আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলাটি যে কারনে তুলে নিতে হবে।

মিডিয়া

৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি ও গোলাম মোস্তফাকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করার অভিযোগে জামায়েত ইসলামীর আমির মোহাম্মদ মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারী জেনারেল আলী হাসান মোহাম্মদ মুজাহিদ সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মুক্তি যুদ্ধা হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঢাকা জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমেদ খান ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেটের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। রাজাকার- আলবদর বাহিনীর প্রধান মতিউর রহমান নিজামীর নির্দেশেই ঐমুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়। এটি কোন যুদ্ধাপরাধী মামলা নয় !! খেয়াল করতে হবে এটি মুক্তিযুদ্ধা হত্যা মামলা মাত্র ! এটিই প্রথম মামলা নয় , ইতিপূর্বে মুজাহিদ- কাদের ও হান্নানের বিরুদ্ধেও তাঁতী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহ্নগর আওয়ামীলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক ফজলুর রহমান আরেকটি মামলা দায়ের করেছিলেন, ঐমামলার অভিযুক্তরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বির্তকিত বক্তব্য রাখায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা করা হয়েছে। এতটুকু পর্যন্ত খবর।

এখন আসেন বাবার দরবারে। একটু গনকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হই। জোর্তিবিদ্যায় আমার কোন পারদর্শিতা নেই,কিংবা হস্তরেখা বিদ্যায় ও আমার অতীত রেকর্ড নেই। তবুও আমার মনে হচ্ছে, এই মামলা দুইটা হয় স্থবির হয়ে যাবে ,অন্যথায় মামলায় যুদ্ধাপরাধীদের অপরাধ প্রমানকরা যাবেনা!! হত্যা মামলা আর যুদ্ধ অপরাধ এক কথা নয় । যদি এই দুটি সম্ভাবনার প্রথমটি সত্য হয় তাহলে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীরা আবার তর্জণ গর্জন শুরু করবে।

মামলাটি যেহেতু বিচারাধীন তাই তাদেরকে অপরাধী বলা যাবেনা। যেহেতু অপরাধীদের দৃষ্টিতে যুদ্ধ অপরাধ বিষয়টি এখন্ও প্রমানিত নয় তার মানে তারা ধোঁয়া তুলসি পাতা !! অন্যদিকে যদি মামলাগুলোতে যদি নিজামী-মুজাহিদ গংরা জিতে যায় তবে আর কোন দিন্ও আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এই দেশে করতে পারবো না। বদর বদর বলে তারা তাকবির দিয়ে যুদ্ধাপরাধকে যায়েজ করে ফেলবে। বলবে, আমরা আদালত থেকে নির্দোষ প্রমানিত হয়েছি !! এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে কেন আমার মনে হচ্ছে মামলা বিলম্বিত হবে?? ইতিপুর্বে আইন উপদেষ্টা মইনুল হোসেন, পূর্ববর্তী সরকার গুলোর যারা এর বিচার করে নাই তাদের বিচারের প্রশ্ন তুলেছেন এবং বর্তমান সরকারের কোন সদিচ্ছা আছে বলে তার প্রমান এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না তাই সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে!! সবচে’ বড় কিন্তু টা হচ্ছে, যখন বাংলাদেশের সব কটি রাজণৈতিক দল, মুক্তিযোদ্ধ, সুশিল সমাজ, বুদ্ধিজীবী সব শ্রেনী পেশার মানুষ বলছে যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার বিশেষ ট্রাইবুনালে করতে হবে এবং সরকারকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে। তখন একটি মাত্র রাজনৈতিক দল -জামায়েত ইসলামীকে রক্ষা করতে গিয়ে মইন উ আহমেদের সরকার কোন টু শব্দ করছেনা !!! মতলবটা আসলে কি ?? তার অর্থ হলো বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেও সরকার এই মামলাকে প্ররোচিত করবে।

আমর ভয় হয় ... শংকা হয় ...এ মামলার রায় নিশ্চিতভাবে রাজাকারদের পক্ষে যাবে। এই মামলা ফলপ্রসূ করতে হলে রাষ্ট্রকেই করতে হবে। তুলে নিতে হবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে করা মামলাগুলো অথবা ব্যক্তিগত মামলার পাশাপাশি রাষ্ট্রকে মামলা করতে বাধ্যকরাটাই হবে এখনকার সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। তাই দেশ জুড়ে মামলা হবে একটি এবং অবশ্যই সেটি হতে হবে রাষ্ট্রীয় উদ্যেগে। সকল রাজাকাররা একই অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের সাথে বেশ কয়েকটি আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন আলোচনার মাধ্যমে ফলাফল এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মুক্তির বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা হয়েছে। সবক’টি রাজনৈতিক দল একজোট হয়ে, মুক্তি যোদ্ধারা সমন্বিত ভাবে সোচ্চার হয়ে , লেখক, বুদ্ধিজীবী সংস্কৃতিকর্মীদের একটা বলিষ্ট ভুমিকা নিয়ে সরকারকে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলাটির দায়িত্ব নেয়ার জন্য প্রয়োজনে আলোচনা হতেই পাবে । যথা শ্রীঘ্র এই উদ্যোগ নিয়ে সরকারকে বাধ্য করতেই হবে।

তবেই ’৭১ এর যুদ্ধঅপরাধীদের বিচার করা সম্ভব। অন্যথায় গভীর রাতে কোন একদিন এসে হয়তো ঘাতকেরা মোজাফ্ফর আহমেদের রগকেটে ফেলে রেখে যাবে... তখন হয়তো মোজাফ্ফর আহমেদের উত্তরসূরীদের তার পিতা হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে আরো ৩৬ বছর কেটে যাবে... বিদ্রঃ লেখাটি একই সাথে সচলায়তনেও প্রকাশিত হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.