে? তোমরা আমাকে উন্মাদ বলো না, বোমার আঘাতে বধির ঐ শিশুটির কাছে আমি অপরাধী। আমেরিকার ঐ লোকটি, পৃথিবীর কোন শিশুকে আর মুখ দেখাতে পারবে না বলে আত্নহত্যা করেছে; লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বেহায়ার মতো এখনো বেঁচে আছি! এমন কাপুরুষ আমি, মরব ত দূরের কথা ভালো করে বাঁচতে ও শিখিনি ডরে ভয়ে কুকড়ে সত্য মিথ্যা গুলে খেয়েছি। মুখে ধীবর হাসি ঝুলিয়ে জঙ্ঘার ফাকে পরিচয় লুকিয়েছি- আর কতো বোমা ফাটলে, বোমার আঘাত বন্ধ হবে! আর কতো ক্ষত হলে সভ্যতা রক্ষা হবে? আর কতো ভয় পেলে ভয় পাওয়া বন্ধ হবে! আর কতো অন্যায় হলে এ পৃথিবী অন্যায়হীন হবে? তোমরা আমাকে উন্মাদ বলো না, বোমার সাথে আকাশ থেকে নেমে আসে যে জল্লাদ তার পকেটে পৃথিবী'র চুরি যাওয়া সকল মানবতা। ক্রু'র হাসি নিয়ে যে জানোয়ার ধেয়ে আসে গড়িয়ে বিষের লালা আর যাই বলো তাকে গনতন্ত্রী বলো না। সভ্যতার মই বেয়ে বোমার গায়ে মানবতা লিখে যারা বোতামে রাখে হাত, আরযাই বলো তাদের মানুষ বলো না।

এই লেখাটি লিখেছিলাম ২০০৩ সালে দ্বিতীয় ইরাক যুদ্ধ তামশা শুরু হবার পরপর। টিভিতে যুদ্ধের বিষম গোলাবারুদ বিষ্ফোরন দেখতে দেখতে খুব অসহায় হাতে সে রাতে কলম তুলে নিয়ে ছিলাম। লিখতে যেয়ে বার বার আমেরিকান চিত্র পরিচালক ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপোলা'র ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিরোধী বিষ্ময়কর চলচ্চিত্র Apocalypse Now (আপকালিপ্স নাউ) এর কথা মনে হচ্ছিল খুব। * নিজ স্বার্থ হাসিলে শান্তি'র দোহাই দিয়ে এ দস্যু, 'মা' ধরিত্রী'র বক্ষ বিদীর্ণ করে যে পরিমান বারুদ আঘাতে এ পৃথিবীকে ক্ষতবিক্ষত করেছে তার পরিমাপ কি কেউ করে দেখেছেন কখনো? শান্তি পিয়াসী এই দানবই একমাত্র এ পৃথিবীকে এক দিন উপর্যুপরি এটম আঘাতে করেছিল বিষাক্ত, আর কেউ নয়। যখনই এসব ভাবতে যাই, আমি অবাক বনে যাই! ৩. আমেরিকা আমেরিকা!!!.................................................... এই মাত্র ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখলাম, পোষ্টের বিষয় বস্তুর সাথে মজার মিল থাকায় ভিডিওটি এই পোষ্টে যুক্ত করার লোভ সামলাতে পারলাম না।

সুযোগ যখন পেলাম দৈর্ঘ্যে লম্বা এই পোষ্টটি পাঠকের পড়বার সুবিধার জন্য একটু রী'এরেঞ্জ করে দিলাম, সেই সাথে পোষ্টের শিরোনামটিও (*আগে এর শিরোনাম ছিল, "আপকালিপ্স এখন ও আমেরিকা'র সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ক রচনা")।
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।