আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জন্মদিনে হুমায়ুন তোরাব ।

আমার মাঝে আমি,নিজেকে বার বার খুজি । জয় হোক স্বপ্নের,সত্যি হোক জীবনের আশা । মানুষের মাঝে মানুষ,উড়ায় হৃদয়ের ফানুশ ।


মা,

আরেকটি ২৯ শে মাঘ চলে আসলো ,শীত চলে যাচ্ছে,২০ বছর আগের এই দিনে আমার আম্মুর কোলে এসেছিলাম এই দুষ্টু অভদ্র ক্ষ্যাত উপাধি পাওয়া এই আমি । ২০ বছর আগে মাঘ মাসের এক শুক্রবারে এসেছিলাম এই পৃথিবীতে ।

শুনেছি দুই হাতে মিষ্টি নিয়ে কাজ ফেলে ছুটে গিয়েছিল নানি বাড়িতে আমার বাবা । জন্ম নেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই এই পৃথিবী ছেড়েছো তুমি । তুমি বেঁচে থাকতে তোমার ফুলে যাওয়া শরীর দেখে ভয়ে পালিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি আমি অনেক । জীবনে এই ২০টি বছর পেরিয়ে আজ রাত্রি হলে হিংসা জাগে মনে,পাশের বাড়ির ছোট ছেলেটার তার মায়ের সাথে করা দুষ্টুমি দেখে বুক ফেটে যায় আমার । তার আম্মু যখন তাকে একবার মুখে ভাত তুলে দিতে বারবার ডাকতে থাকে,তার পিছে ছুটতে থাকে,আর ছেলেটা যখন বার বার দূরে পালিয়ে যেতে থাকে তখন আমার হাহাকারে ভরে যায় বুক,মাঝ রাতে যখন ঘুম ভেঙ্গে যায়,বুক ফেটে যায় তৃষ্ণাতে ,তখন মনে হয়,ঈশ তুমি যদি থাক্তে,আমার পানির চিন্তা করতে হত না ।

মাঝে মাঝে রাতে ভয়ে দুই চোখ এক করতে পারিনা তখন বারবার মনে চাই,ঈশ যদি একটা দিনের জন্যে তুমি বেঁচে থাকতে । ভার্সিটির বন্ধুরা যখন তাদের মাকে নিয়ে কিছু বলে,নানা রকম কথার পিঠে কথা সাঁজাতে থাকে,আমি চুপ করে শুনি,আর মনে মনে ভেবে নিই তুমি বধয় আমার সাথে এমনই করতে,দুষ্টুমি করলে কান মলে দিতে, মাঝে মাঝে মনের মধ্যে অদ্ভুত খায়েশ জাগে,যদি বাসাতে ফিরে একবার চিৎকার দিয়ে "মা" বলে জড়িয়ে ধরতে পারতাম তোমাকে । সারাদিন ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে সন্ধ্যায় তোমার সাথে গল্প করতাম । বলে দিতাম ডাইরিতে লিখা কাওকে না বলা গল্পগুলি । চুপি চুপি কানেমুখে বলে দিতাম তোমার দুষ্টূ ছেলের চুপিচুপি ভাললাগা মেয়েটির নাম ।

তোমাকে বলে দিতাম বাবার উপরে থাকা আমার সব অভিমানগুলি । শেষ মেশ শুধু একবার,শুধু একবার তোমাকে জড়িয়ে ধরতে চাই ,শুধু একবার মা বলে ডাকতে চাই । ।


আজ বিশ বছর পেরিয়ে ২১ এ পা দিয়ে কিচ্ছু চাওয়ার নেই,কিছুই পওয়ারও নেই । যা চেয়ে পাওয়া যাবে না তা চেয়ে কি লাভ বল?? আল্লাহর রহমতে ভালভাবে এই কয়টি বছর ভালভাবে বেঁচে থাকতে পেরে আমি বরং খুবই আনন্দিত ।

জীবনের সব চাওয়া পাওয়া যেমন পুরণ হয় না । তেমনি সব চাওয়া পাওয়া পূরণ হলে বেঁচে থাকার আনন্দ পাওয়া যায় না । সময় খুব দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে । আমার পরিচিত মানুষগুলি একে একে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে , আমিও একদিন একদিন করে তোমার কাছে যাওয়ার প্রহর গুনছি । হটাত কোন একদিন হয়তো আমিও টুপ করে ডুব মেরে চলে যাব তোমার কাছে ।

তুমি ১৯৯৬ সালে চলে যাওয়ার কারনে তোমাকে ভাল মত কখনো দেখতে পারিনি । বয়স যতই বাড়ছে আমার চলে যাওয়ার সময়ও তত এগিয়ে আসছে । আম্মু তুমি ভাল থেক ।




ইতি
তোমার দুষ্টু ছেলে হুমায়ুন তোরাব



আজ আমার জন্মদিন । আমার জন্যে আপানারা দোয়া করবেন ।




মায়ের কাছে লিখা আমার অন্য চিঠি গুলি ।

মা ও আমার মা

আম্মু কে লিখা আমার প্রথম চিঠি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।