আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীরা যেখানে নির্যাতনকারী(যে নির্যাতন নিয়ে কোন দিন আন্দোলন হয় না,বিচার হয় না,হবেও না)

দেশটা আমাদের। এর জন্য ভাল কিছু করতে হলে আমাদেরই করতে হবে। Mail:rabiul@gmail.com কিছু সংখ্যক দুষ্ট প্রকৃতির সবল মানুষ আছে যারা একটু নিরীহ দূর্বল মানুষ পেলেই তার উপর অত্যাচার শুরু করে। দূর্বল মানুষটি পুরুষও হতে পারে আবার নারীও হতে পারে। সবল মানুষটিও ঠিক পুরুষ হতে পারে আবার নারীও হতে পারে।

সুযোগ পাইলে কেউ কম যায় না। বর্তমান সমাজে নারীরা দূর্বল তাই তার চাইতে শক্তিশালী কিছু সংখ্যক দুষ্ট প্রকৃতির পুরুষরা তাদের উপর নির্যাতন করে যায়। আর যেহেতু পুরুষ কাজটা করেছে আর ভিকটিম নারী তাই সেটা নিয়ে মাঝে মাঝে আন্দোলন হয়,কিছু দিন নিউজটা পেপারে থাকে তারপর হারিয়ে যায়। শাস্তিও হয়তো কদাচিত হয়। কিন্তু কিছুতেই বন্ধ হচ্ছেনা কারণ ভিকটিমরা আর্থিকভাবে বা সামাজিকভাবে দূর্বল অর্থাত দূর্বল মানুষ।

সুযোগ পাইলে কিছু সংখ্যক দুষ্ট প্রকৃতির পুরুষের মতো দুষ্ট প্রকৃতির নারীরাও যে কম যান না সেটাই তুলে ধরার জন্য আজ এই লেখা। কিন্তু নারীদের এইসব অত্যাচার তেমন প্রকাশ পায় না তাই বিচারের মুখোমুখি তেমন হতে হয় না। পুরুষরা নির্যাতন করলেও অনেক নারীরাই তা প্রকাশ করেন না অনেক সময় নিজের মান সম্মানের কথা ভেবে। যখন সব প্রকাশই হয়ে যায় তখন অনেকে বাধ্য হয়ে সব প্রকাশ করেন। অল্প কিছু ক্ষেত্রে কিছু সংখ্যক নারী যারা প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন তারাও প্রশাসনের সহযোগিতা পান না।

পুরুষের নির্যাতনের শিকার নারীরা তাও প্রতিবাদ করতে পারে কিন্তু নারীদের এই সব নির্যাতনের শিকার মানুষরা খুবই দূর্বল প্রকৃতির। তাই প্রতিবাদও হয় না। প্রথমে আমার নিজের দেখা কয়েকটা ঘটনার কথা বলি। আমি যে ছাত্রীকে পড়তাম তার মা বাবা দুইজনই চাকরী করেন। ছাত্রী তখন ক্লাস টুতে পড়তো।

বাসায় একজন কাজের মেয়ে ছিল। সেই মেয়ের কাজ ছিল ছাত্রী আর তার ছোট বোনকে দেখাশুনা করা। সেই কাজের মেয়েটার মা মারা যায় আর বাবা আরেক বিয়ে করে ফেলে। তার বাবা তাকে এই বাসায় দিয়ে গেছে। এখানে সে কাজ করে আর তার বাবা মাস শেষে এসে বেতন নিয়ে যেত।

কাজের মেয়েটা কিছুই পেত না। আর কাজের মেয়েকে সারা দিন কাজ করতে হতো আর একটু ভুল হলেই মার। ছাত্রীর মা বিকেলে এসেই মার দিতো। এমন বদ মেজাজী মহিলা আমি আমার জীবনে দেখি নাই। রান্না করা,ঘর পরিষ্কার রাখা,সকলের কাপড় চোপড় ধোয়া আর ছাত্রীর ছোট বোনকে দেখতে দেখতেই তার জান শেষ আর দিন শেষে সারাক্ষণ আতংকে থাকতো ছাত্রীর মা আবার তাকে কোন ভুলের জন্য মারবে।

