আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইনসুলিন ট্র্যাজেডি

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন ইনসুলিন - ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মহৌষধ। কিন্তু এই ইনসুলিনই হতে পারে প্রাণঘাতী যদি এর সঠিক প্রয়োগ না হয়। আজ দুটো ঘটনা উল্লেখ করব যার মধ্যে একটা টিভিতে দেখা আর একটা এক পরিচিত বাড়ির ঘটনা, কিন্তু দুটাই সত্যি ঘটনা নিঃসন্দেহে। প্রথমে টিভিতে দেখা ঘটনার কথা উল্লেখ করছি। ইন্ডিয়ার 'লাইফ ওকে' চ্যানেলে একটা সিরিয়াল হয় য়া সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত।

সিরিয়ালটির নাম 'ইন্ডিয়া ফাইটস ব্যাক' ; সেখানে দেখা যায় একজন স্বার্থান্বেষী ডাক্তার এক ডায়াবেটিক রোগীর অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য তাকে মেরে ফেলার প্ল্যান করে আর সেই প্ল্যান কে বাস্তবায়িত করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয় তার ডাক্তারি বিদ্যার অপপ্রয়োগকে। সে রোগিনীকে ইনসুলিন এর ডোজ বেশি নিতে বলে এই বলে যে ভ্রমনের সময় বেশি করে ইনসুলিন নিতে হয়। এতে করে রোগিনী ভ্রমনরত অবস্থায় মারা যাবে আর রিপোর্ট আসবে ইনসুলিন এর ওভারডোজের কারণে মৃত্যু। বাস্তবেই রোগিনী মারা যায়। প্রথমে অজ্ঞান হয়, তারপর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু।

যদিও কুদরতের খেলায় ডাক্তার ধরা পরে যায় যা মুখোশ উন্মোচন করে দেয় এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের। যে ইনসুলিন ডায়াবেটিক রোগীদের প্রাণ রক্ষাকারী, সেই ইনসুলিনই প্রাণঘাতী হয় কী করে? চিকিৎসা বিজ্ঞানেই এর উত্তর নিহিত আছে। যদিও ইনসুলিন ব্লাড গ্লুকোজ কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়, অতিরিক্ত কম গ্লুকোজ কাম্য নয়। কারণ, আমাদের ব্রেইনের পুষ্টির জন্য গ্লুকোজ দরকার। অনেকেরই হয়তো বা জানা নেই কিন্তু আমাদের ব্রেইন বা মস্তিস্ক শুধুমাত্র গ্লুকোজ এর উপর নির্ভর করেই বেঁচে থাকে।

তাই যখন মস্তিস্ক তার প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ পায় না তখন তা কাজ করা বন্ধ করে দেয় যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে যায়। আর যদি প্রাণঘাতী নাও হয়, তাহলে হাইপো গ্লাইসেমিয়া নামক একটি পরিস্থিতির সূচনা হতে পারে। এতে মস্তিস্ক গ্লুকোজ পায় ঠিকই কিন্তু যতটা প্রয়োজন ততটা পায় না। আজকের দুই নাম্বার ঘটনাটা সেই হাইপোগ্লাইসেমিয়া ঘটিত এক সত্যি ঘটনা। ঘটনাটা আমাদেরই এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ার ঘটনা।

ইনসুলিন ওভারডোজের কারনে তার মৃত্যু ঘটেনি ঠিকই তবে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে তার মস্তিস্ক পাকাপাকিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে তিনি অ্যামনেশিয়ার শিকার হন। তিনি তার পরিচিত কাউকে আর চিনতে পারেন না। প্রাপ্তবয়স্কা হওয়া সত্বেও আচার আচরণে একটা শিশু শুলভ ভাব। তাই সবার কাছে অনুরোধ, ইনসুলিন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন।

মনে রাখবেন, ব্লাড সুগার হঠাৎ বেড়ে গেলেও এতটা ক্ষতি হয় না যতটা ক্ষতি হয় ব্লাড সুগার কমে গেলে। ডায়াবেটিক রোগীরা নিরাপদ থাকার জন্য সাথে একটা গ্লুকোজ স্প্রে অথবা মিষ্টি যাতীয় খাবার যেমন চকলেট অবশ্যই রাখুন যাতে করে ইমারজেন্সির সময় ব্যবহার করতে পারেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।