আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনে আধুনিকতা যেন এক জটিলতায় ভরা যুদ্ধ : যে যুদ্ধ আপনার আমার জন্য অভিশাপ।

আজ কত দিন হল সমুসা খাই না , না না টাকার অভাবে নয় বরং ইচ্ছার অভাবে । অথচ একটা সময় ছিল অনেক ছোট বেলায় তখন শপিং মলে গেলেই খেতাম, না শপিং মলতো নয় বরং মার্কেট বলা উচিৎ কেননা ওই সময়টা তে বর্তমানের নিউ মার্কেট আর উচ্চবিত্তের ইস্টার্ন প্লাজা, এলিফেনট রোড ও বেইলি রোড ছাড়া আসলে কোন বড় কোনও জায়গাও ছিল না শপিং এর । কথাগুলি ভাবছিলাম একটি মাল্টিন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট এ বসে । তো বলছিলাম জীবনের আয়তনের কথা , আয়তনের বিস্তৃতি ঘটেছে তাতে আসলে কোন সন্দেহ নেই এবং যদি মৃত্যু না হয়,এটা ঘটেই চলবে । প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন জিনিসের আগমনে পুরনো জিনিসগুলী একসময় হারিয়ে যায় ।

আজ আমরা অনেক কিছুই করি যা আসলে প্রয়োজন নেই হয়ত না করলেও হয় । তাও করি হয়ত ইচ্ছে করে নয় বরং কিছুটা চাপে পড়ে অন্যের জন্য। দেখুননা একটা সময় ছিল যখন গোছল করার জন্য মার খেতাম প্রতি দিনই বলা চলে রুটিন ছিল তবে আরও মজাদার গল্প ছিল জামা নিয়ে । সহজে এক জামা খুলে আরেক জামা পড়তে চাইতাম না । আসলে রাস্তা আর মাঠ এ দুইয়ের মিলনে গড়া আমাকে নিয়ে বেশ লজ্জায় থাকতো আমার মা ।

যাই হোক যা বলছিলাম সময়ের পরিবর্তনে এখন আর সেই আমি আর এখনের আমি এক নেই । শুকনার ধুলা আর বর্ষার কাদা মিশানো আমার এখন দারুন সমস্যায় পড়তে হয় ধুলা বালিতে । আর গোছল কিন্তু এখন দারুন পরিমানে বেশী করা হয় এক দিনেই । জামাকাপড়ের বিষয়ে কিন্তু মারাত্মক সচেতনতা লক্ষ্য করা যায় বলা চলে এই বিষয়ে এক প্রকার দারুন সৌখিন আমি। আসলে বুঝাতে চাচ্ছিলাম যে অনেক পরিবর্তন , বিবর্তন এবং পরিবর্ধনের মাঝে এই আমি কিন্তু আনন্দে নেই বরং বলা চলে খুজে ফিরি সেই আমাকে,অনেক আনন্দে থাকা আমাকে ।

আসলে এটি শুধু যে আমার কাহিনী সেটা না, এরুপ অভিজ্ঞতা সবার মাঝেই বিদ্যমান । ছোট্ট এই জীবনের যেই বিশাল অভিজ্ঞতা অরজিত হয়েছে সেটা হল নিজের জন্য আমরা আসলে কিছুই করি না কোথাও না কোথাও “আমিহীন” একটা কারন আছে । আমাদের চারিপাশের যেই দারুন পরিবর্তন বিজ্ঞানের ফলে সেটা অবশ্যই আমাদের জীবন পালটে দিয়েছে । আমরা আজ অনেক বেশী নির্ভর এগুলির উপরে । তবে কথা হল জীবনের সহজ সরল দিকগুলি কিন্তু আজ হারিয়ে যেতে বসেছে এই জন্য ।