ঘরের জানালায় কেন ময়লা,বাচ্চার দুধ কেন আনতে না আনতেই শেষ হয় চুরি করছ নাকি?জামা কি ধুইলি এত নোংরা কেন,পরিষ্কার করার সময় দেখস নাই কেন?রান্নার পাতিল কেন এত নোংরা থাকে?বাচ্চার জ্বর হইলো কেন?কি করছস ঠান্ডায় ফেলে রাখছিলি নাকি?আরো কত প্রশ্ন আর সাথে বোনাস হিসেবে মাইর। আমি রাতে পড়াতে যেতাম আর এই দিনগুলোতে প্রতিদিনই মেয়েটাকে বকা খেতে দেখতাম আর মেয়েটার কান্না শুনতাম। বেতের মার,খুন্তির মার সবই তাকে সইতে হতো। মেয়েটা কিন্তু আস্তে কাদতো না,জোরে জোরেই কাদতো যা অপর বাসা থেকে অবশ্যই শুনা যেত কিন্তু ওই বিল্ডিংয়ের ৮টি ফ্লাটের কেঊ কোনদিন প্রতিবাদ করেনি। মেয়েটির পালানোর কোন সুযোগ ছিল না কারণ যখন ছাত্রীটির মা বাবা বাহিরে থাকতো সারাক্ষণ বাহির থেকে তালা দেয়া থাকতো।

ছাত্রীর বাবাও মাঝে মাঝে ভয়ে মহিলাকে বাধা দিতো কিন্তু লাভ হতো না উল্টা ছাত্রীর বাবাকেও কথা শুনতে হতো। ছাত্রীকে বলতাম তার মাকে এই সব করতে নিষেধ করতে। কিন্তু তার মা কোন কথাই কেয়ার করতো না। ফলে ছাত্রীও তার মায়ের পক্ষে ছিলো না। ছাত্রীর বাবাও ভয়ে থাকতো যে কাজের মেয়েকে মেরেই ফেলে!!ছাত্রীর মা বাবার অনুপস্থিতিতে একদিন কাজের মেয়ের কাছে আমি সব ঘটনা শুনি আর তার হাত ও পায়ে গরম পানির দেয়ার ফলে কেমন দাগ হয়ে গেছে সেটাও দেখায়।

তবে আমার পা ধরে বলেছিলো আমি যদি এসব ছাত্রীর মায়ের কাছে বলি তাকে মেরে ফেলবে। আমি এর কিছু দিন পর টিউশনিটাই ছেড়ে দিই। যা হোক ওই কাজের মেয়েটা ছাত্রীর সহযোগিতায় পালিয়েছিলো,তার আগেও আরেক মেয়ে পালিয়ে বেচেছিলো। এখন আর তাদের ঘরে কোন কাজের মেয়ে নাই। ছাত্রী বড় হয়ে যাওয়ায় সেই সব সামলায়।

এখানে কাজের মেয়েটা দূ্র্বল ছিলো বলে তার উপর অত্যাচার হয়েছে এবং এর কোন শাস্তিও হয়নি। ওই মহিলাই বা এভাবে কাজের মেয়েকে মেরে কি মজা পেত জানি না। এবার ২য় ঘটনার কথা বলি। আমার বড় ভাই তখন ময়মনসিংহ মেডিকেলে ৫ম বর্ষে পড়তো। আম্মা তখন চরপাড়ায় বড় ভাইয়ের সাথে একটা বাসা ভাড়া করে থাকতেন।

