আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেইসব দিনগুলি (নামাযে চুরি)

তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।

টিলার উপর বাড়ি। বাড়ি থেকে রাস্তায় নামা খুব সহজ কিন্তু উঠতে গেলে কোমরে ব্যথা। আমাদের এলাকাটা এই রকম। সব বাড়িগুলো টিলার উপরে।

বাড়ির চারদিকে বাশ ঝাড়। বাড়ির সীমানা পেরুলেই মসজিদ। গ্রামের মসজিন কিন্তু রক্ষনাবেক্ষন থেকে শুরু করে সবকিছুই দেখতে হতো আমাদের। ফ্যামেলির লোকজন গেলেই একটা জামাত হয়ে যেতো। মসজিদের আবাদটা মোটামোটি আমাদেরই করতে হতো।

আযান দেওয়া থেকে শুরু করে মসজিদ পরিষ্কার পর্যন্ত। কড়াকড়ি ছিল প্রচন্ড। কোন অবসহায় জামাত মিছ করা যাবে না। নামায না পড়তে খাবার বন্ধ। বাড়ি থেকে মেইন রাস্তা দিয়ে মসজিদে যেতে 5 মিনিট।

অথচ কাটা তারের বেড়ার উপর দিয়ে লাফ দিয়ে গেলে 2 মিনিট। সময়ের সঠিক মুল্য দিতে গিয়ে আমরা সর্টকার্ট রাস্তাটাই বেছে নিতাম। ফলাফল স্বরুপ লুঙ্গি শেষ। শীতের সময়টা ছিল বেশ কষ্টের। পুকুরের ঠান্ডা পানি দিয়ে অযু করা।

সব কিছু করা গেলে ও পা ধুতে গিয়ে যতো সমস্যা। তাই চোরাই পথ বেছে নিতাম। অযু করতাম পা ধুয়া ছাড়াই। মাঝে মাঝে মায়ের হাতে ধরা । মা কান মলে দিতো।

কিন্তু সাধারন কান মলা খেয়ে কি আর কাজ হতো। আবার কোন কোন সময় অযু না করেই নামায। আছরের নামায ছিল সাধারনত 5:15। আর কার্টুন ছবি হতো 5:30। আছরের নামাযের পর তাসবিহ এবং হাদিস পড়া শেষ হতে হতে কার্টুন যায় যায় অবসহা।

সেটা তো কোন ভাবেই মেনে নেয়া সম্ভব ছিল না। পারলে নামায অর্ধেক পড়েই দৌড় দেই। কাটর্ুন মিছ করা যাবে না কোনভাবেই। হুজুরকে বলে নামাযের সময় কিছুটা এগিয়ে আনা হলো কিন্তু গ্রামে দাইমি মুসলি্ল বলে একটা হুযুগ আছে। নামাযের সময় হওয়ার পরও দাইমি মুসলি্লর জন্য অপেক্ষা করতে হতো।

শেষ পর্যন্ত সব কয়টা ভাই মিলে একটা ক্যাচাল লাগালাম। আমাদের ফ্যামেলিতেই প্রায় 10 জন মুসলি্ল সব সময় মসজিদে জামাতে নামায পড়ে তাই আমাদের কথাই ফাইনাল। টাইম মতো নামায পড়তে হবে। কারো জন্য অপেক্ষা করা চলবে না। হুজুর ও সব সময় আমাদের পক্ষে থাকতেন।

সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে সন্ধ্যার চা পর্যন্ত আমাদের বাড়ি থেকে যেতো। আমাদের বিরুদ্ধে গেলে কি হবে উনি ভালো করেই জানতেন। তবে মাঝে মাঝে বেশি কিছু করে ফেল্লে বাসায় নালিশ হতো তখন আমাদের একটু উপর মালিশ হতো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।