আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আম্মু এবং আমি

আম্মু হঠাৎ করে মারা যাবার পর আমি মেডিকেল কলেজের পড়াশুনা ছেড়ে বাসায় ফিরেছি। শোক বিহবল ভাবটা তখনো কাটেনি। একদিন হঠাৎ এক রোগীকে বাসায় নিয়ে হাজির হল কয়েকজন লোক। তারা জানতো না, আম্মু মারা গেছেন দুদিন আগেই। বলাবাহুল্য, আম্মু পেশায় একজন ডাক্তার ছিলেন।

বাসার দোতলাতে আববা একটা ক্লিনিক করেছিলেন। সেখানেই রোগী দেখতেন আম্মু। রোগীর তো দেখি ভয়াবহ অবস্থা। পুরো শরীর ঘেমে একাকার। শ্বাস কষ্টও হচ্ছে।

চোখেও নাকি ঝাপসা দেখছে। আম্মুর কথা শুনে তারা যখন তড়িঘড়ি চলে যেতে উদ্যত, তখন হঠাৎ আম্মুর কণ্ঠ ভেসে আসল। hypoglycemia! তাৎক্ষণিক আমার মনে পড়ে গেল আমাদের স্যারের একটা লেকচার। hypoglycemia হয় শরীরে গ্লুকোজের পরিমান কমে গেলে। আমি জানি এটার চিকিৎসা কী।

তড়িঘড়ি তাই রোগীটিকে ২৫ গ্রামের এক প্যাকেট গ্লুকোজ এক গ্লাস পানিতে গুলে খাইয়ে দিলাম। রোগী পাঁচ মিনিটের মধ্যে স্বাভাবিক। রোগীসহ যারা এসেছিল তারা সবাই অবাক। অবাক এবং প্রচন্ড খুশি। পারলে আমাকে মাথায় তুলে নাচে।

মেয়ে মানুষ বলে পারছে না। কয়েকদিনের মধ্যে ছোট্ট মফস্বল শহরটিতে ছড়িয়ে পড়ল, ডাক্তারনীর মাইয়া মায়েরেও ছাড়াইয়া গেছে। আসলে আম্মুকে ছাড়িয়ে যাইনি। আম্মুর মাতোই আছি। আম্মু যেভাবে চিকিৎসা করত, আমিও ঠিক সেভাবেই করি।

আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন না। ব্যাপারটা তাহলে ক্লিয়ার করি। আম্মুর কণ্ঠে কথাটি শুনার পর তাকিয়ে দেখি আম্মু আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। সেদিনকার সেই চিকিৎসার পুরো কাজটি করি আম্মুর কথা মতো। তারপর থেকে আমি বুঝতে পারি আম্মু সারাক্ষণ আমার সাথে আছেন।

আম্মু আমাকে বলেন, তুমি চিমত্মা করো না। আমি তোমার সাথে আছি। আমি চাই তুমি আমার চেম্বার আর ক্লিনিকের দায়িত্ব নিবে। ডাক্তার হিসেবে ব্যাপারটি আমার বিশ্বাস করার কথা না। নিশ্চয়ই আমার হেলুসিনেশন হচ্ছে।

মায়ের মৃত্যুতে তীব্র নাড়া খেয়েছে আমার মসিত্মষ্ক। তবু আমি ব্যাপারটা বিশ্বাস করলাম। কারন, এতে আমি রিলিফ পাচ্ছিলাম অনেকটা। আম্মু বেঁচে আছেন, আমার পাশে আছেন- এটা বিশ্বাস করতে আমার ভালই লাগছিল। আমার ভাই এবং বাবা যেখানে সারাদিন মনমরা হয়ে পড়ে থাকেন, এই হেলুসিনেশনের কারনেই আমি পারছিলাম নরমাল থেকে বাসার সব কাজকর্ম আর পড়াশুনা চালিয়ে যেতে।