সেই ফ্লাটের পাশের বাসায় একটা মহিলা থাকতো যার মুখ মন্ডল পুড়ে যাবার কারণে এত কদাকার ছিলো যে তার মুখের দিকে তাকানো যেতো না। সেই বাসায় একটা কাজের ছেলে এক সময় কাজ করতো যার বয়স ছিলো মাত্র ছয় বছর। ওই বয়সের একটা ছেলে কিন্তু প্রচন্ড দুষ্ট হয়। ওই বয়সে সে অবশ্যই দুষ্টামি করবে,খেলবে কিন্তু ওই মহিলা তাকে দিয়ে ঘরের সব কাজ করাতো,সারাক্ষণ তাকে কাজে ব্যস্ত রাখতো। কিছু ভুল হলেই মার।

একদিন দুই এভাবে ছেলেটি চার মাস সহ্য করেছে। একদিন মহিলা দুপুরে ঘুমিয়েছে। তখন ছেলেটি রান্না ঘরে কড়াইয়ের মধ্য তেল গরম করে এনে সরাসরি মহিলার মুখের মধ্য ঢেলে দেয়। ছেলেটি তেল ঢেলে দিয়ে মোটেও পালায় নাই বরং পাশে দাড়িয়ে সব দেখল। মহিলার জ্ঞান ছিল না কিন্তু মুখমন্ডল শেষ।

পরে সবাই যখন ছেলেটিকে ধরলো ছেলেটি দেখালো তার পিঠের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে মহিলা খুন্তির ছ্যাকা দেয়নি। যা হোক ছেলেটি এই কর্ম না করলে তার উপর যে অত্যাচার হয়েছে সেটা প্রকাশ পেত না। পেপারে আমরা যখন দেখি গৃহকত্রী কতৃক গৃহপরিচারিকার উপর নির্মম নির্যাতনের খবর তখন আসলে মনে তেমন দাগ কাটে না। নির্যাতন যে কত ভয়াবহ হয় যে অনেকে মারাই যায়। প্রথম দিনই যা একটু শেষের পাতায় বা প্রথম পাতায় ছোট করে নিউজ হয়।

ব্যাস ওই টুকুই। আজ পযন্ত কোন গৃহকত্রীর শাস্তি হয়েছে আমি অন্তত শুনি নাই। এদের জন্য কেউ কোন দিন আন্দোলন করবে না,এদের পাশে কেউ কোন দিন দাড়াবেও না। নির্মম হলেও সত্য হলো গৃহকত্রী নিজেই এই নির্মম নির্যাতনের হোতা এবং একজন নারী। নিজের সন্তানের জন্য যেমন তার মায়া হয় অন্যর সন্তানের উপর তার সেই মায়া কোথায় যায় আমি জানি না।

++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++ এবার আসি নারীদের আরেক ধরণের নির্যাতন প্রসংগে। কোন সন্তানের মা যদি অল্প বয়সে সন্তান রেখে মারা যায় আর তার বাবা আরেক বিয়ে করেন তবে দেখা যায় ন্তুন মা সে সন্তানের উপর চলায় মানষিক এবং আনেক ক্ষেত্রে শাররীক নিযতন। সেই শিশু সে সময় কি যে অসহায় থাকে। এই রকম অসহায় অবস্থায় কিভাবে এক জন নারী সে শিশুর উপর নিযতন চালাতে পারেন আমি জানি না কিন্তু এটা সত্য যে এই ধরনের নির্যাতন নারীরা চালান যতক্ষণ না সে শিশুকে কোন হোষ্টেল বা অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করা না হয়। আমার নিজের বন্ধুর জীবনেই এই ঘটনা ঘটে।

