আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয় পেল বাংলাদেশ

ইংরেজীতে 'ক্লিনিক্যাল ভিক্টরি' বলে একটা ব্যাপার উল্লেখ করা হয়। এই জয়টা আসলে কেমন; তাই যেন বিশ্বকে শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সব বিভাগে একদম গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরিজে পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। এবার আর শুধু গুঁড়িয়ে দেওয়া নয়; গতকাল রবিবার খুলনার আবু নাসের স্টেডিয়ামে প্রবল প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ ব্যবধানে ১৬০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল মুশফিকুর রহিমের দল। বাংলাদেশের ২৯২ রানের জবাবে মাত্র ১৩২ রানে অলআউট হয়ে গেল ক্রিস গেইল, মারলন স্যামুয়েলসদের দল! এনামুল হক বিজয়ের সেঞ্চুরিতে শোভিত দলের এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

সিরিজের বাকী তিন ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়। দিনের শুরুতেই উইকেটের আর্দ্রতাকে কাজে লাগিয়ে মাত্র ২১ রানের মধ্যে তামিম ইকবাল ও নাঈম ইসলামের উইকেট তুলে নেয় ক্যারিবীয় পেসাররা। এরপরই আসলে শুরু হয় বাংলাদেশের 'শো'। বাংলাদেশের চরম প্রতিরোধ ও প্রতিআক্রমণের এই পর্ব স্রেফ এনামুল ও মুশফিকুর রহিমের নিয়ন্ত্রণে রইল। মুশফিক-এনামুল জুটি ২৯.৫ ওভার টানা ব্যাট করে তৃতীয় উইকেটে যোগ করলেন ১৭৪ রান; যা বাংলাদেশের যে কোনো উইকেট জুটির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এই জুটিই আসলে বাংলাদেশের বড় রানের গতিপথ ঠিক করে দিয়েছে। তবে গতিতে একটা ধাক্কা ঠিকই লেগেছিল। ৩৬ থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নিতে হয় বাংলাদেশকে। আর এ সময়ই রানরেটটা কমে আসে এবং বাংলাদেশ হারায় মুশফিকুর রহিম ও নাসির হোসেনের উইকেট। ৮৭ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো ৭৯ রানের ইনিংস খেলে মুশফিক ফিরে যাওয়ায় বেশ ধাক্কা খায় বাংলাদেশের ইনিংস।

এরপর উইকেটে আসা মোমিনুল হকও শুরুতে একটু নার্ভাস ছিলেন; ওদিকে নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে যাওয়া এনামুলও খেললেন ধীরগতিতে। এনামুল নব্বইয়ের ঘরে ঢুকে ২৩টি ডট বল খেলে ফেললেন! এসব ঘাটতিই পুষিয়ে দিলেন এনামুল নিজে এবং মাশরাফি বিন মুর্তজা। এনামুল সেঞ্চুরির পর আর মাত্র ৭টি বল খেললেন; তাতে যোগ করলেন আরও ২০ রান। শেষ পর্যন্ত আরেকটি ছক্কা মারতে গিয়েই আউট হলেন। ১৩৫ বলে ১৩টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো ইতিহাস গড়া ১২০ রানের ইনিংস খেলে ফিরে আসলেন।

তারপরও বাংলাদেশের রান বিশাল দেখাচ্ছিল না। সেটাও করে দিলেন মাশরাফি। শেষ তিন ওভারে গুনে গুনে ৫২টি রান এলো। এর মধ্যে ৬ বলে ১৮ রান করলেন এক মাশরাফিই! এই রানের জবাব দিতে নেমে যতোটা সম্ভব খারাপভাবেই শুরু করল ক্যারিবীয়রা। প্রথম ৪ ওভারে ৫টি মাত্র রান তুলতে পারল গেইল-সিমন্সের উদ্বোধনী জুটি।

সিমন্সকে ফ্লাইটারের ফাদে ফেলে বিদায় করলেন এই সময়ের আরেক তরুণ হিরো সোহাগ গাজী। গেইল চেষ্টা করেছিলেন উল্টো দিকে মাশরাফিকে চার্জ করার। কিন্তু মাশরাফির অফের বাইরের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন তিনি। এরপর আর কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। বিশেষ করে রাজ্জাক আক্রমণে আসার পর ভেঙেই পড়ল তারা।

রাজ্জাক মাত্র ৫ ওভার বল করে ১৯ রানে তুলে নিলেন ৩ উইকেট। আর সোহাগ অন্য প্রান্তে ২১ রানে ৩ উইকেট তুলে নিলেন। ফলত ১৮.৫ ওভার খেলা বাকী থাকতে ১৩২ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একসময় বাংলাদেশই এমন পরিস্থিতির শিকার হত। দিনটা বদলাতে শুরু করেছে! এনামুলকে দুই লাখ টাকা দেবেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যবধানে দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় পাওয়ায় দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার।

তিনি গতকালরকে খেলায় সেঞ্চুরি করা এনামুল হক বিজয়কে ২ লাখ টাকা পুরস্কার হিসেবে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। জাতীয় পার্টি (জেপি)-এর অভিনন্দনঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিও জিতে নিয়ে সিরিজ জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ায় জাতীয় ক্রিকেট দলের সকল খেলোয়াড়, অধিনায়ক, কোচ ও কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম। বিবৃতিতে তারা বলেন, 'এই ম্যাচেও বিজয়ের ফলে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সিরিজ জয়ের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল। আমরা আশা করি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে। ' ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.