শুধু তাই না। আম্মুর কথা মতো আমি চেম্বারে বসাও শুরু করে দিলাম। এবং আম্মুর পরামর্শমতো চিকিৎসা দিচ্ছিলাম সবাইকে। একদিন এক সমত্মান সম্ভবা এসে ভর্তি হল ক্লিনিকে। সিজার করতে হবে।

এর আগে আমি আমার টিচারদের এসিস্ট করেছি এ কাজে । তাছাড়া, আম্মুওতো আছে আমার সাথে- এ ভেবে রোগীকে ভর্তি নিয়ে নিলাম ক্লিনিকে। ব্যাপারটা আববা জানলেন ঘন্টা খানিকের মধ্যেই। এসে কষে ধমক দিলেন আমাকে। ভাইয়াও আসল।

বলল কি পাগলামী শুরু করেছি। তাদের অভয় দিয়ে বললাম, চিমত্মা করোনা, এ কাজে আমি বেশ কয়েকবার এসিস্ট করেছি টিচারদের। কিন্তু না । আমি তাদের বুঝাতে পারলাম না। তারা আমাকে বাসায় আটকে রেখে বাইরে থেকে ডাক্তার আনিয়ে সিজার করালেন রোগীটির।

এবং এরপর থেকে আমাকে আর বসতেও দিলেন না চেম্বারে। আমাকে জোর করে পাঠিয়ে দেয়া হল মেডিকেল কলেজে। মেডিকেলের পড়া পড়তে পড়তে একসময় আম্মুর মৃত্যু শোক কাটিয়ে উঠলাম। আম্মুও একদিন চলে গেল আমাকে ছেড়ে। যাবার আগে বলে গেল, সুমি, খুব একটা আর দেরী নেই, ডাক্তার হচ্ছিস তুই।

আমি চাই, আমার সাহায্য ছাড়াই তুই ডাক্তারী করবি। দোয়া করি, তুই খুব বড় এবং ভাল ডাক্তার হ। আরেকটা কথা, ডাক্তার হবার পর অনেক ধরনের লোভনীয় অফার পাবি। আমি চাই তুই সবসময় রোগীর স্বার্থকেই বড় করে দেখবি। খারাপ কোনকিছুর সাথে কখনো কম্প্রোমাইজ করবি না।

আমি চাইনা আমার মতো করে সবার সাথে স্রোতে গা ভাসিয়ে দিবি। ইন্টার্নীশিপ শেষে ছোটখাটো একটা ট্রেইনিং করে দেশের বাড়ীতে ফিরেছি। ততোদিনে কিন্তু আমাদের সেই ক্লিনিকটা আববু ছেড়ে দিয়েছেন। সেটা এখন একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আমি গাইনি প্র্যাকটিশনার হিসেবে একটা চেম্বার নিয়ে বসলাম।

রোগী দেখা ভালই চলছিল। আগে তো এমনিতেই একবার সুনাম ছড়িয়েছিল, তাই নতুন করে পসার পেতে খুব একটা বেগ পেতে হল না। আরেকটা কারনে রোগীরা আমাকে খুব পছন্দ করত। আমি রোগ ডায়াগনোসিসে অযথা কোন টেস্ট করতে বলতাম না। নির্দিষ্ট কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারকেও রেফার করতাম না।

রোগীরা যেখান খেকে ইচ্ছা টেস্ট করাতে পারত। একদিন আমার ডায়াগনস্টিক সেন্টার খেকে খবর দিয়ে পাঠাল। ওদের ম্যানেজিং কমিটির মিটিং। গেলাম। আমাকে জানানো হল, আমার জায়গায় নতুন একজন প্র্যাকটিশনার নেয়া হয়েছে।

তাকে জায়গা দিতে আমাকে চেম্বারটি ছেড়ে দিতে হবে। আমি অবাক হলে, তারা আমাকে খোলাসা করার জন্য কিছু তথ্য দিল। আমাকে চেম্বার দিয়ে নাকি তাদের কোন লাভ হচ্ছে না। রোগীরা অন্য সেন্টারে চলে যাচ্ছে। আমি কাউকে তাদের সেন্টারের কথা বলছি না।

