আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউরোপের গোয়েন্দারাও কম যান না

এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা নথিপত্র ধরে এত দিন কেবল মার্কিন গোয়েন্দাদের দোষ দেওয়া হয়েছে যে, তাঁরা বেআইনিভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গোপন তথ্যাদি হস্তগত করেছেন। কিন্তু ইউরোপের বিভিন্ন ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের চরেরাও যে একই পদ্ধতিতে একই রকম তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছেন, এবার সেটার হাঁড়ি ফাটিয়েছে ‘দ্য গার্ডিয়ান’।

পত্রিকাটি দাবি করেছে, পশ্চিম ইউরোপের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইন্টারনেট ও ফোনে গণ-আড়ি পাতছে। অথচ এসব রাষ্ট্রের সরকারেরা এখন একই ধরনের কাজের জন্য দিন-রাত যুক্তরাষ্ট্রের নিকুচি করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক ঠিকাদার এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা নথি ঘেঁটে ‘দ্য গার্ডিয়ান’ বলছে, ইউরোপের গোয়েন্দারা মার্কিন গোয়েন্দাদের মতোই ফাইবার অপটিক তার থেকে ফোনালাপ ও অন্যান্য তথ্য রেকর্ড এবং বেসরকারি টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে গোপনে কাজ করছেন।



পত্রিকাটি বলছে, ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা গভর্নমেন্ট কমিউনিকেশন্স হেডকোয়ার্টার্সের সঙ্গে কাজ করতে করতে (জিসিএইচকিউ) জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, সুইডেন ও স্পেনের গোয়েন্দারা এসব দক্ষতা রপ্ত করেছেন।

এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় জার্মানি ও ফ্রান্স বিষম লজ্জায় পড়ে গেছে। কারণ দেশ দুটি গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রকে তার গুপ্তচরবৃত্তির জন্য বহুবার অভিযুক্ত করেছে এবং কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। এ দেশ দুটিই মার্কিন গোয়েন্দা তত্পরতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠ থেকেছে।

ব্রাজিলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জার্মানি গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক বিশেষ কমিটির কাছে এক খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে।

তাতে বলা হয়, এসব অতিরিক্ত গোয়েন্দাগিরি, তথ্য সংগ্রহে বাড়াবাড়ি ও গোপনীয়তা ভঙ্গের সংস্কৃতি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।

এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা নথিগুলো থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে জানা যায়, এনএসএর গোয়েন্দারা জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের ফোনে আড়ি পাতছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। দাবি ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি বন্ধের।

‘দ্য গার্ডিয়ান’ বলছে, জিসিএইচকিউয়ের ফাঁস করা নথিগুলো থেকে জানা গেছে, ইউরোপের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান উপদেষ্টা হলো ব্রিটিশ গোয়েন্দারা।

প্রতিটি রাষ্ট্রের আইনের ফাঁক গলে কীভাবে এসব অন্যায় কাজ করা যায়, সে ব্যাপারে দীক্ষা দিয়ে থাকেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা।

জিসিএইচকিউয়ের ২০০৮ সালের একটি রাষ্ট্রওয়ারি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ‘দ্য গার্ডিয়ান’ বলছে, ব্রিটিশ গোয়েন্দারা জার্মানির বুন্দেসনাইকরিখটেনডিন্সট বা বিএনডির প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। ওই প্রতিবেদনে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা বলেন, জার্মান গোয়েন্দাদের আছে ‘বিপুল প্রাযুক্তিক ক্ষমতা ও ইন্টারনেটের অতল পর্যন্ত যাওয়ার অসাধারণ দক্ষতা’।

জিসিএইচকিউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমরা বিএনডিকে সহায়তা করছি। ’

ব্রিটিশ গোয়েন্দারা একইভাবে ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেকশন জিনিরাল দে লা সিকিউরিটি এক্সটেরিয়ুরের (ডিজিএসই) প্রশংসাও করে।

‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানায়, পশ্চিম ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম হলো ইতালি। দেশটি ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের কাজকর্মে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল এবং তাদের দেখানো পথে হাঁটতে চায়নি।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।