আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমেরিকা কি সন্ত্রাসী, জঙ্গিদের অভয়ারণ্য?

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

রাজনৈতিক আশ্রয়ের আড়ালে বাংলাদেশের একটি বিরাট সন্ত্রাসী গ্রুপ ও বিভিন্ন হত্যা এবং বোমা হামলার তালিকাভুক্ত আসামিরা নিউইয়র্কসহ আমেরিকার বাংলাদেশী অধ্যুষিত বিভিন্ন শহরকে তাদের অভয়াশ্রমে পরিণত করেছে। দেশে হত্যা মামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকার অভিযোগে পুলিশের তালিকাভুক্ত আসামিরা বিভিন্ন সরকারের সময়ে তাদের রাজনৈতিক গুরু অথবা প্রশাসনের সহায়তায় দেশ থেকে পালিয়ে এসে নিউইয়র্কসহ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে এসে প্রথমেই রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে আস্তে আস্তে কমিউনিটির সঙ্গে মিশে গিয়ে নানা সত্য-মিথ্যা গল্প প্রচার করে নিজেদের ‘বীর’ হিসেবে পরিচিত করেন। এটি প্রচার করে তাদের মতের রাজনৈতিক দলের শাখার নেতাকর্মীদের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্য করার পর একসময়ে সমাজে মিশে গিয়ে দেশে অর্জিত সম্পদ এনে এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং কেউ কেউ মিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নতুন পরিচয়ে জীবন শুরু করেন।
এসব তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী আমেরিকায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে যখন অবাধে বিচরণ করেন তখন প্রশ্ন উঠে এলে কি তারা দেশে তালিকাভুক্ত হত্যা ও বোমা হামলার আসামি? অনেক সময় তাদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানেও বীরদর্পে বিচরণ করতে দেখা যায় অথচ প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে বিশেষ ক্লিয়ারেন্স দিয়ে থাকে তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনী।

এই ঘটনায় অভিজ্ঞমহল মনে করছে এটি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনীর বড় একটি দুর্বলতা। আর সেটি দূর করতে বিদেশে অবস্থানরত এসব দাগী আসামির তালিকা, তথ্য ও ছবি থাকা উচিত তাদের কাছে।
দেশে হত্যা মামলা-বোমা হামলার আসামিদের সরকারী প্রতিষ্ঠানে অবাধ বিচরণ এবং তাদের আহ্বানের অনুষ্ঠানে দূতাবাস, কনস্যুলেট ও মিশন কর্মকর্তাদের উপস্থিতির বিষয়টিও কমিউনিটিকে দিধান্বিত করছে। কারণ যে সরকারের সময়ে এসব অপরাধী পালিয়ে আমেরিকায় আসছে সেই সরকারের আমলারা কী করে এদের ডাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে তাদের অনুমোদন করেন তা সত্যি বিস্ময়কর ঘটনা। এসব অপরাধী বিভিন্ন সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে বা দেশ থেকে অবৈধপথে তাদের উপার্জিত অবৈধ অর্থ এনে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বনে গিয়ে জাতে ওঠার জন্য তাদের অনুষ্ঠানে সরকারী কর্মকর্তাদের এনে কমিউনিটিকে দেখাতে চান যে তারা অপরাধী নন, তাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে তা মিথ্যা।

মাঝে মধ্যে দেশ থেকে আসা তাদের বিপক্ষ দলের বড় বড় রাজনৈতিক নেতার পাশে দাঁড়িয়ে ম্যানেজ করে ছবি তুলে নিজেদের অবস্থানও বড় করে দেখান এরা। এতে সহজেই নিরীহ সাধারণ প্রবাসীরা বিভ্রান্ত হন।
সম্প্রতি আলোচিত যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যা মামলার তালিকাভুক্ত এক আসামি যেমন এখন নিউইয়র্কে, তেমনি শীর্ষ সন্ত্রাসী টোকাই সাগরও এই শহরে বাস করেন। এখানে অনেক দিন আত্মগোপনে থেকে প্রশাসনের সঙ্গে দফারফা করে দেশে ফিরে গেছেন ঢাকার লালবাগের সন্ত্রাসী কমিশনার কালা খোকন। এই শহরেই দাপটে বসবাস করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রথম সরকারের সময়ে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার তালিকাভুক্ত মূল আসামিদের কেউ কেউ।

অন্যদিকে লস এ্যাঞ্জেলেস ও এর আশপাশের অনেক শহরে শিবিরের অনেক দুর্ধর্ষ ক্যাডার রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে বসবাস করার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন বলে প্রায়ই অভিযোগ করে আসছেন সেখানকার বাংলাদেশীরা। এদের কেউ কেউ বাফলা নামের সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায়ের পদও কখনও কখনও অলঙ্কৃত করেছেন।
এসব দাগী আসামি অনেকেই আবার জনারণ্যের শহরগুরোতে বসবাস না করে নিরিবিলি অনেক শহর বেছে নিয়েছেন। ফলে এরা লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে কী করছেন তা কেউ জানেন না।
দেশের আইন ও বিচার বিভাগের তালিকাভুক্ত অপরাধীদের এমনভাবে সাধারণ প্রবাসীদের সঙ্গে মিশে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ করতে সাধারণ প্রবাসীরা সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন হত্যা মামলা ও বোমা হামলার মতো জঘন্য অপরাধে অভিযুক্ত মামলার আসামিদের পূর্ণ জীবনবৃত্তান্তসহ ছবি দূতাবাসে টাঙ্গিয়ে রাখার।

সেই সঙ্গে স্থানীয় বাংলা সাপ্তাহিকগুলোতে বিজ্ঞপ্তি আকারে এসব অপরাধীর ছবিসহ অপরাধ কর্ম তুলে ধরার কথাও বলেছেন অনেকেই। বাংলাদেশী-আমেরিকান ক’জন আইনবিদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, যদিও আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের অপরাধী বা বন্দীবিনিময় চুক্তি নেই, কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ সরকারের উচিত এসব দাগী অপরাধীর বিস্তারিত তথ্য আমেরিকার এফবিআই ও বিচার বিভাগের কাছে সরবরাহ করা। এতে এসব অপরাধীকে তারা শনাক্ত করে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে গেলে তারা আইনের আওতায় পড়বেন। তাছাড়া এরা এখানে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে তাদের সহজে বিচারের আওতায় এনে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করাও সহজ হবে। সুত্র
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।