এটাই আমার বিরূদ্ধে তাদের অভিযোগ। আমি অনেক চেষ্টা করলাম তাদের বুঝাতে। আমি তো অন্য কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারকেও রেফার করছি না। রোগী তার পছন্দমতো জায়গায় যাচ্ছে। ভাল সার্ভিস দিলে রোগীরা অবশ্যই আসবে।

না । তাদের এক কথা। এখানে যে ডাক্তার বসবেন, তিনি রোগীদের বাধ্য করবেন এখানেই টেস্টগুলো করিয়ে নিতে। দরকার না থাকলেও টেস্ট করতে দিতে হবে। আমি বুঝলাম, এইসব মানুষরূপী পশুদের সাথে যুক্তি তর্ক দেখানো মানে অরন্যে রোদন।

তাই কথা না বাড়িয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বের হয়ে এলাম। এবার নিজে থেকেই একটা চেম্বার ভাড়া করলাম। সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে প্র্যাকটিস শুরু করলাম আবার। পসার তো আগেই তৈরী হয়ে গেছে। রোগী পাওয়া ব্যাপার না।

প্রতিদিন নিয়ম করে রোগী দেখি। কিন্তু এবার শুরু হল আরেক উপদ্রব। পসার যেহেতু বেড়েছে, এবার আনাগোনা শুরু হল বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর,বেতনভোগী প্রতিনিধিদের। রোগীরা যেমন নিয়ম করে আসে, তেমনি তারাও আসে দলে দলে। এসে তাদের কোম্পানীর গুনগান গায়।

আমি শুনি । খুব মনোযোগ দিয়েই তাদের কথা শুনি। কিন্তু রোগীদের প্র্যাসকাইব করার সময় ভাল ব্র্যান্ডের ওষুধ দিই। ভাল কোম্পানীগুলোর ওষুধ মানের দিক থেকেও ভাল। এদেশে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে যারা চেষ্টা করে ওষুধের গুণগত মান ঠিক রাখার।

ভাল ব্র্যান্ডের একটা ১০০ মিলিগ্রামের ওষুধে যদি ৮০ মিলিগ্রাম কমপোনেন্ট থাকে, তবে অন্যান্য কোম্পানীগুলোর ওষুধে পাওয়া যাবে ৬০ মিলিগ্রামের মতো। আমি কেন জেনেশুনে শুধু শুধু এভারেজ কোম্পানীগুলির ওষুধ রোগীদের প্র্যাসক্রাইব করব? আমি সজ্ঞানে খারাপ কিছুর সাথে কম্প্রোমাইজ করতে পারি না। দুঃখের বিষয় যে, আমার এই কম্প্রোমাইজ না করার ফলটাও পেয়ে গেলাম সাথে সাথে। ধীরে ধীরে সেইসব প্রতিনিধিদের আনাগোনা কমতে থাকল। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকল রোগীদের সংখ্যাও।

অনুসন্ধানে জানতে পারলাম, তথাকথিত রিপ্রেজেন্টিটিভরা বাজারে আমার নামে কুৎসা রটানো শুরু করেছে। ডাক্তার হিসেবে আমার নাকি কোন হাতযশ নেই! কয়েকজন রোগী নাকি আমার ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে! ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আমি সত্মম্ভিত হয়ে পড়লাম। আমি কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমি আসলে জোর করে কখনো চাইনি এলাকার সব রোগী আমার কাছে আসুক। আমি যেটা চাই সেটা হল, রোগীরা যেন ভাল চিকিৎসা পায়।

রোগী যাবে সেই ডাক্তারের কাছে যিনি ভাল ডাক্তার। রোগীরা আমার কাছে আসে না-এর মানেতো আমি ভাল ডাক্তার না। বিষয়টা আমাকে কুড়ে কুড়ে খেতে থাকল। চেম্বারে গিয়ে বসে থাকতাম রোগীর অপেক্ষায়। বসে বসে হতাশ হলে বাসায় ফিরে যেতাম।

