আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জিতেও স্বস্তি নেই আওয়ামী লীগে

দেশের চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও স্বস্তি নেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাত্রারিক্ত সহিংসতা, কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে সিল মারা এবং দল সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে স্থানীয় প্রসাশনকে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এতকিছু করেও প্রভাবশালী অনেক মন্ত্রী ও নেতার এলাকায় সুবিধা হয়নি। হেরেছেন দল সমর্থিত প্রার্থীরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সহিংসতা, কেন্দ্র দখল করে যেমন নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনি রাজনৈতিক বিরোধী দল বিএনপি জোটের হাতে সমালোচনার 'অস্ত্র' তুলে দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থী সমর্থন নিয়ে এমপিদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। আগামীতে মাঠের রাজনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সূত্রমতে, এমন বিজয় খোদ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকেও আহত করেছে। প্রধানমন্ত্রী দল সমর্থিত প্রার্থীদের এ ধরনের বিতর্কিত বিজয়ের বিপক্ষে। তিনি সাংগঠনিক কার্যক্রম বাড়ানো এবং প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিভাবে মোকাবিলা করে দল সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

কিন্তু অতিউৎসাহী কিছু নেতা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তারপরও আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার মূল্যায়ন- প্রথম ও দ্বিতীয় দফার নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। নিরপেক্ষতার মাপকাঠিতে ওই দুই দফার নির্বাচন সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য। তবে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দফার নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তিনটি নির্বাচনেই খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে।

এতে সরকারের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে নেতাদের অভিমত। তবে সরাসরি স্বীকার করেননি কেউই। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'স্থানীয় নির্বাচনে কমবেশি সব সময়ই সহিংসতা হয়। তবে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতা কম হয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছে বলেই সহিংসতা কম হয়েছে।

' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনের পর দল না গুছিয়ে এভাবে নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হয়নি। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে দল সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে কিছু এলাকায় নেতা-কর্মীরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছেন। দায়িত্বে থাকলে এর দায়ভার আমাদের ওপরই আসে। ' এতে সরকারের ইমেজ সংকট ও নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা সাময়িক। নতুন ইস্যু সৃষ্টি হলে মানুষ উপজেলা নির্বাচন ভুলে যাবে।

'

সূত্র জানায়, প্রথম দুই ধাপের ফলাফলের পর অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই দলের ভেতরে তোপের মুখে পড়েন। এরপর উপজেলাগুলোতে যাতে দলীয় প্রার্থী জয়লাভ করেন, সেজন্য এলাকায় যা যা করা দরকার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। শেষের তিন ধাপে নির্বাচনে সে অনুযায়ী কাজ হয়েছে। তবে এ ধরনের জয় আশা করেনি দলের নীতিনির্ধারণী মহল। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ৭৩ জন সদস্যের মধ্যে অনেকের উপজেলায় শোচনীয় পরাজয় হয়েছে।

সেখানে কী কারণে ভরাডুবি হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য এখন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে। আগামী শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে পরাজয়ের কারণে দলীয় সভানেত্রীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে, এমন আশঙ্কা কেন্দ্রীয় অনেক নেতার মনে। জানা গেছে, পাঁচ পর্বের উপজেলা নির্বাচনে কিছু কিছু এলাকায় প্রকট আকার ধারণ করেছিল দলীয় কোন্দল। প্রভাবশালী মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতারা যে প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই এলাকায় জনপ্রিয় নন। আবার অনেকে ছিলেন, যারা ব্যক্তি ইমেজের কারণে সহজে জয়ী হতে পারতেন।

কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন না করে বিরোধী পক্ষকে সমর্থন করেছেন। এসব কারণে প্রভাবশালী মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতাদের এলাকায় পরাজয় হয়েছে। এ নিয়ে ওই সব মন্ত্রী, নেতা ও এমপিদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, 'নির্বাচন কমিশন স্বাধীন হওয়ার কারণেই সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদেরও ছাড় দেয়নি। তবে প্রভাবশালী মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কারও এলাকায় তাদের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে যদি দল সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয় হয়, তাহলে অবশ্যই সভানেত্রীর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

'

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.