আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনাকাংখিত শনি (ডায়েরীর পাতা থেকে)

ভালো লাগে ভ্রমন করতে, ভালোবাসি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, অবসর সময় ফেইসবুকে চ্যাটিং করি, সময় পেলে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করি। দিনটি ছিল শনিবার। তখন দুপুর একটা বাজে। আমি পুকুরে গোসল করতে গেলাম। পুকুরে একটা মহিলাকে গোসল করতে দেখে আমাদের প্রজেক্টের (মাছ চাষের জন্য অগভীর পকুর) দিকে পা বাড়ালাম।

প্রজেক্টের মধ্যে আমাদের কয়েকখন্ড গাছ ভিজানো ছিল। আমি পানিতে নেমে গাছ থেকে বাকল গুলো আলাদা করতে শুরু করলাম । গাছ একটু নড়েচড়ে উঠলে মাছ গুলো লাফাতে শুরু করে। গাছের বাকল তোলার ফাঁকে ফাঁকে মাছ ধরতাম। কিছু রাজঁপুটি মাছ ও একটা গলদা চিংড়ি মাছ ধরলাম, পরে অবশ্য এগুলো ছেড়ে দিয়েছি।

কারন মাছ গুলো ছোট ছিল। দুইখন্ড গাছের বাকল তোলা শেষ। তৃ্তীয় খন্ড গাছের বাকল তোলার সময় আমার হাতের সাথে একটি মাছের ধাক্কা লাগে। মাছটি গাছের নিচে কাদার ভেতর লুকিয়ে যায়। আমার ধারনা মতে মাছটিকে শৈ্ল মাছ বলে মনে হল।

মাছটি প্রায় কেজিখানেক হবে। তাই লোভ সামলাতে না পেরে মাছটি ধরার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। যখন মাছটি ধরলাম, তখন বুঝতে পারলাম আসলে এটা শিং মাছ। হঠাৎ মাছটি ধাক্কা দিয়ে পালাতে চাইল। আর অমনি মাছটার একটা শিং আমার বাম হাতের তালুতে ঢুকে গেল।

প্রচন্ড ব্যাথায় মাছটি ছেড়ে দিলাম। তাড়াতাড়ি উপরে উঠে এলাম। হাত রক্তে লাল হয়ে গেল। ব্যাথাটা হাতের কব্জি থেকে উপরে উঠতে লাগলো। আমার মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা করছে।

একদৌড়ে ঘরে এলাম। আমাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে চাচি বললো, “ভাবি ভাবি মামুন এমন করতাছে কিল্লাই?” চাচির কথা শুনে আম্মু এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি হয়েছে তোর?” আমি বললাম, “আমাকে শিং মাছে বালা (শিং ঢুকিয়ে) দিয়েছে”। অবশ্য কথাটা খুব কষ্ট করে বলেছিলাম। কারন আমি তখন ব্যাথায় অস্থির। এর পরের অবস্থা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা, তবুও অল্প কথায় শেষ করছি।

আম্মু তাড়াতাড়ি কাপড় দিয়ে হাত বাঁধলেন, যাতে বিষাক্ত রক্ত চলাচল করতে না পারে। ক্ষতস্থান গরম পানি দারা ধৌত করলেন। কিছুক্ষন পর ওঝা এলো, তিনি আমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে বিষ নামালেন। আমি এতটকু শান্তির আশায় সব কষ্ট সহ্য করলাম। তিনি বললেন, “যাও এবার গোসল করে এসো”।

আমি প্রচন্ড যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে তাড়াতাড়ি বিছানায় শুয়ে পড়লাম। বিভিন্ন স্টাইলে শুয়ে কোন আরাম কিংবা শান্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু চিতল মাছের মতো বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে লাগলাম। ইচ্ছে করছিল হাতটা কেটে ফেলে দিতে। আম্মু এসে জিজ্ঞেস করলেন, “তোর থেকে এখন কেমন লাগছে?” আমি বললাম, “মাথায় তীব্র যন্ত্রনা করছে, হাতে ও প্রচন্ড ব্যাথা করতেছে, আমার মাথাটা একটু ধুয়ে দাও”।

উনি ঠান্ডা পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে দিলেন। দুপুরে ভাত খাওয়া হয়নি, ক্ষিদেয় পেট চিৎকার করছে। ঘরে পিঠা বানান ছিল, তা খেয়ে পেটের চিৎকার করলাম। আধাঘন্টা পর ব্যাথা অনেকটা কমে গেল। তখন প্রায় ৩টা বাজে, আমি রেড়িওটা অন করে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেলাম।

ঘুম থেকে উঠে খুব আরাম অনুভব করলাম। কারন, ব্যাথা অনেকটা কমে গেছে। তবে অবশ্য ক্ষতস্থানের চারপাশে ফুলে গেছে। একদিন পর ফুলাটা ও কমে এলো এবং আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.