এভাবে চরম হতাশ হয়ে একসময় বেশ কয়েকদিন রোগী দেখা বন্ধ করে একা একা সময় কাটানো শুরু করলাম। তবে কি আমি ভাল ডাক্তার না। কুৎসা রটালেই কি লোকে তা বিশ্বাস করবে? আমার ট্রিটমেন্ট যারা পেয়ে যারা সুস্থ হয়েছে, তাদের কথা কি কেউ শুনে না? রোগীদের এই আচরণ আমাকে খুব কষ্টে ফেলে দিল। আমি জানি ডাক্তাররা টাকার জন্য কত কিছু্ না করে। আমি আমার মাকে দেখেছি ডেলিভারী ডেট আসলে রোগীকে কোন না কোনভাবে অপারেশন টেবিলে নিয়ে যেতে।

একবার সিজার করালেই তো বারবার ক্লিনিকের ইনকাম। আমি দেখেছি প্রতি মাসে কোন একটা কোম্পানী থেকে দশ হাজার টাকার ডিমান্ড ড্রাফট গিফট হিসেবে দেয়া হতো। বিনিময়ে আম্মু ঐ কোম্পানীর ওষুধ প্র্যাসকাইব করতেন বরাবর। একবার তো দেখি একটা কোম্পানী থেকে আমাদের বাসায় একটা আইপিএস পাঠানো হল। আমাদের পাড়ায় ওটাই ছেল প্রথম আইপিএস।

এতোসব করে তো আম্মুর কোন লাভ হয়নি। বরং টাকার সন্ধান পেয়ে ভাইটা আমার বখে গেছে অল্প বয়েসেই। আমি অমন ভুল করব না কখনো। ডাক্তারী ছেড়ে দিব, কিন্তু নিজের বিবেকের সাথে প্রতারণা করব না কখনোই। আমি তাই সিদ্ধামত্ম নিলাম চেম্বারে আর বসব না।

যে পেশায় অনেস্ট থাকা যায় না, এমন কাজ করব না। লাথি মারি এ পেশাকে। এদেশের মানুষকেও লাথি মারি! আম্মু, তুই এটা কি ডিসিশন নিলি? আমার আম্মু! আবার! আম্মু আম্মু, আমি এখন বুঝতে পেরেছি কেন তুমি নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছিলে। তুমি বলতে, বাধ্য হয়ে এমন করছ। আম্মু, আমি তখন বুঝতাম না আম্মু।

আমি তখন জানতাম না, তোমাকে কে বাধ্য করছে এরকম হীন কাজ করতে। বলেছিলামনারে পাগলী, একদিন বুঝতে পারবি। সাধে কি এমন পাষান হয়ে গিয়েছিলাম? বাধ্য হয়েছিলাম আমি। পরিবেশ পরিস্থিতি আমাকে বাধ্য করেছিল। আমি বুঝতে পেরেছি আম্মু।

তাইতো আমি সিদ্ধামত্ম নিলাম আমি আর ডাক্তারী করব না। না। আমি চাই তুই ডাক্তারী করবি। রোগী আসুক আর না আসুক, তুই তোর প্র্যাকটিস চালিয়ে যাবি। নিশ্চয়ই একদিন তুই পারবি সাবইকে দেখিয়ে দিতে যে সততা দিয়ে সবকিছু জয় করা যায়।

এদেশ কেবল নষ্টদের দেশ না। পারব আম্মু? তুমি বলছ, আমি পারব? অবশ্যই পারবি বাছা! তবে তোমাকেও আমার সাথে থাকতে হবে। অবশ্যই থাকব। আমি আছি সারাক্ষণ তোর পাশে। পরদিন থেকে আবার চেম্বারে বসলাম।

রোগী আসে না তবুও বসে থাকি। অপেক্ষা করি। যে এক দুইজন রোগী পথ ভুল করে চলে আসে, তাদের সবটুকু দিয়ে সেবা দিয়ে থাকি। যখন কিছু ভাল্লাগে না, তখন আম্মুর সাথে গল্প করি। আম্মু আমার সাথেই আছে।

