আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধূসর পান্ডুলিপি (আমার যেকারণে আইবিএতে পড়া হলো না, উৎসর্গ-মানুষ)

ইমরোজ

জীবনে ব্যর্থতা কম নয়। বরং একটু বেশি। সফলতা বলতে শুধু এইটুকু যে আমি সেন্ট যোসেফ স্কুলে চান্স পেয়েছিলাম। আর জীবনে এর থেকে বড় সুখবর পাওয়া আর হয়নি। হয়তো হবেও না।

জীবনের এই ঘটনাটি খুবই মর্ম-বেদনাদায়ক। নিজ-পরিবারের কাছ থেকে প্রতারিত হওয়ার খবর। তাই আশা করি, সবাই পড়বেন। আমার খুব ইচ্ছা ছিল, আমি আইবিএ তে পড়বো। কিন্তু সেখানে আমার চান্স হয়নি।

তার কারণটা অনেক কষ্টের। কষ্ট কিন্তু কম পাইনি। ২০০৭ সালের মে মাস থেকে আমার অবস্থা মানসিক ভাবে খুব খারাপ হয়ে যায়। যা হোক। সেটা অন্য প্রসঙ্গ।

সেদিন ছিলো অক্টোবরের এগার তারিখ। আমি পুড়োদমে পড়াশোনা করছি আইবিএ-এর জন্য। কিন্তু পেপারে এড দেখলাম, কভেন্ট্রি নামক একটি ইউনিভার্সিটিতে ইন্টার্ভিউ। কোভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি ইউকে তে। সেখানে আমার আপন তিন চাচা ফুফু থাকেন।

ভাবলাম ইন্টারভিউটা দিয়েই আসি। বিদেশিনী ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন। আমার সাথে কথা বলে, তিনি অতি খুশি হলেন। আমাকে বললেন, "তোমার আই-এল-টি-এস লাগবে না, তোমাকে আই-এল-টি-এস এর কোর্স ছাড়াই আমরা অফার লেটার পাঠাব"। আমার খুব খুশি লাগছিলো, নিজের উপর কনফিডেন্স আরও বেড়ে গেছিলো।

তাই বাবা মা কে বললাম, আসার পর। যথারীতি আমার অফার লেটারও চলে আসলো। কিন্তু এদিকে ফুফু আর চাচাকে ই-মেইল পাঠিয়েছিলাম, সেগুলোর কোন রিপলাই এলো না। আর বিদেশে যাওয়ার সুপ্ত আনন্দে পড়াশোনাই ছেড়ে দিলাম। বিদেশে যাচ্ছি আর কী।

এখন তো কোন সমস্যাই নাই। বিদেশ থেকে আবার দেশে ফিরে আসবো এইটাই আমার উদ্দেশ্য ছিলো। এদিকে চ্যাট করে ব্লগার "মানুষ" এর কাছ থেকে লন্ডন সম্পর্কিত অনেক তথ্য জানছিলাম। আমার আইবিএর জন্য পড়া আর হচ্ছিলো না। কিন্তু নভেম্বরের এক তারিখের দিকে ফুফুর ফিরতি ই-মেইল আসলো।

যার মর্ম ছিলো এই যে, "টাকা পয়সা বা একোমডেশন সংক্রান্ত সাহায্য তারা কেউই করতে পারবেন না, সমস্ত খরচ, আমার বাবাকে বেয়ার করতে হবে, আর আমি যদি এখন যাই তাহলে ঘোরতর বিপদে পড়বো"। বিপদে আসলে তারা পড়বেন বুঝতেই পারছিলাম ই-মেইল পড়ে। এদিকে আমার বাবাও খুব কষ্ট পেলেন। কারণ ছোট চাচা আর মেজ ফুফুকে তিনিই টাকা দিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। আগে প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর ফোন আসতো বিদেশ থেকে।

কিন্তু চাচা ফুফুরা ফোন করাই বন্ধ করে দিলেন। পুরো নভেম্বর আর ডিসেম্বর মাসটিই গেল তাদের ফোন এলো না। ততক্ষণে আমি আমার স্বপ্ন বিলাসিতার কথা বুঝে গেছি। কিন্তু সময়ও কম ছিলো। ২৩ সে নভেম্বর পরীক্ষা।

মন ভেঙ্গে গেছে, পড়াশোনাও হয়নি। সারাক্ষণ ভাবতে লাগলাম, হায়রে আমি এতটুকু করুণার যোগ্য না। অথচ, তারা বিদেশ থেকে ঢাকায় আসলে নিজের জান পর্যন্ত দিতে বাকি রাখি আমরা। যাই হোক হয়তো স্বপ্ন কল্পনা আর বাস্তবতার অমিলই সমস্ত কিছুর জন্য দ্বায়ি। এখন কোন প্রাইভেটই আমার ভরসা।

হয়তো লোকে খারাপ বলবে তাতে আর কী? আমি খারাপই ভাল। (মানুষকে আন-ব্যান করার আহবানও জানালাম, আবার, সাথে বিষাক্ত মানুষের জন্য এই লেখা)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।