আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বজিত, টোয়েন্টি টোয়েন্টি এবং একটি দুঃস্বপ্ন

কবে যাবো পাহাড়ে... কবে শাল মহুয়া কণকচাঁপার মালা দেব তাহারে.... না, লীগ সমর্থক নই আমি। জামাতবিরোধী হলেই কেউ লীগ সমর্থক হয়ে যায় না। এটা অবশ্য একটা সুবিধাবাদী অবস্থান। মনে মনে আওয়ামী লীগকে পছন্দ করলেও, মনের কথা মনেই রাখি। যখনই লীগ কোনো অকাজ করে বসে, তখন চুপচাপ থাকি।

কেউ সেটা নিয়ে ব্যঙ্গ করলে ঝাঁঝিয়ে উঠে উত্তর দিই- “আমি লীগ করিনা!” তারপর দোষপূরণের সার্থে দুই-একটা দায়সারা স্ট্যাটাস দিই আর অপেক্ষা করি সবাই বিষয়টা ভুলে যাওয়ার। এবারও তাই করবো। আরে, এটা তো খুন না। এটা রাজনৈতিক শোভাযাত্রার ক্যাসুয়ালটি। জামাত-বিএনপি মেরে কেটে সাফ করে ফেলার যে নৈতিক দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের ওপর, তা বাস্তবায়নে দু’একটা মিসফায়ার তো হতেই পারে।

এ নিয়ে এতটা হৈচৈ করার কী আছে? ধুর! বিশ্বজিত জামাতী হলেই সব চুকেবুকে যেতো। কেউ আর এটা নিয়ে উচ্চবাচ্য করতো না, যেমনটা করেনা শিবির ছাত্রলীগের কোনো নেতার রগ কেটে নিলে কিংবা ছাত্রলীগ শিবিরের কোনো নেতাকে দিনেদুপুরে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করলে। এসবই রাজনীতির অংশ। কীই বা হতো ওই বিশ্বজিতের একটু বিএনপি করলে? লাশের কোনো রং থাকেনা। লাশ জামাত কিংবা লীগ করেনা।

লাশ হিন্দু কিংবা মুসলমান হয় না। লাশ ক্রিকেট খেলা দেখে না। বিশ্বজিত গতকালের প্রসঙ্গ। আজকের প্রসঙ্গ টোয়েন্টি-টোয়েন্টি। কালকে হয়তো অন্য কোনো সুপারমডেলের সেক্স ভিডিও ইন্টারনেটে আসবে।

রাজনীতি না করা ২৪ বছরের একটা তাজা দরিদ্র লাশ চাপা পড়বে ইস্যুর ভীড়ে। বিশ্বজিতের আর নুর হোসেন হয়ে ওঠা হবে না। প্রত্যেক বছরের একটা নির্দিষ্ট দিনে ফেসবুকে ওর ছবি শেয়ার করবে না লোকজন। ও একজন মূল্যহীন মানুষ ছিলো, ওর মৃত্যু ছিলো অপ্রয়োজনীয়, তাই এই প্রসঙ্গ গুরুত্বহীন। এই প্রসঙ্গ ভুলে যাওয়ার।

এই প্রসঙ্গ দু’টা পোস্ট শেয়ার করে আর একবার ‘ছিঃ’ বলে সটকে পড়ার। কিন্তু হঠাৎ খটকা লাগলো কাল রাতে। ঘুমোতে গেলাম, হঠাৎ চোখের সামনে ভেসে আসলো আমার চব্বিশ বছরের ছোটো ভাইটার মুখ। চারদিকে সব লাল, ওর চোখ আতঙ্কিত, বিস্ফোরিত। ওর গায়েও ছিটে ছিটে রক্তের দাগ।

একটা হাত তুলে আমার দিকে বাড়িয়ে রেখেছে, বলছে- “আমাকে বাঁচাও! আমাকে বাঁচাও!!” চারদিকে রক্তের সমুদ্র, ধীরে ধীরে তার মধ্যে ডুবে যাচ্ছে সে। কেউ বাঁচালো না। ওর বাড়িয়ে রাখা হাতটাও এক সময় ওর শরীরের মত অদৃশ্য হয়ে গেলো। স্বপ্ন ভেঙে গেলো, জেগে উঠলাম ঘুম থেকে। টোয়েন্টি-টোয়েন্টি শুরু হলো বলে।

দুঃস্বপ্নের কথা ভুলে গিয়ে ইএসপিএন এর লাইভ স্ট্রিমিং চালু করে বসে পড়লাম খেলা দেখতে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.