বালিগঞ্জের সার্কুলার রোডে প্রয়াত সুচিত্রা সেনের বাড়ির ছাদে মহানায়িকার পারলৌকিক কাজ সম্পন্ন করলেন মেয়ে মুনমুন সেন। মায়ের মৃত্যুর পর তার মুখাগি্ন করেছিলেন মুনমুন। তাই নিয়ম মেনে মৃত্যুর তিন রাত পর সোমবার তিনি শ্রাদ্ধশান্তির কাজ করেন। সঙ্গে ছিলেন মুনমুনের স্বামী ভরত দেববর্মণ, দুই নাতনি রিয়া ও রাইমা। প্রয়াত দিদিমাকে পানিদান করেন দুই নাতনি।

পুরো পারলৌকিক কাজ করালেন পণ্ডিত যুগলকিশোর শাস্ত্রী। গত দুই দিনের মতো সোমবারও গীতাপাঠ চলে। রবিবার নখ কাটা পর্বটি সারেন মুনমুন। সূত্র মারফত জানা গেছে, বাড়ির ছাদেই ধপধপে সাদা কাপড়ে ঢাকা একটি টেবিলের ওপর রাখা ছিল মহানায়িকার ছবি। ফুলের মালা দিয়ে ভরিয়ে তোলা হয়েছিল ছবির চারপাশ।

পাশেই জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ধূপকাঠি। মায়ের সেই ছবির পাশেই এ দিন সাদা শাড়ি পরে মুনমুন তার পুরো কাজ শেষ করেন, পাশে বসেই মাকে সাহায্য করেন রাইমা ও রিয়া সেন। তাদের পরনেও ছিল সাদা সালোয়ার-কামিজ। মুনমুনের স্বামী ভরত দেববর্মণের পরনেও ছিল সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে মুনমুনের নিকট আত্দীয়স্বজন ছাড়াও এসেছিলেন রিয়া-রাইমার বন্ধুবান্ধবরা, শেষকৃত্যের সময় যারা শ্মশানে ছিলেন তাদেরও কয়েকজন এ দিন উপস্থিত ছিলেন।

সকালেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফে প্রয়াত সুচিত্রা সেনের প্রতিকৃতিতে ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। বালিগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান কলকাতা করপোরেশনের চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ ব্যানার্জি। রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও যান মহানায়িকার বাড়িতে। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ কাটান সুব্রতবাবু। কথা বলেন মুনমুন সেনের সঙ্গে।

পরে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, 'নিয়ম-রীতি মেনেই মুনমুন তার মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া করেছেন'। আসেন বিশিষ্ট লোকসংগীত শিল্পী গোষ্ঠগোপাল দাস। গোষ্ঠগোপাল দাস প্রয়াত মহানায়িকার আত্দার শান্তি কামনা করে জানান, তার পরিবার যেন ভালো থাকে ঈশ্বরের কাছে এটাই প্রার্থনা করি। এ অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যম কিংবা সাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

এ দিনও মহানায়িকার বাসস্থান 'বেদান্ত'-এর সামনে সারা দিনই কৌতূহলী মানুষের আনাগোনা চলে।

পরে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান শেষে 'বেদান্ত'-এর বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিক এবং কৌতূহলী মানুষকে নিজে হাতে মিষ্টি ও ফল বিতরণ করেন মুনমুন সেন। ২৮ জানুয়ারি মহানায়িকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জানুয়ারি কলকাতার বেলভিউ নার্সিং হোমে প্রয়াত হন ৮৩ বছর বয়সী বাংলা ছবির কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেন।

 

 

।