আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজপথে তোরণ, দুর্ভোগে জনগণ

আমি উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলতে চাই ইট-পাথরের ঢাকায় যানজটসহ দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এসব যন্ত্রণার ষোলকলার বাইরেও থাকে রাস্তা সংকুচিত করার নানা অশুভ প্রতিযোগিতা। রাস্তা দখলের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরাও কম দায়ী নন। এখনও রাস্তায় তোরণ নির্মাণের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি তারা। রাজনৈতিক দলগুলোর এসব তোরণ যান চলাচলে যথেষ্টই বাধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

রাজনীতি চর্চার একটা বড় অংশজুড়ে রয়েছে তোরণ নির্মাণের ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী, এমপি, নেতা, পাতিনেতা, হবুনেতারা যখন এলাকায় বা কোনো রাজনৈতিক মঞ্চে যান তখন তাদের জন্য থাকে নানা আয়োজন। রাজপথে নেতাদের বরণে থাকে রাজকীয় তোরণ। আর এর অনেকগুলিই তৈরি করা হয় বেশকিছুটা রাস্তা দখল করে। আর দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।

সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এমনই একটি তোরণ স্থাপন করা হয় রাজধানীর বনানীতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি ছিল জাতীয় পার্টির ২৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। আর এ উপলক্ষে জাতীয় পার্টি (মহানগর উত্তর) বনানী মাঠে এক মহাসমাবেশের আয়োজন করে। এতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীকে সামনে রেখে বনানী মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ব্যস্ততম রাস্তা কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ওপর নির্মাণ করা হয় সুউঁচ্চ তোরণ।

এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তোরণটি মূল পর্বের অনুষ্ঠান শুরুর চারপাঁচ দিন আগে তৈরি করা হয়। ৫ জানুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তোরণটি এখনও সরানো হয়নি। শুধু তাই নয় রাস্তার উভয় পাশে কমপক্ষে একহাতের বেশি জায়গা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে এ তোরণটি। মোড় ঘুরাতে গিয়ে চোখের সামনেই তোরণের বাঁশের সাথে ধাক্কা লেগে উল্টে যায় শেরপুরের রিকসাচালক জসীমের খালি রিকসাটি। রিকাসাচালক জসীম বলেন, “অনেকদিন থেকে এই এলাকায় রিকসা চালাই।

ঠাওর না করতে পারার জন্য বাঁশের সাথে ধাক্কা লাগে। ” বনানীর অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা এটি। তোরণের রাস্তা ধরে পূর্বদিকে গেলে গুলশান-২, আর পশ্চিমে গেলে বনানী সিগন্যাল। রাস্তার বেশকিছু জায়গা দখল করে এটি তৈরি করা হয়। এ তোরণের জন্য সৃষ্টি হয় অতিরিক্ত যানজট।

এলাকাবাসী বলেন, এসব তোরণের কারণে মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। পুলিশের গুলশান জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) লুৎফুল কবীর পরিবর্তন ডটকম’কে বলেন, “তোরণটি এখনও আছে সেটা আমার জানা নেই। আর এ ধরনের অনুষ্ঠান আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে জানিয়েই হয়ে থাকে। কেউ কোনো অভিযোগ করলে পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। ” এদিকে বনানীর ১নং রোডেও রয়েছে অরেকটি বড় তোরণ।

৪ জানুয়ারি জাকের পার্টির ইসলামী মহা জলসা ও সম্মেলনকে সামনে রেখে এটি তৈরি করা হয়। এ তোরণটিও খানিকটা রাজপথের ওপর থাকায় স্বাভাবিক যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। গুলশান-২ দিয়ে বের হয়ে নতুন বাজারে গেলেও চোখে পড়বে একটি বিশলাকার তোরণ। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তৈরি করা হয়েছে এ তোরণটি। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যস্ত রাস্তার ওপরই তৈরি করা হয়েছে এটি।

তবে ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত স্থান ছাড়া দেয়াললিখন ও পোস্টার লাগানো যাবে না মর্মে আইন হয়েছে। আইন অমান্যকারীকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা জড়িমানা ও অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে । তবে বাস্তবিক অর্থে এ আইনের প্রয়োগ এখনও দেখা যায়নি। Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।