আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোদিকে রুখতে হবে

চারিদিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি কংগ্রেসের একের পর এক দুর্নীতি আর নয়া উদারবাদী, আমেরিকাপন্থী, আমীরপন্থী নীতিমালা দেশের জনগণকে তাদের প্রতি ক্রমশই ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। তাদের প্রতি সমর্থন ক্রমশ কমছে, আর কোনও প্রগতিশীল বিকল্প ভারতে পাওয়া যাচ্ছে না, যারা কংগ্রেস শাসনকে প্রতিস্থাপন করতে পারে। বামেরা গোটা তিন চার রাজ্যের বাইরে বেশ দুর্বল। পশ্চিমবঙ্গে সদ্য শেষ হওয়া কয়েক দশক ব্যাপী অপশাসন, শেষদিকের গণহত্যা, দেশী বিদেশী পুঁজির পক্ষে ওকালতি করে কৃষক হত্যা, শ্রমিকদের সঙ্গে ইউনিয়ন নেতাদের লাগাতার বিশ্বাসঘাতকতা - তাদের নৈতিক জোরটাও একেবারে ধ্বসিয়ে দিয়েছে। একারণেই যথেষ্ট সুযোগ থাকা স্বত্বেও দেশব্যাপী এস ই জেড বিরোধী লড়াইয়ে তারা অংশ নিতে পারে নি, যে লড়াইয়ে মূলত বিভিন্ন প্রদেশে বিচ্ছিন্নভাবে নকশালবাড়ির পর আবার একটা বলিষ্ঠ কৃষক আন্দোলন ও পটপরিবর্তনের ইঙ্গিৎ দিয়েছিল।

উল্টে তারাই পশ্চিমবঙ্গে এই আন্দোলনের বর্ষামুখ হয়ে দাঁড়ায়। তার শরিকরাও সরকার ছাড়ার মোহ ছাড়তে না পারায় সি পি এমের সাথে সাথেই জনবিচ্ছিন্ন হন। এস পি, বি এস পি, আর জে ডি, ডি এম কে, এ আই ডি এম কে-র মত আঞ্চলিক দলগুলিও চরম দুর্নীতিতে আক্রান্ত ও সে কারণেই গুরূত্বপূর্ণ সময়ে সি বি আই জুজুর ভয়ে তারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে নি। এমন একটা অবস্থায় সবচেয়ে বেশি গণভিত্তি সম্পন্ন প্রধান বিরোধি দল বিজেপি ক্ষমতার কাছে এক দশক পর আবার আসার স্বপ্ন দেখছে। এজন্য তারা সামনে রাখছে তথাকথিত 'হিন্দু হৃদয় সম্রাট' বলে পরিচিত মোদীকে।

মোদীও যথেষ্ট আক্রমণাত্মকভাবে কংগ্রেসের মোকাবিলা করে চলেছেন। বিজেপির মধ্যে আদবানী বা সুষমা স্বরাজের বিরোধিতা তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠর কাছে তেমন গণ্য হচ্ছে না, অবশ্য এন ডি এ শরিকদের কেউ কেউ বিশেষত নীতীশ কুমার ও তার দল জে ডি ইউ যেভাবে মোদীতে আপত্তি তুলছেন তাতে এই জোট রাজনীতির যুগে মোদী ও বিজেপি নেতৃত্বকে খানিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এখন বিজেপি স্বাগত, কিন্তু মোদী নয় - এই অবস্থানের হিন্দুত্ববাদ বিরোধী সারবত্তা কতটা সেটার সঙ্গে এটাও দেখার হিন্দি হিন্দু হিন্দুস্থান এর আওয়াজ রুখতে এটা কতটা সাহায্য করে। তবে যাই হোক এক জটিল অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে ২০১৪ র লোকসভা নির্বাচনের পর ভারতীয় রাজনীতির ক্ষমতার বিন্যাস কি হবে সেই অঙ্ক। ভারতের প্রগতিশীল মানুষ দুর্নীতির দায়ে কলঙ্কিত কংগ্রেসকে যেমন দেখতে চায় না, তেমনি হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির কোনও পুনরুত্থানও প্রত্যক্ষ করতে চায় না।

ভারতে হিন্দুত্ববাদের জাগরণের অর্থই দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্থান ও বাংলাদেশে মুসলিম মৌলবাদের পালটা উত্থানের জমি তৈরি হয়ে যাওয়া। কে না জানে এক মৌলবাদ আরেক মৌলবাদের দিকে জনগণের নজর ঘুরিয়ে নিজের শক্তি সঞ্চয় করে এক উত্তেজনাপূর্ণ আবহাওয়ায়। বাংলাদেশের মুসলিম মৌলবাদীরা গোপনে একারণে বিজেপিকে আর বিজেপি একারণে গোপনে বাংলাদেশে জামাত বা হেফাজতের মত শক্তির উত্থান বা পাকিস্থান আফগানিস্থানে তালিবানি শক্তির উত্থান কামনা করতেই পারে, যাতে তাদের নিজেদের উত্থানের পরিবেশ জোরদার হয়। গোটা উপমহাদেশের শান্তি সুস্থিতি ও ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশের বিকাশের স্বার্থে তালিবানি, হিন্দুত্ববাদী, জামাতি/হেফাজতি শক্তিকে রোখাটা বিশেষ জরুরী। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.