আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবসর

কোমায় থাকা ব্লগ

আজ দুপুরে একা একা অনেকটা পথ হেঁটেছি। কোন সুনির্দিষ্ট কিছু করার ছিলো না তাই। বেশ খানিকটা পথ। কতটা পথ? মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে টেকনিকাল মোড়। সেখান থেকে বাসে চেপে আবার শেওড়াপাড়া।

এক বন্ধুর বাসায় প্রয়োজনে যাবার দরকার ছিলো। কিন্তু আগেই পৌছে যাওয়াতে সময়টা কাটানোর প্রয়োজন ও ছিলো। কিন্তু সেটা অন্য কাহিনী। বাসায় ফিরে একটু আত্মস্থ হয়ে চেখভ পড়ছিলাম। বাংলা অনুবাদে।

গল্পগুলো বেশ ঝরঝরা,সাধারণ। ভালোই লাগে পড়তে। পুরনো দিনের রাশিয়ান দৈনন্দিন জীবন। আমাদের চেয়ে বেশ আলাদা। তবুও মিশে গিয়েছিলাম খানেকক্ষণের জন্য।

তারপরই ডুবে গেলাম আমার চিরপ্রিয় সৈয়দ মুজতবা আলী-তে। হালকা রস মিশিয়ে জীবনের নিগূঢ়তম সত্যগুলো কেমন যেন মূর্ত হয়ে ওঠে তার লেখায়। মুগ্ধতার কখনও শেষ হয়না আমার। হুবহু, সেখান থেকেই তুলে দিলাম কিছু অংশ। *** রুশ কবি পুশকিনের রচিত একটি কবিতার সারমর্ম এই- ‘হে ভগবান, আমার প্রতিবেশীর যদি ধনজনের অন্ত না থাকে, তার গোলাঘর যদি বারো মাস ভর্তি থাকে, তার সদাশয় সচ্চরিত্র ছেলেমেয়ে যদি বাড়ি আলো করে রয়, তার খ্যাতি প্রতিপত্তি যদি দেশ দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে, তবুও তাতে আমার কণামাত্র লোভ নেই, কিন্তু তার দাসীটি যদি সুন্দরী হয় তবে- তবে, হে ভগবান, আমাকে মাপ করো, সে অবস্থায় আমার চিত্ত-চাঞ্চল্য হয়।

’ পুশকিন সুশিক্ষিত, সুপুরুষ ছিলেন এবং খানদানী ঘরের ছেলে ছিলেন। , কাজেই তার ‘চিত্তদৌর্বল্য’ কি প্রকারের সেকথা বুঝতে বিশেষ অসুবিধা হয়না। এইবারে সবাই চোখ বন্ধ করে ভেবে নিন কোন্‌ জিনিষের প্রতি কার দূর্বলতা আছে। আমি নিজে বলতে পারি, সাততলা বাড়ি, ঢাউস মোটরগাড়ি, সাহিত্যিক প্রতিপত্তি, রাজনৈতিক কর্তৃত্ব এ সবের প্রতি আমার কণামাত্র লোভ নেই। আমার লোভ কেবল একটি জিনিষের প্রতি- অবসর।

যখনই দেখি, লোকটার দু’পয়সা আছে অর্থাৎ পেটের দায়ে তাকে দিনের বেশির ভাগ সময় এবং সর্বপ্রকারের শক্তি এবং ক্ষমতা বিক্রি করে দিতে হচ্ছেনা, তখন তাকে আমি হিংসে করি। এখানে আমি বিলাস ব্যসনের কথা ভাবছিনে। , পেটের ভাত ‘-’র কাপড় হলেই হল। অবসর বলতে কুঁড়েমির কথা ও ভাবছিনে। আমার মনে হয়, প্রকৃত ভদ্রজন অবসর পেলে আপন শক্তির সত্য বিকাশ করার সুযোগ পায় এবং তাতে করে সমাজের কল্যাণলাভ হয়।

*** কিন্তু ব্যাস্ত সময়ে অবসর মেলে কই? আজকে না হয় আচমকা পেয়ে গিয়েছিলাম সেটা। আজকে দিনটা হয়তো একটু বেশিই লাকি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।