বন্ধু বাবা ছিলেন বি আর টি এর পরিচাল্ক। মা মারা যাবার পর তার বাবা অন্য বিয়ে করেন এবং সত মায়ের অত্যাচারে টিকতে না পেরে মাকেই উল্টা মেরে বসে এবং শেষ পযন্ত ছোটবেলা থেকেই নানার বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। অনেক কথাই শুনি,পেপারেও পড়ি কিন্তু এই অসহায় মানুষের পাশে তাদের বাবারাও দাড়াতে পারেন না। মানুষের এত অসহায় অবস্থার সময় এই নির্যাতন করে এই সব নারীরা কি মজা পান জানি না। ++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++ এবার আসি নারীদের আরেক টাইপের নির্যাতনের কথায়।

ঘরে নতুন বৌ আসবে। শাশুড়ির দায়িত্ব আস্তে আস্তে নতূন বৌয়ের হাতে চলে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক বৌ যেন কোন ভাবেই শশুর শাশুড়ীকে পছন্দই করতে পারেন না। কেন পারেন না জানি না তবে ওই বয়সে মানুষ খুবই অসহায় অবস্থায় থাকে। তাদের একমাত্র সম্বল থাকে তার সন্তানরাই কিন্তু নতুন বৌ বাসায় এসে শুশুর শাশূড়ির উপর শুরু করেন মানষিক নির্যাতন আর নানাভাবে অপমান।

শেষে বাধ্য হয়ে স্বামীর মা বাবা কে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়। স্বামীও এক্ষেত্রে কিছু বলে না। এই নির্যাতনের কোন বিচার দেশে আজ পযন্ত হয় নাই,হবেও না। কিন্তু যে এই বিপদে পড়ে সে জানে তার এক একটা দিন কেমন যায়। ওই ব য়সে টাকা পয়সাও মানুষের তেমন কাযে আসে না।

এখানেও নারীরাই প্রধান নির্যাতনকারী। আর নির্যাতনের স্বীকার স্বামীর মা বাবা অতি বৃদ্ধ আর দূর্বল বলে তাদের পাশে কেউ দাড়ায় না। পেপারে বৃদ্ধাশ্রমের কথা সবাই পড়ে,কেন তারা ওইখানে সেটাও জানে কিন্তু তাদের রক্ষার কোন আইন নেই। সরকারও তাদের পক্ষে নেই। এখানেও দেখা যায় দুষ্ট প্রকৃতির কিছু নারীরা মানুষের আসহায় অবস্থারই সুযোগে নির্যাতন করে চলে যাদের কোন বিচার হয় না।

++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++ এবার আসি নারীদের আরেক ধরণের নির্যাতনের কথায়। এখানে সয়ং শাশুড়ী বৌয়ের উপর নির্যাতন করে থাকে। যৌতুকের চাপ,সারাদিন ধরে নানা রকম শাররীক পরিশ্রমের কাজ করানো এবং অপমান করতে করতে ওই মেয়ের জীবন শেষ। এমনকি বৌকে মেরে ফেলারও অনেক রেকর্ড আছে। অবশ্য বৌ যদি গরীর হয় তা হলেই এটা সম্ভব।

বৌ প্রভাবশালী ঘরের সন্তান হলে এটা হয় না। এই সব নির্যাতনগুলো আমাদের সমাজে অহরহ হচ্ছে কিন্তু এই ধরনের নির্যাতন যে একটা নির্যাতন সেটাই কেঊ মনে করেন না। করুন ব্যপার হলো এই নির্যাতন গুলো এমন শ্রেনীর উপর হয় তারা এসবের প্রতিবাদও করতে পারে না। আর নিযতন করে সয়ং আরেকজন নারী। তবে পুরুষদের নির্যতন নিয়ে যত কথা হয় নারীদের বেলায় তা হয় না এবং নারীরা খুন খারাবী বা সরাসরি মারা মারি করে না।

তারা নির্যাতন করে গোপনে আর বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দূর্বলের প্রতিই শাররীক এবং মানষিক নির্যাতনই তারা বেশী করে যেটা দেখা যায় না যেটা শুধু মাত্র ভূক্তভূগীই হাড়ে হাড়ে টের পায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।