যখনই তার কথা মনে পড়ে, তখনই তাকে দেখতে পাই আমার সামনে। এভাবে ধীরে ধীরে, খুব ধীরে আবার রোগীদের সংখ্যা বাড়তে থাকল। এভাবেই একদিন এক রোগীকে নিয়ে আসলেন তার বাবা। বললেন, ডাক্তার সাহেবা, আমার ছেলেটা পাগল হয়ে গেছে। আপনি তাকে বাঁচান।

একটাই মাত্র ছেলে আমার। কি হয়েছে আপনার ছেলের? সে মৃত মানুষের সাথে কথা বলে। মৃত মানুষের সাথে? অবাক হলাম আমি। আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমাদের শহরটা খুব ছোট। এতো ছোট শহরে কোন সাইকিয়াট্রিস্ট বসেন না।

মানসিক কোন সমস্যা হলেও প্রথমে নরমাল এমবিবিএসদের রোগী দেখাতে হয়। তারপর তাদের রেফারেন্স পেলে তবেই অন্য বড় শহরে নেয়া হয়। জ্বি ম্যাডাম। ও ওর মায়ের সাথে কথা বলে। ওর মা মারা গেছেন গত মাসে।

তারপর থেকেই এ সমস্যা। একদিন জানতে পারি সে তার মাকে দেখতে পায়। দেখলেই চিৎকার দিয়ে উঠে। প্রচন্ড ভয়ে ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে যায়। বড়ই সমস্যার মধ্যে আছি ম্যাডাম।

রোগীর বাবা একটানা কথাগুলি বলে একটু জিরিয়ে নিলেন। রোগীর বাবাকে বাইরে যেতে বলে ভাল করে এবার রোগীর দিকে তাকালাম। বয়স তার খুব বেশি না। পনের ষোল হবে। কি বাবু, মাকে দেখতে পাও? জ্বি।

কী করেন মা? কথা বলেন তোমার সাথে? না। দেখা মাত্রই আমি ভয় পেয়ে যাই। নি:শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় আমার। আমি দৌড়ে চিৎকার দিয়ে পালিয়ে যাই। তুমি কি তোমার মায়ের কথা সবাইকে বলেছ? জ্বি।

তারা কি বলে? তারা বলে, আমি নাকি পাগল হয়ে গেছি। কেউ বিশ্বাস করে না। ম্যাডাম, আমি কি সত্যিই পাগল হয়ে গেছি? তার এ প্রশ্ন আমাকে প্রচন্ডভাবে নাড়া দিল। আমিও তো আমার মৃত আম্মুর সাথে কথা বলি। তবে তো এক অর্থে আমিও পাগল।

আমি যদি আববুকে, ভাইয়াকে ব্যাপারটা বলি তবে তারাও তো আমাকে পাগল বলবে। যাই হোক, আমি জানি রোগীকে আমি সাময়িকভাবে কি ওষুধ দিতে পারি। আমি জানি, কার কাছে রেফার করতে হবে। কলম হাতে নিলাম প্র্যাসক্রিপশন লিখব। নাহ! কি হবে প্র্যাসক্রিপশন লিখে? কি দরকার? কলমটা আবার রেখে দিলাম।

বাবু, তোমাকে একটা কথা বলি। তুমি তোমার মাকে দেখতে পাও, এটা তো খুব ভাল কথা। তোমার কি মনে হয়, মা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারে? না। তবে আর কিসের ভয়। তোমার যা করনীয় তা হল, মাকে ভয় না পাওয়া।

মা আছে , মা থাকবে। মায়েরা তার বাচ্চাদের সাথে সবসময় থাকে। আমার মাকে যে তুমি দেখতে পাও, এটা কাউকে বলার দরকার নেই। মা যদি তোমার কোন ক্ষতি করতে চায় তবেই বলবে। এটা তো তুমি বিশ্বাস করই যে মায়েরা কারো ক্ষতি করেন না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।