আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সমাজতন্ত্র: ব্যক্তিগত-সংকীর্ণ অভিজ্ঞতার আলোকে হৃদয়যাতনার কথা - ১

হয়তো আমি কোন কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত নই

আদর্শিক দিক বিচারে সমাজতন্ত্র ও ইসলাম পৃথিবীর দুই অন্যতম বৃহৎ প্রপঞ্চ। দুটোর বাস দু’মেরুতে হলেও তাদের মধ্যে সাধারণ একটি মিল রয়েছে- নিজস্ব স্বার্থবিচারে এবং নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে দুটোই সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, যদিও সমাজতন্ত্র একইসাথে উপনিবেশবাদবিরোধী- সেটা সরাসরিই হোক বা মনোজগতে। আজকাল অবশ্য কেউ কেউ সমাজতন্ত্রে ইসলামিক উপাদান খুঁজে পাচ্ছেন, ইসলামিক ব্যাখ্যা দ্বারা সমাজতন্ত্রের তত্ত্বগুলোকে বিচার করার চেষ্টা করছেন। একইসাথে অনেকে ইসলামের জীবনব্যবস্থায় সমাজতন্ত্রের সূত্রের যোগসূত্র দেখানোর মাধ্যমে বলার চেষ্টা করছেন- দুটো পরস্পরবিরোধী নয়; বরং অনেকক্ষেত্রে যুগপৎ। এই কথাগুলো মনে পড়লো িনেকার বিতর্ক পোষ্ট- সমাজতন্ত্রের প্রায়োগিকতা পড়তে গিয়ে।

আমাদের দেশে ‘বড় সমাজতান্ত্রিক’ কিংবা ‘নামকরা কমিউনিস্ট’ কিংবা ‘একদা কমিউনিস্ট’ বলে খ্যাত-বিখ্যাত হয়েছেন অনেকেই। এই উপাধাগুলো তাদের নামের সাথে লাগানোর সাথে সাথে তাদেরকে সমাজতান্ত্রিক জগতের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যাদার হিসেবেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। রাজনীতিবিদ হিসেবে একজন কমিউনিস্ট এবং সমাজতান্ত্রিক নেতার সাথে একজন তাত্ত্বিকের কিছু পার্থক্য থেকে যায়। এই পার্থক্যটি আমাদের দেশে দেখা যায় না। এখানে যিনি যতো বড় নেতা, তিনিই ততো বড় তাত্ত্বিক।

কেউ হয়তো ব্যতিক্রম হিসেবে বদরুদ্দিন উমর বা এরকম কারো নাম বলতে পারেন, কিন্তু এখানে মনে রাখা দরকার, বড় নেতা বলতে এখানে বিশাল সমর্থকদের নেতা বা বড় পার্টির নেতা বুঝানো হচ্ছে না। প্রচার মাধ্যমে যাকে যতো বেশি দেখা যাবে, তাকে ততো বড় নেতা হিসেবে মেনে নিতে হবে। আলাদা কোনো তত্ত্বচর্চা এবং গবেষণার সংস্কৃতি এখানে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। ফলে সমসাময়িক রাজনীতির প্রতিক্রিয়া দেখানো ছাড়া সত্যিকার অর্থে সমাজতান্ত্রিক জ্ঞানচর্চার আবহ এখানে বিরল। ঠিক উল্টো ঘটনাটি ঘটছে প্রপঞ্চ হিসেবে ইসলামের জগতে।

সমাজতান্ত্রিক বা কমিউনিস্টরা যে কাজটি করতে পারছে না, সেটি সেখানে হচ্ছে- আপাতসফলভাবে, সীমিত আকারে হলেও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে। ফলে যে কর্মকৌশল নিয়ে ইসলামের তাত্ত্বিকরা এগিয়ে যাচ্ছেন, তার বিপরীত চিত্রই আসলে দেখা যায় এই জগতে। এই কর্মকৌশলের প্রভাব কতদূর, তা বুঝা যাবে সমাজতান্ত্রের কর্মীরা যখন বুঝে বা না বুঝে ইসলামিক সমাজতন্ত্রের কথা বলেন। পাশাপাশি ফরহাদ মজহার গ্রুপ যখন লাদেনকে ক্রুসেডের মহানায়ক বানান, তখন ইসলামিক তাত্ত্বিকদের কর্মকৌশলের প্রভাবের মাত্রাটা বেশ টের পাওয়া যায়। এই শিরোনামে ধারাবাহিক যে লেখাগুলো পোস্ট করা হবে, তা পুরোপুরিই ব্যক্তিগত (এবং সংকীর্ণ) অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে মন্তব্যের সাধারণীকরণ হয়ে যেতে পারে, যেমন এই পোস্টে সব মন্তব্যই করা হয়েছে সাধারণীকরণ করে, তবে পরবর্তী পোস্টগুলোতে সেগুলোর ব্যাখ্যা থাকবে। যারা পড়বেন, তাদের শুধু এটুকু মনে রাখতে হবে, কোনো তাত্ত্বিক নয়, একজন সাধারণ মানুষ কমিউনিস্টদের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করে, যেভাবে প্রত্যাশা করে, এই পোস্টগুলোতে হয়তো তারই প্রতিফলন ঘটবে। বিতর্ক সৃষ্টি একটি বড় ব্যাপার, সেটি হলে ভালো; না হলেও খুব একটা ক্ষতি নেই- মানুষের প্রত্যাশার লাইন বড় হওয়া ছাড়া।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.