আজ চারিদিকের এত সমস্যা এত কষ্ট এত কান্না এর পিছনে কিন্তু তাকালে ওই প্রজুক্তির দানবও দায়ী । আজ মিথ্যা দারুনভাবে ব্যাপ্তি পেয়েছে । না আমি বলছি না যে প্রযুক্তিই দায়ী মিথ্যার জন্য কিংবা এর আগে কেও মিথ্যা বলত না , কিন্তু দিনকে দিন এই মিথ্যা যেই ভাবে বেড়ে চলেছে এর জন্য কি আমরা প্রযুক্তির অবদান অস্বীকার করতে পারি ? আপনি একটু চিন্তা করুন । আজ মানুষ তার সৃষ্টিকর্তার বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে । না আমার আপত্তি নেই ততোক্ষণ যতক্ষণ এটা হবে কৌতুহল বা জানার জন্য কিন্তু যদি এটা হয় নাস্তিকতার পথের শুরু তাহলে তো প্রযুক্তিকে এই ক্ষেত্রে দূরে রাখাই শ্রেয় ।

এখন আমাকে গোড়া মুসলমান ভাবাটা ঠিক হবে না কেননা আমি যুক্তি তর্কে বিশ্বাসী আবার আমার এলারজি আছে ধর্মীয় গোঁড়ামিতেও । যেটা বলছিলাম নাস্তিকতা আমার লিখার কোন অংশ নয় কিংবা এজন্য আলোচনা করতেও লিখিনি বরং লিখার যেই প্রধান উদ্দেশ্য সেটি হল জীবনটা যেন ক্রমশ সরল থেকে জটিল হচ্ছে । দেখুন কেমন জতিলতায় আছি যে আমরা এখন আর কোন বিষয় বিশ্বাস করতে পারছি না এমন কি আল্লাহ, গড, ভগবান এদের নিয়েও প্রশ্ন করছি। জি বিজ্ঞানের এই অভূতপূর্ব উন্নতির যুগে যেখানে এই লিখা আমি লিখছি আমার মোবাইলে সেখানে এটা ঘটতেই পারে । কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কি লাভ ? এই যে এত সাজগোজ আজ করছি বয়স বাড়ার সাথে সাথে কেন করছি ? আজ তো সমুসার স্বাদ ভুলেই গেছি , শেষ কোন দিন আম্মুর সাথে বাহিরে গেলাম সেটা তো মনেই নাই , আমার মতন করে আমি থাকব কাউরে গুনার টাইম নাই এমন চিন্তা করার বয়স্তা দারুন মিস করি ।

এখন কাজ করার আগেই চিন্তা এই যে এইখানে কাশি দিব মানুষ কি ভাববে ? তো এই যে জীবন হয়ে উঠেছে জটিল এটা তো সুন্দর না, এ তো সুন্দর হতে পারে না । আমরা তো আধুনিক হতে গিয়ে জীবনকে আরও কষ্টে ফেলে দিচ্ছি । আজ বোধয় আনেক ভালর ভিতরেও আমরা ভাল নেই , অনেক আশার ভিতরেও আমরা আশাহীন । যদি একবার চিন্তা করে তাকাই ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় , অর্থনৈতিক , সামাজিক দিক গুলিরদিকে দেখব আমাদের এই ব্যাক্তিগত জটিলতার কারনেই আমরা ভাল নেই । ছোট একটি উদাহরন দিব বাবার ছাত্র জীবন থেকে সেই সময় নাকি বলাকা আর ছয় নম্বর বাস ছিল ঢাকায় তখনও মানুষ কিন্তু চলাচল করত একটু দেরি হত মাঝে মাঝে তবে এখনকার চেয়ে কম সময়ে যেতে পারত গন্তব্বে কারন এত বেশী সংখ্যক ছোট গাড়ি ছিল না তখন, তাহলে দেখুন কেমন জতিলতা সৃষ্টি করেছি আমরা ।

শেষ করতে হবে শুধু এতোটুকুই বলবো যে জীবনের কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য নেই , জীবনের নেই কোন শেষ । আমাদের জীবনে আমরা শুধু এগিয়েই চলি কোন উদ্দেশ্য ছাড়া । আসলে যা কিছুই আমরা চাই সেগুলু ক্ষনিক এবং সময়ের সাথে সাথে তার প্রয়োজনও ফুরিয়ে যায় । “সো বি সিম্পল,স্টে হেপি”। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।