আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৃহৎ পুঁজির কোম্পানি ডিএসই

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অন্যতম বড় মূলধনি কোম্পানি হতে যাচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদা (ডিমিউচুয়ালাইজেশন) হওয়ার পর স্টক এক্সচেঞ্জটি পুরোপুরি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হবে। আর তখন সেটির পরিশোধিত মূলধন হবে এক হাজার ৮০৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
সম্প্রতি ডিএসইর পক্ষ থেকে যে ডিমিউচুয়ালাইজেশন কর্মসূচি (স্কিম) তৈরি করা হয়েছে, তাতে এই পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিমিউচুয়ালাইজেশন কর্মসূচিটি এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।


বর্তমানে ডিএসই শেয়ার দ্বারা বিভাজিত অলাভজনক একটি কোম্পানি। অর্থাৎ ডিএসইর মুনাফার বণ্টন করা যায় না। সেই কারণে বছর বছর এটির মুনাফা সংস্থার নিজস্ব হিসাবে জমা হতে থাকে। আর এটি শুধু ডিএসইর প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর এটি হবে শতভাগ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।

বছর শেষে কোম্পানিটি যা লাভ করবে তা লভ্যাংশ আকারে শেয়ারধারীদের মধ্যে বিতরণ করা যাবে। প্রাথমিকভাবে ডিএসইর বর্তমান সদস্যরাই এই শেয়ারধারী হবেন। তবে ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর এই শেয়ার হাতবদলের সুযোগ থাকছে।
বিভিন্ন সূত্রে খবর নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে দেশীয় সর্বোচ্চ পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি হচ্ছে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেড বা বিআইএফএফএল। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) প্রকল্পে অর্থায়নের উদ্দেশ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই কোম্পানিটি গঠিত হয়।

২০১১ সালের মার্চে যাত্রা শুরু করা বিআইএফএফএলের পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা। কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে এই তথ্য রয়েছে। পরিশোধিত মূলধনের দিক থেকে এখন পর্যন্ত এটি দেশীয় সর্ববৃহৎ মূলধনি কোম্পানি হলেও ভবিষ্যতে এই স্থান দখল করতে যাচ্ছে ডিএসই।
সংঘস্মারক থেকে ও সংস্থাটির একাধিক প্রবীণ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিএসইর বর্তমান পরিশোধিত মূলধন মাত্র পাঁচ লাখ টাকা, যা ২৫০ শেয়ারে বিভাজিত।

প্রতিটি শেয়ারের মূল্য দুই হাজার টাকা। সংঘস্মারক অনুযায়ী, স্টক এক্সচেঞ্জটির প্রাথমিক মূলধন ১০ লাখ টাকা, যা ৫০০ শেয়ারের বিভাজিত। প্রতিটি শেয়ারের দাম দুই হাজার টাকা।
প্রস্তাবিত মূলধন কাঠামো
ডিএসইর তৈরি করা প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রায় এক হাজার ৮০৪ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের পাশাপাশি এটির অনুমোদিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
ডিএসই বলছে, এটির পরিশোধিত মূলধন ১৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ শেয়ার ধারা বিভাজিত থাকবে।

প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালু হবে ১০ টাকা। আর দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকার অনুমোদিত মূলধন বিভাজিত হবে ২৫০ কোটি শেয়ারে। পরিশোধিত মূলধনের ভিত্তিতে বিভাজিত ১৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ শেয়ার বর্তমান ২৫০ সদস্যের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা হবে। এতে একেকজন সদস্য পাবেন ৭২ লাখ ১৫ হাজার ১০৬টি শেয়ার। এরমধ্যে ৬০ শতাংশ শেয়ার ব্লক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে হবে।


এই ২৫০ জন সদস্যই ডিমিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী প্রাথমিক শেয়ারধারী হিসেবে বিবেচিত হবেন। অর্থাৎ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে যাত্রার শুরুতে স্টক এক্সচেঞ্জটিতে একেকজন সদস্যের বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে সাত কোটি ২১ লাখ ৫১ হাজার ৬০ টাকা।
হাজার কোটি টাকার বেশি মূলধন
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে হাজার কোটি টাকার ঊর্ধ্বে পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি রয়েছে মাত্র ছয়টি। এগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, গ্রামীণফোন, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, এক্সিম ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংক।
এদের মধ্যে সর্বোচ্চ মূলধনের কোম্পানি হলো ইসলামী ব্যাংক, যার পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ৪৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

এরপর যথাক্রমে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক (এক হাজার ৪১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা), গ্রামীণফোন (এক হাজার ৩৫০ কোটি ৩০ লাখ টাকা), লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট (এক হাজার ১৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা), এক্সিম ব্যাংক (এক হাজার ১৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা), প্রাইম ব্যাংক (এক হাজার ২৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা)।
মতামত
দেশের অভ্যন্তরে অন্যতম বড় মূলধন নিয়ে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে ডিএসইর যাত্রা শুরু করতে যাওয়া প্রসঙ্গে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজনেস অনুষদের শিক্ষক মোহম্মদ মূসা প্রথম আলোকে বলেন, বেশি পরিশোধিত মূলধন নিয়ে কোনো কোম্পানির যাত্রা শুরু করা মানে হলো, এটির প্রাথমিক শেয়ারধারীরা বেশি অর্থ তাতে বিনিয়োগ করছেন। পরবর্তী সময়ে বাজারে শেয়ার ছাড়ার ফলে এটির মূলধন আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলধনের দিক থেকে শক্তিশালী একটি অবস্থান নিয়ে কোম্পানিটির যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে, এটি ভালো দিক। তবে শঙ্কা আছে ভবিষ্যৎ নিয়ে।

কারণ, মূলধন বেশি মানেই শেয়ারের পরিমাণ বেশি। বছর শেষে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস হিসাব করা হবে শেয়ারের ভিত্তিতে। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.