আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিকার

mahbub-sumon.com

ছোট্ট বেলা থেকেই শিকারের প্রতি প্রচন্ড ঝোঁক। এয়ারগান দিয়ে হাতে খড়ি , রাইফেল দিয়ে শেষ। বয়স কতোই বা হবে তখন , এই ১০ কি ১১ বছর হবে আমার তখন। উত্তর বংগের এক কোনায় ছোট্ট এক অজপাড়া গাঁয় থাকি তখন। একবার রংপুর থেকে কিছু অতিথি আসলেন "আইনত নিষিদ্ধ" পাখি শিকারে।

গন্তব্যঃ তিস্তার চর। উনারা ছিলেন সমাজের অতি গন্য-মান্য ব্যক্তি, আইনের উর্ধে। চখা-চখি, রাজহাঁস দিয়ে শিকার শুরু বিশাল সাদা বক দিয়ে যার শেষ । ছইয়ে ডাকা ছোট্ট নৌকায় তিস্তার চরে চরে ঘুড়ে বেড়ানোর কথা এখনো মনে আছে। কবিগুরু নৌকায় থাকলে হয়তো ২/১টা কবিতা নামিয়ে ফেলতেন, কিন্তু আমাদের ছিল রক্তের নেশা।

বন্দুকের গুড়ুম গুড়ুম শব্দ রক্তে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছিলো। সারাদিন শিকার শেষে পরিতৃপ্ত মনে স্থানীয় চেয়ারম্যানের বাড়ীতে বিশাল বিশাল রুই মাছ ভাজা, ঝাল খাসীর মাংস , সাথে গরম গরম সরু চালের ভাত খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলি আমরা, কিন্তু মনোঃকষ্টে ভুগি রাজহাঁস শিকার না পাবার দূঃখে। বাসায় এসে গরম গরম ভাতের সাথে চখার মাংসের ভুনা। সাথে এক টুকরো পাতি লেবু। অসাধারন।

অনেক শিকার করেছি জীবনে। হাতের সই অসাধারন ছিলো একসময়। হাতে অস্ত্র উঠলে অন্য রকম কিছু মনে হতো নিজেকে। খুনের নেশা চেপে যেতো। আসলেই অস্ত্র মানুষকে পরিবর্তন করে দেয়।

-------------- বিঃদ্রঃ আমি এখন আর শিকার করি না, প্রচন্ড ঘৃনা করি এ জিনিসটাকে। তবে ঢাকায় থাকলে মাঝে মাঝেই অস্ত্রটাতে মাঝে সাঝে হাত বুলাই পরম মমতায়, নিজের মাঝে পরিবর্তনটা টের পাই ঠিক তখনই। নিজের কাছেই নিজেকেই ভয় লাগে তখন। আসলেই অস্ত্র মানুষকে পরিবর্তন করে দেয়।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।