আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঐ বয়সে মুক্তিযুদ্ধ

আল বিদা

একটা বয়স ছিল যখন যুক্তির চেয়ে আবেগকে বেশী গুরুত্ব দিতাম। তখন ক্লাস 9এ পড়ি। আমি আর আমার গুরুবন্ধুর ঝোক ছিল সারাদিন হাটা। আমরা হালিশহর থেকে হেটে হেটে সি বীচ পর্যন্ত যেতাম আর হুমায়ূন আহমেদীয় আলোচনা করতাম। তখন হঠাৎ আমি মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে খুব আগ্রহী হলাম।

অনেকটা 'হুইন্না মুসলমান' এর মত। চোখকান বন্ধ করে বঙ্গবন্ধুকে মহান নেতা, আওয়ামী লীগকে মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র স্বপক্ষের শক্তি, গোলাম আযমকে ঘৃন্য রাজাকার, যারা জামাত করে তারাও রাজাকার, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে আদর্শবাদী সংগঠন, জাহানারা ইমামকে শহীদ জননী বলে মানতাম। এবং নিজেকে খাটি দেশপ্রেমিক বানানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করতাম। এই বিশ্বাসগুলা ভুল না ঠিক সেকথা পরে বলছি। আমি গুরুর সাথে যখন এসব নিয়ে তুমুল তর্ক করতাম ও শুধু বলত কোন প্রমান আছে।

আমি বলতাম পেপারে লিখছে। ও বলত অনেক পেপারে লিখে নাই। আমি বলতাম ঐটা রাজাকারের পত্রিকা। গুরু আমার যুক্তিহীন আবেগের আস্ফালন দেখে ছোট্ট করে বলত 'ভাল কথা, তাইলে বিচার কর'। আমি আবারও গনআদালতের কথা বললে ও বলত - আদালতে কর।

শেষমেষ ক্ষেপে গিয়ে বলতাম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে করবে! সূক্ষ কারচুপি ছাড়া দেশের মানুষের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসল। ঘাদানি র নেতারা কিছুদিন মিছিল করল। উদিচি, রমনার বটমূলে বোম মারল কেউ। ঘাদানি নীরব হয়ে গেল। আর আমি গুরুর সামনে ঐ প্রসঙ্গ তুলিই না।

হয়ত গুরু এখনও আমার বোকামির কথা মনে করে হাসে। হয়ত বুঝতে পারছেন আওয়ামী লীগের ব্যাপারে একটা সমর্থন আমার আছে। কিন্তু ঐ বয়সে যুক্তিহীন আবেগ নির্ভর যে কথা বলতাম সে কথা এখন আর বলতে পারি না। গোলাম আযম রাজাকার আর জামাত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দল এ আমারও বিশ্বাস। কিন্তু আফসোস এ সামান্য বিষয় আমরা প্রমান করতে পারি নাই।

একারনে ব্লগের অনেক পোস্টে আমি নীরব থাকি। কিন্তু যারা জামাত সমর্থক তাদের এখন আর রাজাকার বলি না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.